সর্বহারা: বন্যা কেড়েছে সব কিছু। নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিও। ত্রিশূরের আন্নামানাদায়। পিটিআই
বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে এখন পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ। বন্যার জলে ঘর ভেঙেছে, ভেসে গিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। হারানো নথি নতুন করে তৈরি করে দেওয়ার জন্য বিশেষ অভিযানে নামছে কেরল সরকার। সেই সঙ্গেই বাড়ি এবং ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ঋণের ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য সুদ মকুবের ব্যবস্থা হচ্ছে।
এ বারের বন্যায় কেরলের ১৪টি জেলাই হয় সম্পূর্ণ, নয়তো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। জলের তোড়ে আধার, রেশন কার্ড, জমি-বাড়ির দলিল, পরীক্ষার নানা শংসাপত্র— বিভিন্ন রকমের নথিপত্র হারিয়েছে বা নষ্ট হয়েছে। পরীক্ষার শংসাপত্র হারিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে এক জানলা পদ্ধতিতে বিকল্প নথি তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিনারাই বিজয়নের সরকার। তথ্য ও প্রযুক্তি দফতর একটি বিশেষ সফ্টঅয়্যার এবং মোবাইল অ্যাপ তৈরি করছে। নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখের প্রাথমিক তথ্য নিয়ে সফ্টঅয়্যার মারফত বিকল্প নথি দেওয়া হবে। ওই প্রাথমিক তথ্য এবং আঙুলের ছাপের মতো বায়োমেট্রিক তথ্য সরকারি আধিকারিকেরাই সংগ্রহ করবেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে।
নষ্ট হওয়া আধার কার্ডের বিকল্প তৈরির বিষয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর কথা বলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। শিক্ষার শংসাপত্রের ক্ষেত্রে কেরলের প্রতিষ্ঠান হলে সমস্যা নেই। তবে বাইরের কোনও প্রতিষ্ঠান হলে কী করণীয়, তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন আছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী ই চন্দ্রশেখরনের কথায়, ‘‘বেনজির বিপর্যয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে বিপদে পড়েছেন বহু মানুষ। অনলাইনে আবেদন করে তাঁরা যাতে বিকল্প নথি পান, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে সকলে সড়গড় নন। তাতেও যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য এলাকাভিত্তিক ‘অক্ষয় কেন্দ্রে’ সহায়তার ব্যবস্থা থাকবে। এমনকী, সেপ্টেম্বরে এলাকা ধরে ধরে জন-আদালতও বসানো হবে।’’ বিকল্প নথির জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুরসভাকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় চরম আকার নিতেই মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন ব্যাঙ্কগুলির কাছে আবেদন করেছিলেন তাদের ঋণ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার জন্য। তার পরে রাজ্য স্তরের ব্যাঙ্কার্স কমিটির বৈঠকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র শিল্প কেন্দ্র এবং বাড়ির ঋণে (পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত) আপাতত সুদ নেওয়া হবে না। এক বছর পরে ওই সিদ্ধান্ত আবার পর্যালোচনা করা হবে। আর এর মধ্যে প্রয়োজনে ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে ফের ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক কোনও ‘মার্জিন মানি’ কাটবে না। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে অবশ্য স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ব্যাঙ্কের ঋণ পেলেও ভাঙা বাড়ির জন্য সরকারি ক্ষতিপূরণ যেখানে মেলার মিলবে। কোনও ক্ষতিপূরণের জন্যই আবেদন লাগবে না। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে আধিকারিকেরাই কথা বলবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy