—ফাইল চিত্র।
প্রচণ্ড দাপট নিয়ে ফের লোকসভায় এলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু রাজ্যসভা?
পাঁচ বছর আগে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এসেও পদে পদে হোঁচট খেতে হয়েছে সংসদের উচ্চকক্ষে। এখনও হিসেব বলছে, লোকসভায় বিজেপির ফের ‘সুদিন’ এলেও রাজ্যসভার কাঁটা দ্রুত মেটার নয়। ভরসা রাখতে হবে শরিকি লাঠিতেই। রাজ্যসভায় এখনই যদি টায়েটোয়ে পাশ করতে হয়, তা হলে অবিলম্বে নবীন পট্টনায়ক, জগন্মোহন রেড্ডি, আর কে চন্দ্রশেখর রাওদেরও দ্রুত এনডিএতে শামিল করতে হবে।
কাল ‘প্রচণ্ড’ জনমত নিয়ে উচ্ছ্বাস জানানোর ফাঁকেও নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ দু’জনেই বারবার নবীন, জগন্মোহনের প্রশস্তি করতে ভোলেননি। বিজেপি বলছে, ‘‘যদি এনডিএ নিয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছোঁয়া না যেত, তা হলে এই দলগুলিই হত অগতির গতি। কিন্তু এ বারে বিপুল জনমত নিয়ে আসার পরেও তাদের পাকাপাকি ভাবে এনডিএতে নিয়ে আসা দরকার। তাতে এক দিকে যেমন লোকসভাতেও এনডিএর সংখ্যা চারশোর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া যায়, তেমনই রাজ্যসভার যে কোনও বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের প্রয়োজন।’’
রাজ্যসভায় সাংসদ ২৪৫ জন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১২৩ জনের সমর্থন। কিন্তু বিজেপির সাংসদ এখন ৭৩ জন। অর্থাৎ, লোকসভার মতো রাজ্যসভায় একার দাপট ধরে রাখতে বিজেপিকে আরও ৫০ জন সাংসদকে জিতিয়ে আনতে হবে। লোকসভার মতো সরাসরি মানুষের ভোটে নয়, বরং রাজ্যে রাজ্যে মানুষের ভোটে জিতে আসা বিধায়কদের সংখ্যার উপরেই নির্ভর করে রাজ্যসভার নির্বাচন। আর রাজ্যসভার ভোট তখনই হবে, যখন উচ্চকক্ষের সাংসদদের একে একে মেয়াদ শেষ হবে। বিজেপির নিজের সংখ্যা ৭৩ হলেও শরিক ও নির্দলদের নিয়ে একশোর কোঠা এখনই পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোনও বিল পাশ করানোর জন্য এনডিএর বাইরে থাকা তিন দলের পাকাপাকি সমর্থন জরুরি। আগামী মাসে অসমের দু’টি আসন খালি হচ্ছে। তার মধ্যে একটি আবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। কিন্তু অসমের বিধানসভার অঙ্ক অনুযায়ী বিজেপি একটি পেতে পারে। জুলাই মাসে শূন্য হবে তামিলনাড়ুর ৬টি। কিন্তু তাতেও বিজেপি বা তার শরিক দলের কোনও ফায়দা নেই। এর পরের নির্বাচন ২০২০-র এপ্রিল, জুন, জুলাই ও নভেম্বরে। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাত, বিহার, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, হিমাচল, হরিয়ানা, কর্নাটক ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে প্রায় সত্তরটির উপরে আসনে নির্বাচন।
সব মিলিয়ে রাজ্যগুলির এখনকার যা পরিস্থিতি, তাতে বিজেপি ও বর্তমান শরিকরা ১৪টির বেশি আসন যোগ করতে পারছে না। কিছু রাজ্যে সেই সময়ের পরিস্থিতি বিচার করে আসন-ভাগ্য নির্ধারণ হবে। যেমন, বিজেপি যদি কর্নাটকে সরকার ভেঙে জেডিএসকে সঙ্গে আনতে পারে, কিংবা মহারাষ্ট্র-হরিয়ানার মতো রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর যেমন সমীকরণ হবে। ফলে লোকসভায় ক্ষমতার আস্ফালন যতই থাকুক, রাজ্যসভা নিয়ে এখনই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না মোদী-শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy