অরুণ জেটলি এবং গুলাম নবি আজাদ।
অধৈর্য শিল্পমহলকে বার্তা দিতে সংসদ শুরুর তিন দিন আগে পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) জট কাটাতে আজ কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক করল সরকার।
সংসদ ভবনে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের ঘরে গেলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও সদ্যনিযুক্ত সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার। সেই বৈঠকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার উপ-দলনেতা আনন্দ শর্মাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর জেটলি বলেন, ‘‘জিএসটি নিয়ে ঐকমত্য রচনা করতেই এই বৈঠক। সংসদ শুরু হলে ফের বৈঠক হবে।’’ অন্য দিকে বৈঠকের পর হাসিমুখে জেটলির সঙ্গে বেরিয়ে আসা গুলাম নবিও বলেন, ‘‘সবিস্তারে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
সূত্রের মতে, সোমবার সংসদ শুরুর এক দিন পর ফের দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠক হবে। এর মধ্যে কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন সনিয়া গাঁধী ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে। আর জেটলিও গোটা বিষয়টি জানাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। লোকসভায় পাশ হয়ে যাওয়া বিলটি আপাতত কংগ্রেসের বিরোধিতাতেই আটকে রয়েছে রাজ্যসভায়। তাই ঐকমত্য রচনা হলে কুড়ি দিনের বর্ষাকালীন অধিবেশনের মাঝামাঝি বা শেষ দিকেই এই বিল আনা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: আশি ছুঁই-ছুঁই শীলার মাথায় কাঁটার মুকুট
বিজেপির এক নেতার মতে, রাজ্যসভার সদ্য হওয়া নির্বাচনে বিজেপির শক্তি বেড়েছে বটে। তার উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী শিবিরের সিংহভাগ দলও যে ভাবে এই বিলকে সমর্থন করছে, তাতে কংগ্রেস একঘরে। বিজেপির বন্ধু দল জয়ললিতার কিছু আপত্তি রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে সেটিকেও মোকাবিলা সম্ভব। আজই পীযূষ গয়াল চেন্নাইতে গিয়ে জয়ললিতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু সংবিধান সংশোধনী বিল হট্টগোলের মধ্যে পাশ করা যায় না। ভোটাভুটি করতেই হবে। তাই কংগ্রেসের সমর্থনও দরকার।
বিজেপির মতে, গোটা বিষয়টিই রাজনৈতিক। তাই কংগ্রেস চাইলে এক মিনিটে এর সমর্থন করতে পারে। কারণ, বিলটি তাদের জমানায় আনা। আবার কংগ্রেস নেতারা ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, আসলে বিজেপিই চায় না, বিলটি পাশ হোক। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় খোদ নরেন্দ্র মোদীই এই বিলের বিরোধিতা করেছিলেন। সরকার চাইলে কংগ্রেসের দাবিগুলি মেনে নিলে বিল এক দিনেই পাশ সম্ভব। এই টানাপড়েনের মাঝে আজ অরুণ জেটলি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার ঘরে পৌঁছে গিয়ে বার্তা দিলেন, সরকার এই বিল পাশে কতটা আন্তরিক। আর কংগ্রেস নেতারাও সৌহার্দ্য দেখিয়ে বোঝালেন, এই বিলের আদৌ বিরোধী নন তাঁরা।
জুন মাসের মাঝামাঝি কলকাতায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গড়া ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’র বৈঠকেই জিএসটি-র হার ১৮ শতাংশে সংশোধনী বিল বেঁধে দেওয়ার ব্যাপারে কংগ্রেসের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর আনন্দ শর্মা এক সাক্ষাৎকারে সুর কিছুটা নরম করে বলেছিলেন, নির্দিষ্ট ভাবে করের হার বেঁধে দেওয়া না হলেও অন্য কোনও ভাবে করের হারকে গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখা যেতে পারে। যা থেকে সরকারপক্ষ এখন বিল পাশের ব্যাপারে আরও উৎসাহিত বোধ করছে। পণ্য উৎপাদনকারী রাজ্যের উপর অতিরিক্ত এক শতাংশ কর বসানো নিয়ে বিরোধীদের যে আপত্তি ছিল, তা নিয়ে অবশ্য নমনীয় হতে রাজি জেটলি। সরকারের মতে, জিএসটি নিয়ে বিবাদ মেটানোর জন্য পৃথক ব্যবস্থার বিষয়টিও বিরোধের কারণ হতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy