মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ‘গার্ড অব অনার’ নিচ্ছেন নাবাম টুকি। বৃহস্পতিবার অরুণাচলের ইটানগরে।— নিজস্ব চিত্র
বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যা, আজব সব কাণ্ড চলছে অরুণাচলে। এক রাজ্যে যেন দুই মুখ্যমন্ত্রী— পিপিএ-র কালিখো পুল আর কংগ্রেসের নাবাম টুকি!
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিবৃতি দিচ্ছেন দু’জনই। এক জন ইটানগরে পৌঁছেছেন। অন্য জন, ঘোড়া কেনাবেচা থেকে বাঁচতে নিজের পক্ষের বিধায়কদের নিয়ে গুয়াহাটিতেই বসে। অরুণাচল প্রদেশের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল তথাগত রায় শনিবারের মধ্যে আস্থাভোটে টুকিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে ১৬ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে টুকির দিকে। ফলে কাল সুপ্রিম কোর্ট কংগ্রেসের পুরনো সরকারকে বহাল করলেও আস্থাভোটে টুকির জয়ের সম্ভাবনা কম।
তবে বিধায়কের অঙ্ক যা-ই হোক, দিল্লি থেকে ফিরেই টুকি আজ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ঢুকে ফাইল সই করতে শুরু করেন। এক জনের কিডনির চিকিৎসায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকাও মঞ্জুর করেন তিনি। তার আগে টুকি যখন দিল্লি থেকে ইটানগর যাওয়ার জন্য গুয়াহাটি বিমানবন্দরে নেমেছেন, প্রতিপক্ষ কালিখো পুলও তখন সেই শহরেই বসে। নিজের পক্ষে থাকা ৪০ জন বিধায়ককে নিয়ে গুয়াহাটির বিলাসবহুল হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন পুল।
বুধবারই দিল্লির অরুণাচল ভবনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন টুকি। তার প্রতিবাদ করে পুল এ দিন দাবি করেন, টুকি ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন না, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, টুকি ইটানগর ফিরে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসাবেন বলে ঘোষণা করেন। পুলের দাবি, ওই মন্ত্রিসভার সব সদস্য তো এখন তাঁর সঙ্গে গুয়াহাটিতেই বসে রয়েছেন! পুলের মন্তব্য, ‘‘বিধায়কদের সংখ্যাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণিত হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ক্ষমতা যাওয়ার আগে টুকির সঙ্গে ২৬ জন বিধায়ক ছিলেন, এখন রয়েছেন ১৫ জন। তাই ক্ষমতা আমাদের হাতেই থাকবে। পদত্যাগ করার কথা ভাবছি না।’’
অরুণাচলে কুর্সি নিয়ে এই চাপানউতোরের মধ্যে তৎপরতা দিল্লিতেও। তবে কোর্টের রায়ের তৈরি হওয়া কংগ্রেস শিবিরের উৎসাহ আজ অনেকটাই নিভেছে কালিখো পুলের সাংবাদিক বৈঠকের পরে। কেননা, সনিয়া শিবির বুঝেছে, অরুণাচলে সরকার টিঁকিয়ে রাখা মুশকিল। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের যুক্তি, রাজ্য সরকারকে যে ভাবে উৎখাত করা হয়েছে, তা অগণতান্ত্রিক। এ দিন সনিয়া গাঁধীও মহারাষ্ট্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। মন্তব্য করেছেন, ক্ষমতার লোভেই নরেন্দ্র মোদী বিরোধী দলের নির্বাচিত রাজ্য সরকারগুলিকে ফেলতে চাইছে।
তবে পুল কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, ‘‘এমন সরকার কোথাও দেখিনি, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় তালা লাগিয়ে দেন। রাজ্যপাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করে রাখেন।’’ এ দিন রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র বামাং ফেলিক্স বলেন, ‘‘আমাদের আরও ১৫ জন বিধায়কের সমর্থন লাগবে। তা জোগাড় করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ টুকি বলেন, ‘‘আস্থা ভোটের জন্য রাজ্যপালের কাছে আরও সময় চাইব আমরা।’’
তবে কংগ্রেস শিবিরের খবর, সংখ্যা না পেলে হয়ত আস্থা ভোটের আগেই ইস্তফা দিতে পারেন টুকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy