বিহারের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী রামাইয়া রামের বাড়ির গোয়ালে কাজ করতেন হতদরিদ্র দিনমজুর। অনেক দিনের বেতন বকেয়া ছিল তাঁর। বারবার চেয়েও পাননি। মন্ত্রীর পরিজনদের কাছে ক্ষোভ জানিয়ে বাড়ি ফিরে যান ফিরোজ মহম্মদ। অভিযোগ, গত কাল সেখান থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে আসেন মন্ত্রীর নাতি। বেধড়ক মারধরে ওই মজুরের ডান হাত ভেঙে যায়। নষ্ট হয়ে যায় বাঁ চোখও।
ফিরোজের আত্মীয়-বন্ধুদের দাবি, প্রথমে তাঁদের নালিশ শুনতে চাননি থানার কোনও অফিসার। তুমুল বিক্ষোভের পর শেষে এফআইআর দায়ের করা হয়। এ কথা মানতে চাননি সংশ্লিষ্ট থানার কর্তারা। মন্ত্রী রামাইয়াও বলেছেন, ‘‘সব মিথ্যা। আমাকে, আমার নাতিকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক দিন ধরে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী রামাইয়া রামের বাড়ির গোয়ালে কাজ করতেন ফিরোজ। বকেয়া মজুরি চান তিনি। কিন্তু টাকা দিতে মন্ত্রীর পরিবারের লোকেরা গড়িমসি করায় কাজ না করে গত কাল বাড়ি চলে যান ফিরোজ। অভিযোগ, গত সন্ধেয় তাঁর বাড়়িতে হানা দেন রামাইয়ার নাতি মণ্টু রাম। ফিরোজকে তুলে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে বেধড়়ক মারধর করা হয়। ফিরোজের ডান হাত ভেঙে যায়। জোরাল ঘুঁষিতে বাঁ চোখ দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। জ্ঞান হারান ফিরোজ। চিকিৎসা না করিয়ে তাঁকে আটকে রাখেন মণ্টু। জ্ঞান ফিরলে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে পালিয়ে এলাকায় পৌঁছন ফিরোজ।
আজ সকালে তাঁর পরিবারের লোকরা সব কথা এলাকার বাসিন্দাদের জানান। এরপরেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ফিরোজকে সঙ্গে নিয়ে সচিবালয় থানায় যান। অভিযোগ, ওই সময়ে মন্ত্রীর নাম করে থানায় ফোন করেন মণ্টু। কোনও অভিযোগ নিলে ফল ভাল হবে না বলে পুলিশকে হুমকি দেন তিনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পুলিশ প্রথমে এফআইআর নিতে অস্বীকার করে। পরে থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় এফআইআর নেওয়া হয়।
কিন্তু এ কথা মানতে নারাজ পুলিশকর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, নিয়ম মেনেই অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, আগেও মণ্টুর বিরুদ্ধে গুণ্ডাগিরির অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি এক বাসচালককে মারধর করেছিলেন তিনি। চালককে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সে ঘটনাতেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy