ছবি: পিটিআই।
দিল্লির শ্রম শক্তি ভবনের ‘ন্যাশনাল পাওয়ার মনিটরিং সেন্টার’-এ বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ ঠায় বসেছিলেন। চোখ সামনের ডিজিটাল প্যানেলের দিকে। সঙ্গে বিদ্যুৎসচিব ও অন্যান্য কর্তারা।
রাত ৯টা বাজব বাজব করছে। গোটা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা হুড়মুড়িয়ে নামতে শুরু করল। ছিল ১১৭ গিগাওয়াট। চার-পাঁচ মিনিটের মধ্যে তা ৮৫.৩ গিগাওয়াটে নেমে এল! উল্টো দিকে তখন মন্ত্রী-সান্ত্রীদের রক্তচাপ বাড়তে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ গ্রিড ভেঙে পড়বে না তো?
রাত ৯টা ৯ মিনিট। বাড়িতে বাড়িতে আলো জ্বলতে শুরু করল। গোটা দেশে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে পৌঁছে গেল ১১০ গিগাওয়াটে। শেষ পর্যন্ত দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার গ্রিডে বিপর্যয় ঘটেনি। বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিংহ অগ্নিপরীক্ষায় উতরে গিয়ে সমস্ত কৃতিত্বই দিয়েছেন বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও বণ্টন সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের।
আরও পড়ুন: মোদীর দীপ-দাওয়াই: বিরোধীদের কটাক্ষই সার
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা জানান, এ দিন রাত ৯টার আগে রাজ্যের গ্রিডে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৫০৫০ মেগাওয়াটের মতো। ৯টা বেজে ৯ মিনিটে ৩৩২৫ মেগাওয়াটে নেমে যায়। পৌনে ১০টা নাগাদ আবার বেড়ে হয়ে যায় ৪৮০০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ
সরবরাহে কোথাও সমস্যা হয়নি। সিইএসসি এলাকায় রবিবার সাধারণত বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ১১০০-১২০০ মেগাওয়াটের মতো। রবিবার রাত ৯টার সময় চাহিদা ১১০০ মেগাওয়াটের মতোই ছিল। রাত্রি ৯টার পর চাহিদা ৩০০ মেগাওয়াট কমে যায়।
গ্রিডে কোনও বিপর্যয় হলে জাতীয় গ্রিড থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার ব্যবস্থা সিইএসসি আগে থেকেই করে রেখেছিল। এই ভাবেই ২০১২ সালে পূর্বাঞ্চলের গ্রিড বিপর্যয়ের সময় সিইএসসি নিজেদের উৎপাদন কেন্দ্রগুলিকে বাঁচিয়ে জরুরি পরিষেবা চালিয়ে যেতে পেরেছিল। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আমি আগেই বলেছিলাম, রবিবার আমাদের রাজ্যে কোনও বিরূপ প্রভাব পড়বে না। রাজ্যের গ্রিডকে ঠিক রাখার সব ব্যবস্থা থাকবে। সমস্যা হয়নি।’’
কী ভাবে তা সম্ভব হল? বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো-কমানোর অঙ্ক কষে রাখা হয়েছিল। ওই সময় রাজ্যের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির পাশাপাশি অন্য উৎস থেকে ৪৭৩০ মেগাওয়াট এবং পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট ধরে মোট ৫৬৩০ মেগাওয়াট রাজ্যের গ্রিডে বিদ্যুতের সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে বলে হিসেব করাই ছিল। চাহিদা কমে যাওয়ার সময় পুরুলিয়ার উৎপাদন কমিয়ে ফের চাহিদা বাড়ার পর পুরোদমে উৎপাদন চালু করার ব্যবস্থা ছিল। বিপর্যয় কিছু হলে যাতে রাজ্যের গ্রিডকে সামাল দেওয়া যায় তার জন্য ‘হাতের পাঁচ’ হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ব্যান্ডেলের একটি ইউনিটকে। তবে শেষ অবধি পুরুলিয়াই উতরে দিয়েছে এ দিন, জানালেন রাজ্যের এক বিদ্যুৎ বণ্টন কর্তা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy