পরিজন-পড়শিদের সঙ্গে আলতাফ (বৃত্তের মধ্যে)। —নিজস্ব চিত্র।
‘স্পটলাইট’ এ বার পড়ল বড়ভুঁইয়া পাড়াতেও। আনন্দে মাতলেন এলাকাবাসী। স্বাধীনতার পর প্রথম বার ‘পাড়ার ছেলে’ আলতাফ হুসেন বড়ভূঁইয়া বসলেন হাইলাকান্দি পুরসভার সহ-সভাপতির চেয়ারে। ৩৮ বছরের যুবকের সাফল্যে খুশি তাঁর পরিজন, বন্ধু, পড়শিরা।
শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বড়ভুঁইয়া পাড়ায় আলতাফ হুসেনের বাড়ি। শহর বলা হয়তো ঠিক হবে না। ধনেশ্বরী নদীর পাশে মেঠো রাস্তা ধরে পৌঁছনো যায় সেই পাড়ায়। অনেকটা যেন গ্রাম। আম গাছ, বাঁশের জঙ্গলে ঘেরা। পাকা রাস্তা নেই। বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি বেশিরভাগ বাড়িতে। নেই পানীয় জল। সরকারি চাকুরিজীবীর খোঁজ মিলল না। বেশির ভাগই দিনমজুর, শ্রমজীবী। আলতাফের নিজেরও এত দিন কোনও স্থায়ী জীবিকা ছিল না। যখন যা কাজ পেতেন, তাই করতেন। এলাকার অনেকেই জানালেন— ছোটবেলা থেকেই পাড়ার সবার সঙ্গে আলাপ আলতাফের। কারও সমস্যায় ঝাঁপাতে একটুও ভাবতেন না ওই যুবক। পাড়ার বাসিন্দা মজিদুর বড়ভুঁইয়া বলেন, ‘‘আজ যেন আমাদের স্বপ্নপূরণ হল। আগে তো এখান থেকে পুরসভার সদস্যও কেউ হতে পারেননি।’’ আলতাফ পুরসভার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় এলাকার উন্নতি এ বার হবেই— সেই আশায় রয়েছেন বড়ভুঁইয়া পাড়ার সকলে।
বিকেলে আলতাফকে নিয়ে আনন্দ-মিছিল করলেন এলাকার মানুষ। দেদার ফাটলো আতসবাজি। রাজনীতিতে কী ভাবে এলেন? আলতাফের জবাব, ‘‘মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদেই এই পথে এগিয়েছি। পাড়া থেকেই কাজ শুরু করতে চাই। এখানে রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা এ বার হবেই।’’
শুক্রবার হাইলাকান্দির পুরপ্রধান পদে শপথ নিলেন শহরের রায় পরিবারের গৃহবধূ শ্যামলীদেবী। বোর্ডে কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ভোটাভুটির প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু তা-ও তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিজেপি প্রার্থী়। সহ-সভাপতি পদেও লড়ে ওই দল। তবে, সহজেই জিতে যান শ্যামলীদেবী, আলতাফ হুসেনরা।
১৬টি ওয়ার্ডের হাইলাকান্দি পুরসভায় কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৯। বিজেপি-র ৩ এবং ৪ জন নির্দল। বোর্ড গঠনের পর পুরপ্রধান শ্যামলী রায় এবং উপ-সভাপতি আলতাফ হুসেনকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান কংগ্রেস বিধায়ক গৌতম রায়। তিনি বলেন, ‘‘শ্যামলীদেবীর নেতৃত্বে শহরের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’’ অভিভাবক হিসেবে তাঁর পাশে থেকে সাহায্য করবেন বলেও জানান গৌতমবাবু। রাজনীতি ভুলে শহরের উন্নয়নে পুরবোর্ডের পাশে থাকতে তিনি বিজেপি সদস্যদের অনুরোধ জানান।
পুরনেত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর শ্যামলীদেবী বলেন, ‘‘সবাইকে নিয়েই চলব। মহিলাদের উন্নয়ন আমার প্রাথমিক লক্ষ্য হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy