Advertisement
১১ মে ২০২৪

চাপে গো-বিধি নিয়ে নরম কেন্দ্র

কেন্দ্রের ওই নির্দেশকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল, হায়দরাবাদের মুসলিমদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া জামিয়াতুল কুরেশ অ্যাকশন কমিটি’। সংগঠনের সভাপতি ফাহিম কুরেশির অভিযোগ, মোদী সরকার খাদ্য ও জীবিকার মতো মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। এর ফলে চাষি ও পশু ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বেন। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আর কে অগ্রবাল ও বিচারপতি এস কে কউলের বেঞ্চ দু’সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

দেশে গোমাংস খাওয়ার উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি বলে সুপ্রিম কোর্টে জানাল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

হাটে-বাজারে গবাদি পশু কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশ জুড়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছে মোদী সরকার। এ বার সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল পি নরসিমহার যুক্তি, গবাদি পশু জবাই বন্ধ করার অভিযোগ ঠিক নয়। শুধুমাত্র দেশের হাটে-বাজারে জবাইয়ের জন্য গবাদি পশু কেনাবেচার উপরে নিয়ন্ত্রণ
টানা হয়েছে।

কেন্দ্রের ওই নির্দেশকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল, হায়দরাবাদের মুসলিমদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া জামিয়াতুল কুরেশ অ্যাকশন কমিটি’। সংগঠনের সভাপতি ফাহিম কুরেশির অভিযোগ, মোদী সরকার খাদ্য ও জীবিকার মতো মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। এর ফলে চাষি ও পশু ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বেন। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আর কে অগ্রবাল ও বিচারপতি এস কে কউলের বেঞ্চ দু’সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে। পরবর্তী শুনানি আগামী ১১ জুলাই।

সুপ্রিম কোর্টকে বক্তব্য জানানোর আগেই অবশ্য আজ মোদী সরকার সুর নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক ২৫ মে-র বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছিল। সেই দফতরের মন্ত্রী হর্ষবর্ধন আজ বলেন, ‘‘যাঁদের আপত্তি রয়েছে, তাঁদের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে, সততার সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে।’’ কেরল ও উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্য কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ গো-বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে চায়। প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাংস রফতানি ও চর্মশিল্পে যুক্ত ব্যবসায়ী ও কৃষক সংগঠনগুলি। হর্ষবর্ধনের বক্তব্য, যাঁরা আপত্তি তুলছেন, তাঁরা তাঁদের বক্তব্য কেন্দ্রকে জানান। এই নির্দেশের উপর মাদ্রাজ হাইকোর্ট আগেই স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। আজ নরসিমহাও যুক্তি দিয়েছেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশকে গোটা দেশেই স্থগিতাদেশ হিসেবে ধরে
নিচ্ছে কেন্দ্র।

বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, এ হ’ল গোমাংসের উপর ঘুরপথে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এর ফলে চাষি, পশুপালক, গোয়ালারা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। গরু-মোষ দুধ দেওয়া বন্ধ করে দিলে বা চাষের কাছে অক্ষম হয়ে গেলে তাঁরা তা বেচে সেই টাকায় নতুন গবাদি পশু কিনতেন। এখন এই পশুদের বসিয়ে খাওয়ানোর খরচ কে দেবে? পশু অধিকার আন্দোলনকারী গৌরী মওলেখির যুক্তি, ‘‘পশু হাটে কেনাবেচার তলে তলে বেআইনি পাচারও হতো। পশুপালক বা চাষিদের থেকে কসাইখানাগুলি সরাসরি জবাইয়ের পশু কিনে নিক।’’ কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লার যুক্তি, ‘‘সেখানে তো গোরক্ষক বাহিনী দাঁড়িয়ে থাকবে। বাধ্য হয়ে কম দামে পশু বেচে দিতে হবে গরিবদের!’’

শিল্প মহলের অভিযোগ, কসাইখানাগুলি ৯০ শতাংশ গবাদি পশুই কেনে বাজার থেকে। তাই এর আঁচ চর্মশিল্পেও পড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cattle trade beef Centre কেন্দ্র
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE