Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

উন্নাও ধর্ষণ মামলায় ধৃত সেই বিধায়ক

এ দিন সরকারি আইনজীবী ‘কুলদীপকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে’ ঘোষণা করতেই ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি বি ভোঁসলে এবং বিচারপতি সুনীত কুমারের বেঞ্চ বিধায়ককে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়।

নজর: লখনউয়ে সিবিআই অফিসের বাইরে সাংবাদিকদের ভিড়। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

নজর: লখনউয়ে সিবিআই অফিসের বাইরে সাংবাদিকদের ভিড়। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
ইলাহাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

উন্নাও-ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তভার হাতে পেয়েই আজ ভোরে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। লখনউয়ে সিবিআইয়ের দফতরে দিনভর জেরার পরে অন্যতম অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারকে গ্রেফতারই করা হল।

এর কয়েক ঘণ্টা আগেই অবশ্য সিবিআইয়ের পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ ইলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আটক নয়, কুলদীপকে গ্রেফতারই করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, আগামী ২ মে-র মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে তাদের। চার বারের বিধায়ক কুলদীপের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছে সিবিআই।

এ দিন সরকারি আইনজীবী ‘কুলদীপকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে’ ঘোষণা করতেই ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি বি ভোঁসলে এবং বিচারপতি সুনীত কুমারের বেঞ্চ বিধায়ককে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের জামিন নামঞ্জুরের আবেদনও দাখিল করা হোক। আদালতের পর্যবেক্ষণে গোটা তদন্তপর্ব চলবে এবং মামলাটিকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে বিচার করা হবে, তা-ও জানিয়েছে হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ সরকার সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা বাদে কুলদীপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল রাজ্য পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩৬৬, ৩৬৩, (অপহরণ), ৫০৬ (অপরাধমূলক কাজকর্ম) ধারায় ও পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়। সিবিআই দায়িত্ব হাতে পেয়েই নতুন করে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। তার পরেই শুক্রবার ভোর পাঁচটায় লখনউয়ে সিবিআইয়ের দফতরে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় কুলদীপকে। জেলের অফিসার, উন্নাও জেলা হাসপাতালের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। জেরা করা হয়েছে কুলদীপের পরিবারকেও।

আরও পড়ুন: ‘ওদের মৃত্যুই আমাদের শান্তি দেবে, ওটাই হবে একমাত্র সান্ত্বনা’

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এক সময়ে দুই পরিবারের মধ্যে বেশ সদ্ভাব ছিল। মাখি গ্রামে বিধায়কের বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে নির্যাতিতার বাড়ি। একে অন্যের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল। নির্যাতিতা ও তার ভাইবোনেরা কুলদীপকে ‘ভাইয়া’ বলে ডাকত। কিন্তু গত জুন মাসে সবটা বদলে যায়। একটি চাকরির প্রস্তাব পেয়ে এক আত্মীয়কে নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে গিয়েছিল নাবালিকা। একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে বলেছে, ‘‘গত বছর ৪ জুন। আমাকে একটা ঘরে বসতে বলা হয়েছিল। সেখানেই আমাকে ধর্ষণ করা হয়। বলা হয়েছিল, মুখ খুললেই বাবা ও আমার পরিবারের অন্যদের খুন করা হবে। আমিও ভয়ে চুপ করে যাই। কিন্তু কিছু দিন পরে, ১১ জুন ওরই অন্য কিছু লোক আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। টানা কয়েক দিন ধরে গণধর্ষণ করে আমাকে একটা লোকের কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই লোকটির কাছ থেকেই আমাকে উদ্ধার করা হয়েছিল।’’ এ দিন সিবিআই কুলদীপকে আটক করার পরে নির্যাতিতা বলে, ‘‘আমি চাই ওর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক ওকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE