নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নিজের ছবিও ভেসে উঠতে পারে ফেসবুকে। যদি ‘আমিও চৌকিদার’ অভিযানের শরিক হন কেউ। খোদ অমিত শাহ আজ এমন অভিযান শুরু করলেন। মোদীর ছবি-দেওয়া বিশেষ ফ্রেমে সাজিয়ে নিজের ছবি ফেসবুকে দিলেন। সবাইকে অনুরোধ জানালেন ওই ফ্রেম ব্যবহারের জন্য।
৩১ মার্চ এই নব্য ‘চৌকিদার’দের সঙ্গে আলাপচারিতার বিরাট আয়োজন করতে চলেছেন মোদী। তা নিয়ে আজও এক দফা প্রচার করলেন প্রধানমন্ত্রী। এবং এখানেও থামলেন না। এর আগে রাহুল গাঁধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবেদন করেছিলেন, মানুষকে বেশি করে ভোট দেওয়ার অনুপ্রেরণা দিতে। তাতে বেশি সাড়া মেলেনি। আজ রাতে মোদী ফের মাধুরী দীক্ষিত থেকে দীপা কর্মকার, হিমা দাস, প্রাক্তন ইনফোসিস কর্তা মোহনদাস পাই-দের আবেদন করে ধারাবাহিক টুইট করলেন। সেখানে জুড়লেন নতুন স্লোগান— ‘ভোট কর’।
রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা যতই ‘চৌকিদার’ অভিযান ভোঁতা করতে চাইছেন, ততই আক্রমণাত্মক হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রচারে কোনও ফাঁকই রাখতে চাইছেন না। অথচ এই অভিযানে এখনও সাড়া দেননি বিজেপিরই অনেকে। সে তিনি সুব্রহ্মণ্যম স্বামীই হোন, বা দার্জিলিঙের বিদায়ী সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। স্বামীর অবশ্য এতে শামিল না-হওয়ার নিজস্ব যুক্তিও আছে। দক্ষিণের এক চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বামী বলেছেন, তিনি ব্রাহ্মণ, চৌকিদার নন। তিনি নির্দেশ দেন, চৌকিদারি করেন না।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্বামীর এই মন্তব্য নিয়ে অবশ্য বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। কিন্তু রাহুল-প্রিয়ঙ্কা নিশানা করছেন মোদীকেই। রাহুল আজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর অভিযানেই স্পষ্ট, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান জনতার নিচু তলা পর্যন্ত পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অপরাধবোধ কাজ করছে। তাই বিজেপির পাল্টা অভিযানের প্রয়োজন হল। নিজের নামের আগে ‘চৌকিদার’ শব্দ যাঁরা লিখছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কত অভিযোগ আসছে রোজ! প্রধানমন্ত্রী থেকে অমিত শাহ, পীযূষ গয়াল, অরুণ জেটলি, জয় শাহের মতো ব্যক্তিরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে দেশ লুট করতে সাহায্য করেছেন, অথবা নিজেরাই অভিযুক্ত।’’
ছাড়েননি প্রিয়ঙ্কাও। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আখচাষিদের বকেয়া না-মেটানো নিয়ে আজ তিনি বিজেপি সরকারকে দুষেছেন। আর সেই প্রসঙ্গেই মোদীকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘এই চৌকিদার শুধু ধনীদের জন্য কাজ করেন, গরিবদের কোনও পরোয়াই নেই।’’
কিন্তু মোদী দমেননি। ‘আমিও চৌকিদার’ স্লোগানের নতুন টি-শার্ট, টুপি তিনি বাজারে আনছেন। যাঁরা সেগুলি পরে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন, তাঁদের তারিফও করছেন। ৩১ মার্চের অনুষ্ঠানে সকলকে ‘আমিও চৌকিদার’ টি-শার্ট, টুপি পরে আসার আবেদন করেছেন। টুইটারে জনতার কাছে জানতে চেয়েছেন, ‘‘আপনি কি নিজের টি-শার্ট অর্ডার করেছেন?’’
কংগ্রেস বলছে, বেকারত্ব, কৃষকদের দুর্দশার মতো মৌলিক সমস্যাগুলি থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই বারবার নতুন স্লোগান বাজারে আনছেন প্রধানমন্ত্রী। সার্জিকাল স্ট্রাইকের পরে দেশভক্তির জোয়ার আনতে চেয়েছিলেন। সেটিও ফিকে হতে শুরু করেছে। সেই কারণেই ‘আমিও চৌকিদার’ অভিযান সামনে এনে তার সঙ্গে দেশভক্তি জুড়তে চেয়েছেন সুকৌশলে। কিন্তু সেটিও দানা বাঁধছে না। তাই এখন নতুন স্লোগান— ‘ভোট কর।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy