Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সীমান্তে পাহারা বাড়াতে সহমত দু’দেশ

গুলশনের রেস্তোরাঁয় হামলার পর বাংলাদেশে সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান যত গতি পাচ্ছে, ততই আশঙ্কা বাড়ছে সীমান্তে। আজ ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই মর্মে নয়াদিল্লিকে সতর্ক করল ঢাকা। ঢাকার অনুরোধ, সীমান্তে প্রহরা একেবারে নিশ্ছিদ্র করা হোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০৪:০৮
Share: Save:

গুলশনের রেস্তোরাঁয় হামলার পর বাংলাদেশে সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান যত গতি পাচ্ছে, ততই আশঙ্কা বাড়ছে সীমান্তে। আজ ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই মর্মে নয়াদিল্লিকে সতর্ক করল ঢাকা। ঢাকার অনুরোধ, সীমান্তে প্রহরা একেবারে নিশ্ছিদ্র করা হোক।

গুলশন কাণ্ডের পরে বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয়েছে ধরপাকড়। যার জেরে নিয়মিত ডেরা বদলাচ্ছে জঙ্গিরা। বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে মূল চিন্তার বিষয় হল— অভিযানে সাধারণ জঙ্গিরা ধৃত অথবা নিহত হলেও, মূল মস্তিষ্করা এখনও অধরা। গোয়েন্দাদের একাংশের মতে, তাদের একটি বড় অংশ হয় পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতে ঢুকেছে, অথবা ঢোকার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, ইতিমধ্যেই গুলশন কাণ্ডে অভিযুক্ত জেএমবি জঙ্গি মহম্মদ সালেহান ও তার ডজন খানেক সঙ্গী অসম ও পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ভারতে ঢুকেছে। তাই সীমান্তে পাহারা বাড়ানোর জন্য আজ রাজনাথ সিংহকে বিশেষ করে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে ধৃত আইএস জঙ্গি মুসার বিষয়ে আজ একাধিক তথ্য জানানো হয়েছে ঢাকাকে। মুসার সঙ্গে জেএমবি-র যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে এনআইএ। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মুসার কাছে বাংলাদেশে হামলা চালানোর বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য ছিল। সূত্রের খবর, বাংলাদেশে জঙ্গিদের ডেরার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিয়েছে মুসা। যা ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে বাংলাদেশকে। গুলশন কাণ্ডের আর এক মাথা মহম্মদ সুলেমানের সঙ্গে মুসা একাধিক বার বৈঠকও করেছিল। ঢাকার আশঙ্কা, সুলেমান সম্ভবত উত্তর ভারতে কোথাও গা-ঢাকা দিয়েছে।

গুলশনের রেস্তোরাঁয় হামলার পর থেকে আতঙ্কে কাঁপছে বাংলাদেশ। আঁচ এসে পড়ছে ভারত-সহ গোটা উপমহাদেশে। এমন একটি সময়ে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর দু’দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক বসল দিল্লিতে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে কোনও সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তি হয়নি ঠিকই, কিন্তু গোটা পরস্থিতি খতিয়ে দেখে সীমান্তে নিরাপত্তা পরিকাঠামোকে জোরদার করার প্রশ্নে একমত হয়েছে দু’পক্ষ। আগামী ১৬ অক্টোবর গোয়ায় বিমস্টেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আসার কথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সন্ত্রাস-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠক সারবেন তিনি। তার আগে এই বৈঠকের মাধ্যমে সন্ত্রাস প্রশ্নে সমন্বয়কে ঝালিয়ে নিল দু’দেশ।

বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দিল্লিকে জানিয়েছে, গুলশন কাণ্ড পরিকল্পিত আক্রমণ। এর উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে আইএস–এর উপস্থিতি রয়েছে— এই বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে দেওয়া। এক কর্তার ব্যাখ্যা, “তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল অঙ্কের ব্যবসা হয়। জাপানও বাংলাদেশে হাজার হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। দু’দেশের নাগরিকদের হত্যা করে বিদেশিদের মধ্যে ত্রাস ছড়ানো ছিল হামলার লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

india pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE