ফাইল চিত্র।
জন্মদিনে ব্যক্তিগত সৌজন্য দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টুইটে শুভেচ্ছা জানালেন ঠিকই। সেই সঙ্গে জার্মানির মাটি থেকেও তাঁর সরকারকে উৎখাত করার ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার ফ্রাঙ্কফুর্টে নদীর পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় ২০১৯-এর ভোটে সব রাজনৈতিক দলকে এক ছাতার তলায় শামিল হওয়ার আহ্বান রইল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাড়তি গুরুত্ব পেল আঞ্চলিক দলগুলির তরফে বিজেপিকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলার কথা। ভোটে মানুষের রায় পক্ষে গেলে নিজেদের মধ্যে কথা বলে প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া কঠিন হবে না বলেই মনে করছেন মমতা। তাঁর দাবি, তেলের দাম রোজ বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দরও আকাশছোঁয়া। চাকরি নেই। চাষি এবং শ্রমিকরা বিপন্ন। প্রশ্নের মুখে গণতন্ত্র।
মমতার কথায়, দলিতদের উপরে আক্রমণের খবর মিলছে রোজ। উত্তরপ্রদেশে সামান্য কারণে খুন হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। ২০১৯ সালে ব্যালট বাক্সে এর জবাব দিতে সাধারণ মানুষ তৈরি হচ্ছেন বলে তাঁর দাবি। আর এই সূত্রেই সমস্ত দলকে একজোট হওয়ার ডাক। মমতা বলেন, যেখানে যে আঞ্চলিক দলের ক্ষমতা ও প্রভাব বেশি, সেখানে তাদের কাজ হবে বিজেপিকে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলা। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে বরং পরে নিজেদের মধ্যে কথা বলে ঠিক করা যাবে। তবে মমতার দাবি, এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বাংলা। এর আগেও বিজেপি বিরোধী মহাজোট তৈরির প্রসঙ্গে এ কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যার মধ্যে আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট তৈরির প্রতিজ্ঞা খুঁজে পেয়েছেন অনেকে।
‘২০১৯, বিজেপি ফিনিশ’— এই স্লোগান মনে করিয়ে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ প্রকল্পের যে এত প্রচার, তার সুবিধা আখেরে পান কত জন? বরং তাঁর চালু করা একের পর এক সামাজিক প্রকল্পের কথা বলে দাবি করেন, বিপুল দেনার দায় বয়েও জন্ম থেকে মৃত্যু, জীবনের প্রতি ধাপে মানুষকে কিছুটা আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাঁর সরকার।
হঠাৎ দেখা: ফ্রাঙ্কফুর্টের রাস্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হালে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ায় বিরোধীরা বিস্তর প্রশ্ন তুলেছেন। জবাব চেয়েছেন, স্বাস্থ্য ভাল নয় জেনেও সারাইয়ে কেন গড়িমসি? ওয়াকিবহাল মমতা সরাসরি সে প্রসঙ্গ তোলেননি। কিন্তু বলেন, ‘‘এক-একটা ব্রিজ ১০০-২০০ বছরের পুরনো। আমরা নতুন কিছু তৈরির চেষ্টা করছি। রাস্তা হয়েছে। সেতু হয়েছে। এখন বিরোধীরা চিৎকার করছেন। তাঁদের জানা উচিত, কোন ব্রিজ তাঁদের আমলে তৈরি।’’
কিন্তু আজকাল নিয়মিত বাংলায় এসে মমতার সরকারকেই উপড়ে ফেলার কথা বলছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মমতার উত্তর, ‘‘আগে দিল্লি সামলানোর ব্যবস্থা করুন। তার পরে বাংলার দিকে তাকানোর কথা ভাববেন।’’ মমতার দাবি, মোদী জমানায় দাম কমছে শুধু মানুষের জীবনেরই। তাই আগামী ভোটে মানুষ বিজেপিকে ‘না’ আর দেশের ডাকে ‘হ্যাঁ’ বলবেন বলেই তাঁর দাবি। আগের বার রাজ্যে দু’টি আসন পেয়েছিল। পরের লোকসভা ভোটে তা-ও পাবে না— ভোট ময়দানে এ কথা বহু বার বলেছেন মমতা। এ বার এই চ্যালেঞ্জের সাক্ষী রইল জার্মানিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy