Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
general-election-2019-national

প্রিয়ঙ্কার রোড শো, মাঝপথে আটকে গেলেন মেনকা

গত কাল সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে দলীয় প্রার্থী সঞ্জয় সিংহের হয়ে রোড শো করছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।

প্রিয়ঙ্কার রোড শো। ছবি: পিটিআই।

প্রিয়ঙ্কার রোড শো। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৯ ০৩:০২
Share: Save:

তাঁর জন্য আটকে থাকা বিমান ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেই নেত্রীকেই দেখতে হল, তাঁর জন্য আটকে পড়েছেন কাকিমা!

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখোমুখি হলেন কাকিমা এবং ভাশুরঝি! ভোটপ্রচারে বেরিয়ে দু’জনে মুখোমুখি হলেন বটে, কিন্তু কেউই কারও দিকে তাকালেন না। হল না কুশল বিনিময়। কারণ, তাঁরা যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ!

গত কাল সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে দলীয় প্রার্থী সঞ্জয় সিংহের হয়ে রোড শো করছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। উল্টো দিক থেকে তখন আসছিল বিজেপি প্রার্থী মেনকা গাঁধীর কনভয়। কিন্তু ভাশুরঝির রোড শোয়ের জন্য তৈরি হওয়া যানজটে আটকে পড়ল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কাকিমার কনভয়। সেই কাকিমা, যিনি মানুষ করেছেন তাঁকে। সেই কাকিমা, যাঁর বিরুদ্ধে কোনও দিন নির্বাচনী প্রচার করেননি প্রিয়ঙ্কা।

সেই মেনকা তখন তাকিয়ে অন্য দিকে। আর এসপিজি-র সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে প্রিয়ঙ্কা হাত নাড়ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভিড়ের দিকেই হাত নাড়ছিলেন সনিয়া গাঁধীর মেয়ে। কংগ্রেসের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কাকিমার দিকেই হাত নাড়ছিলেন প্রিয়ঙ্কা। পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যে যানজট সরিয়ে দেয়। ফের চলতে থাকে মেনকার কনভয়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

লখনউ বিমানবন্দরে প্রিয়ঙ্কার জন্যই আটকে পড়েছিল একটি বিমান। সেই যাত্রিবাহী বিমানটিকে ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেন তিনি। ঘটনাটি কী?

সম্প্রতি অমেঠীতে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। তাঁর দিল্লি ফেরার জন্য যে বেসরকারি চার্টার্ড বিমানটি ছিল, সেটি বিকল হয়ে যায়। ফলে কংগ্রেস কর্মীরা লখনউ থেকে প্রিয়ঙ্কার জন্য একটি বেসরকারি বিমানের টিকিট কেটে রাখেন। সেই বিমান ছাড়ার কথা ছিল রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। কিন্তু কর্মীরা বুঝতে পারেন, সময়ে পৌঁছতে পারবেন না প্রিয়ঙ্কা। দলীয় কর্মীরা তাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলেন, বিমানটি যেন একটু দেরি করে ছাড়া হয়। তাঁর জন্য আটকে রয়েছে বিমান, সেই খবর শুনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। এবং কর্মীদের নির্দেশ দেন বিমানটিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। ভোটের প্রচারে দাঁড়িয়ে সেই প্রিয়ঙ্কাকেই দেখতে হল, তাঁর রোড শোয়ের জন্য আটকে পড়েছেন কাকিমা।

এই ব্যাপারে পরে প্রশ্ন করা হলে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মেনকা। আর প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আমি কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছিলাম। কারও বিরুদ্ধে নয়।’’ মেনকা এবং তাঁর ছেলে বরুণ গাঁধীর বিরুদ্ধে কখনই প্রচার করেননি সনিয়া, রাহুল গাঁধীরা। ২০১৪ সালে সুলতানপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন বরুণ। সে বার সুলতানপুরে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘গাঁধী পরিবারের আদর্শ পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন বরুণ। তাই তাঁকে ঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়া উচিত।’’ গাঁধী পরিবারের এক সদস্য আর এক সদস্য সম্পর্কে এমন মন্তব্য করায় ‘ভাইরাল’ হয়েছিল প্রিয়ঙ্কার সেই বৈঠকের ভিডিয়ো।

আজ সিদ্ধার্থনগরে একটি জনসভা করেন প্রিয়ঙ্কা। প্রতিটি সভায় এখন নিয়ম করে নেহরু এবং গাঁধী পরিবারকে আক্রমণ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন বিষয়ে কাঠগড়ায় তুলছেন প্রিয়ঙ্কার বাবা রাজীব গাঁধীকেও। আজ সেই প্রসঙ্গে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান এবং অন্য সব অদ্ভুত বিষয় নিয়ে বলছেন, কিন্তু মানুষের সমস্যা নিয়ে একটি কথাও বলছেন না।’’ প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, বিজেপি সরকার ‘অহঙ্কারী’। তারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে।

কৃষকদের দুর্দশা নিয়েও মোদীকে কাঠগড়ায় তোলেন প্রিয়ঙ্কা। বলেন, ‘‘কংগ্রেস যখন কৃষকদের ঋণ মকুবের কথা বলছে, তখন সরকার বলছে টাকা নেই। টাকা না-থাকলে বড় বড় শিল্পপতিদের ৫ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুব করা হল কী করে? কৃষকদের বিমার টাকা কোথায় গেল?’’ তাঁর দাবি, কৃষকদের দুর্দশার শেষ নেই, আর মোদীর বন্ধুরা শেষ পাঁচ বছরে রেকর্ড মুনাফা করেছেন। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতায় এসেই কৃষিঋণ মকুব করেছে কংগ্রেস। সেই বিষয়টি তুলে ধরে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘সদিচ্ছা থাকলে তিন দিনে ঋণ মকুব করা যায়।’’ রাহুল গাঁধীর সহোদরা জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনাদের জন্যই আমরা এখানে। নিজেদের ক্ষমতা ভুলে যাবেন না। গণতন্ত্রই আপনাদের এই ক্ষমতা দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE