ছবি: সংগৃহীত।
গত কয়েকদিনে অসমে বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে আজ গুয়াহাটি পুলিশ পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই)-এর রাজ্য সভাপতি আমিনুল হককে গ্রেফতার করল। তাঁর হাতিগাঁওয়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর ল্যাপটপটিও। একই সঙ্গে পুলিশ হানা দেয় পিএফআই দফতরেও। ধরা হয়েছে, মোজাম্মেল হককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তভার এনআইএকে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এরই পাশাপাশি, হাঙ্গামায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ধৃত অখিল গগৈকে গতরাতেই দিল্লি নিয়ে গিয়েছে এনআইএ।
সরকারি মুখপাত্র, অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা গতকালই জানিয়েছিলেন, দিসপুরে ভাঙচুর, আগুন লাগানোয় জড়িত ইসলামিক ছাত্র সংগঠন পিএফআইয়ের সদস্যরা। পুলিশের কাছে তার পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তিনি কাঠগড়ায় তোলেন কংগ্রেস ও যুব কংগ্রেসের কিছু নেতাকেও।
এ দিন যুব কংগ্রেসের একাধিক সংখ্যালঘু নেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। যুব কংগ্রেস সভাপতি কামরুল ইসলাম আজ বলেন, ‘‘সেদিন ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রীর আইনি উপদেষ্টা শান্তনু ভরালিও ছিলেন। একজন অসমিয়া হিসেবে জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও হিংসা বা অগ্নিসংযোগে জড়িত নই।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা জানান, দলের নেতা-সদস্যদের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ আনছে বিজেপি, যথেচ্ছ ধরপাকড় চালাচ্ছে। তাঁরা এ নিয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেন। মুখ্যসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। আগামী কাল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: উল্টো কথা! অনুপ্রবেশ বিতর্কের মধ্যে ভাইরাল মোদী মমতার দুই পুরনো ভিডিয়ো
এরই মধ্যে আজ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ঘোষণা করেন, রাজ্যের দু’হাজার শিল্পীকে ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়া হবে। ৬ মাসের মধ্যে পূরণ করা হবে ৫৫ হাজার সরকারি শূন্যপদও। রাজ্য সরকারের তরফে গুলি চালনায় নিহতদের আজ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াও শুরু হয়েছে।
সোনোয়ালের এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আসু ও শিল্পী সমাজ জানিয়েছে, শিল্পী ও যুব প্রজন্মকে প্রলোভন দেখিয়ে আন্দোলন থেকে বিরত করা যাবে না। আজ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের যৌথ মঞ্চ গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ জানায়। জেলায় জেলায় পালিত হয়েছে আসুর সত্যাগ্রহ। গুয়াহাটির লতাশিলে প্রতিবাদ সভা ও গ্রেফতারি বরণের পাশাপাশি বিশাল প্রতিবাদ সভা হয় যোরহাটে। নয়া সংশোধনী বাতিলের দাবিতে আজ বড়োভূমিতেও ‘জনতার চিৎকার’ কর্মসূচি পালন করে অবড়ো সুরক্ষা সমিতি ও গণ সুরক্ষা পার্টি। এদিন পুণেতে বসবাসকারী অসমিয়ারাও নয়া সংশোধনীর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভা করেন।
গত কাল আসুর তরফে বলা হয়, আন্দোলনে বাঙালি, হিন্দিভাষীদের অংশগ্রহণ সে ভাবে হচ্ছে না। তাঁদেরও অসমের স্বার্থবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দেওয়া উচিত ছিল। এর পরেই আজ আসুর সত্যাগ্রহে যোগ দেয় মাড়োয়ারি সমাজ, সারা অসম হিন্দুস্তানি সম্মেলন, ও ভোজপুরী সমাজের সদস্যরা। তাঁরা জানান, অসমে ওই সংশোধনী নিষ্প্রয়োজন।
তবে সরকারের তরফে আজ পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি বলেন, সরকার লুকিয়ে কিছু করেনি। পাশাপাশি, হাঙ্গামায় জড়িতদের তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। উচ্চপর্যায়ের কমিটি গড়া হয়েছে। কাউকে ছাড়া হবে না। গুয়াহাটি থেকে কার্ফু প্রত্যাহার হলেও আপাতত নৈশ কার্ফু বলবৎ থাকছে তিনসুকিয়া ও ডিব্রুগড়ে। গত রাতে তিনসুকিয়ার পেঙেরিতে পুলিশের সঙ্গে আলফা (স্বাধীন) জঙ্গিদের গুলির লড়াই হয়। পুলিশের সন্দেহ, অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে জঙ্গিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy