ছবি: সংগৃহীত।
টাকা বিলি করে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে মঙ্গলবারই বাতিল হয়েছে ভেলোর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই তামিলনাড়ুর আন্দিপট্টি থেকে ফের ১.৪৮ কোটি টাকা উদ্ধার করলেন আয়কর দফতর কর্তারা। ওই টাকা ৯৪টি প্যাকেটে ভরে রাখা ছিল। এমনকী প্যাকেটের গায়ে উল্লেখ করা ছিল ওয়ার্ডের নাম, ভোটার সংখ্যাও। তল্লাশিতে ভোটার পিছু তিনশো টাকা বিলির হিসেব লেখা একটি নথিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রাত পোহালেই ভোট আন্দিপট্টিতে। বৃহস্পতিবার লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি সেখানে বিধানসভার উপনির্বাচনও। তার আগেই টিটিভি দিনকরনের দল এএমএমকে-এর এক নেতার দোকানে হানা দিয়েছিল আয়কর দফতরের ফ্লাইং স্কোয়াড। মঙ্গলবার ভোর রাত পর্যন্ত তল্লাশি চলে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে তাদের বাধা দেওয়া হয়। ফলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বেগতিক দেখে দোকানের শাটার নামিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত নেতা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, শূন্যে গুলি চালাতে বাধ্য হন আয়কর কর্তাদের সঙ্গে থাকা পুলিশকর্মীরা। ঘটনাস্থল থেকে এএমএমকে-এর চার কর্মীকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। দোকানের ভিতরে থরে থরে সাজানো টাকাভর্তি প্যাকেটগুলিও উদ্ধার করা হয়েছে।
৩০ মার্চ ভেলোরে প্রবীণ ডিএমকে নেতা দুরাই মুরুগান ও তাঁর ছেলে কাথির আনন্দের বাড়িতে হানা দিয়ে হিসেব বহির্ভূত ১০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। আর এক ডিএমকে নেতার সিমেন্টের গুদাম থেকে ১১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেন আয়কর আধিকারিকেরা। ওই টাকা ভোটারদের বিলির চেষ্টা চলছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ভেলোর কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। বুধবার মাদ্রাজ হাইকোর্ট কমিশনের এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখার রায় দিয়েছে। ভেলোরের পরে আন্দিপট্টির ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে আন্দিপট্টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। অন্য দিকে মুখ খোলেননি এএমএমকে প্রধান টিটিভি দিনকরনও।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে এবং বিপক্ষকে চাপে রাখতে ভোটের মুখে বেছে বেছে বিরোধীদেরই অভিযানের নিশানা করছে আয়কর দফতর— এই অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। পরিসংখ্যান বলছে, গত ছ’মাসে সারা দেশে ১৫টিরও বেশি অভিযান চালিয়েছে আয়কর দফতর। তার মধ্যে মাত্র একটি অভিযান হয়েছে উত্তরাখণ্ডের এক বিজেপি নেতার বাড়িতে। বিরোধীদের মধ্যে আয়কর দফতরের আতস কাচের নীচে এসেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠেরা, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর ঘনিষ্ঠরা, অন্ধ্রের তেলুগু দেশম নেতা সি এম রমেশ ও পুত্তা সুধাকর, ডিএমকে নেতা তথা দলের কোষাধ্যক্ষ দুরাই মুরুগান ও কাথির আনন্দ, দিল্লির আপ নেতা কৈলাস গহলৌত ও নরেশ বালিয়ান, উত্তরপ্রদেশে বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর ঘনিষ্ঠ নেতারা। তালিকায় শেষতম সংযোজন ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি। সেখানে অভিযানে গিয়ে অবশ্য মুখ পুড়েছে আয়কর কর্তাদের। মঙ্গলবারের ওই অভিযানে নগদ টাকা বা বেআইনি কোনও কিছুই উদ্ধার বা বাজেয়াপ্ত করতে পারেননি আয়কর কর্তারা। শেষে জানিয়েছেন, যে গোপন খবরের ভিত্তিতে তাঁরা অভিযান চালিয়েছিলেন, তা ‘ভুয়ো’ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy