এনআরসি-র তালিকা হাতে মহিলা। —ফাইল চিত্র
প্রকাশিত হল এনআরসির সম্পূর্ণ তালিকা। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত ও তালিকাছুট ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৬১ জনের সম্পূর্ণ তালিকা আজ থেকে অনলাইনে দেখা যাচ্ছে। ৩১ অগস্ট বলা হয়, যাঁদের নাম চূড়ান্ত খসড়ায় এসেছে এবং তার পরে কোনও শুনানিতে ডাকা হয়নি বা নাম বাদ পড়ার তালিকায় ওঠেনি, তাঁদের কোনও চিন্তা নেই।
কিন্তু প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে ভুলের ছড়াছড়ি। যাঁরা এর আগেই সংশোধনের আর্জি জানান, তাঁদেরও অনেকের নাম, বাবার নামে যেমনকার ভুল তেমনই রয়েছে। কারও আবার খসড়ায় সব কিছু ঠিক থাকলেও চূড়ান্ত তালিকায় দেখা যাচ্ছে বানান বিভ্রাট, কারও বাবার নামই ভিন্ন! এমনকি কিছু ক্ষেত্রে লেখা ‘পেন্ডিং’।
তালিকা শুধুই অসমিয়া ভাষায়। বাংলা-অসমিয়ার উচ্চারণগত ফারাক প্রভাব ফেলেছে তালিকায়। সুজিত হয়েছে ‘চুজিত’, সুপর্ণা ‘চুপর্ণা’। বহু নামের যুক্তাক্ষর ভেঙে এমন চেহারা নিয়েছে যে উচ্চারণ করাই কঠিন। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ঠিকানা বদলের ঘটনাও ঘটেছে। শিলচর টিটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে বলেন, ‘‘প্রথম তালিকায় সব ঠিক ছিল। চূড়ান্ত তালিকায় আমার ও স্ত্রীর, দু’জনেরই বাবার নামের জায়গায় অন্যের বাবার নাম জুড়ে গিয়েছে।’’ এসইউসিআই নেতা হিল্লোল ভট্টাচার্য দিদিমার নাম ঠিক করার আর্জি জানিয়েছিলেন। ভুল নামই থেকে গিয়েছে।
রাজ্য বিজেপি এই এনআরসি-কে চূড়ান্ত বলে মানতে নারাজ। তারা এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে গোটা তালিকা ফের যাচাইয়ের দাবি জানিয়েছে। শিলচরের বিজেপি সাংসদ রাজদীপ রায়ের কথায়, ‘‘একমাত্র সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারির পরেই একে চূড়ান্ত বা বৈধ নথি বলা যেতে পারে। তবে তার আগে তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে এই তালিকা যাচাই করা হোক।’’ এ দিকে, আজ
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা অসমের বিজেপি সাংসদ রামেশ্বর তেলি বলেন, ‘‘তালিকায় বহু হিন্দুর নাম বাদ গিয়েছে। তাঁদের বিষয়টি নিয়ে আদালতে দল যাবে কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাংলা-সহ সারা দেশের স্বার্থেই এনআরসি হওয়া দরকার।’’ তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে তথ্য যাচাইয়ের দাবি এপিডব্লিউয়েরও। আমসুও একই দাবি জানাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে।
এ দিকে, লক্ষাধিক গোর্খা এনআরসিছুট হওয়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিনয় তামাংয়ের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি দল অসমে এসেছে। বিনয় জানান, তিনি বলেন, ‘‘এটি খুবই জটিল ও সংবেদনশীল বিষয়। আমরা অসমের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে জড়াতে চাই না। বিপন্ন গোর্খাদের সাহায্য করতে চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy