নরেন্দ্র মোদী।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন আগেই। শনিবার দিল্লি থেকে রিমোটের বোতাম টিপে তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানালেন, লকডাউনের মধ্যে কাজ খুইয়ে যে বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্য থেকে ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, মূলত তাঁদের জন্য ঘরের কাছে কাজের সুযোগ তৈরি করতেই এই প্রকল্প। এর হাত ধরে পোক্ত হবে গ্রামীণ পরিকাঠামোও। করোনা- সঙ্কটে প্রবল সমস্যার মুখে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক এবং দরিদ্রদের জন্য এই প্রকল্প সহায়ক হবে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।
বিরোধীরা আগেই পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অসংবেদনশীল মনোভাবের অভিযোগ এনেছেন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠেছে, লকডাউনের আগে কেন ওই কর্মীদের বাড়ি ফেরার সুযোগ দেওয়া হল না? কেন ত্রাণ শিবিরে তাঁদের বিনা পরীক্ষায় দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হল? তাঁদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালাতে এত গড়িমসির কারণ কী? কেন তাঁদের পায়ে হেঁটে ফিরতে ও অনেককে প্রাণ খোয়াতে হল? এখনও কেন তাঁদের নগদ সাহায্য দিচ্ছে না সরকার? মোদী অবশ্য এ দিন প্রকল্প উদ্বোধনের সময়ে সমালোচনার তির বিরোধীদের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর কটাক্ষ, “দেশে ছ’লক্ষেরও বেশি গ্রামে ৮০-৮৫ কোটি মানুষ যে ভাবে সাহস করে করোনার মোকাবিলা করেছেন, পশ্চিমী দুনিয়ায় এর অর্ধেক হলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশংসার বন্যা বয়ে যেত। এখানে কিছু লোকের বাহবা দিতে কুণ্ঠা হয়। তাঁরা আপনাদের পিঠ চাপড়াবেন না। কিন্তু আমি জয়-জয়কার করতে থাকব। প্রচার করব এই সাফল্য।”
এক নজরে প্রকল্প
• নাম: গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান
• বরাদ্দ: ৫০,০০০ কোটি টাকা
• ৬টি রাজ্যে (বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান) ১২৫ দিন জোরকদমে কাজ।
• আওতায় মোট ১১৬টি জেলা। মূলত যেখানে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন অন্তত ২৫ হাজার পরিযায়ী কর্মী।
• লক্ষ্য, নিজের গ্রামেই এঁদের কাজ দেওয়া এবং সেই সূত্রে গ্রামীণ পরিকাঠামো তৈরি।
• করা হবে জল সংরক্ষণের পরিকাঠামো তৈরি, জাতীয় সড়ক নির্মাণ, গ্রামে রাস্তা তৈরি, ইন্টারনেট পরিষেবার পরিকাঠামো নির্মাণ-সহ মোট ২৫ রকমের কাজ।
• যুক্ত গ্রামোন্নয়ন, সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে, রেল, টেলিকম, কৃষি সমেত মোট ১২টি মন্ত্রক এবং দফতর।
অনেকে বলছেন, ঘরে ফেরা বিপুল সংখ্যক কর্মীকে শুধু একশো দিনের কাজে নিয়োগ করা যাবে না বুঝেই এই নতুন প্রকল্প। সঙ্গে সামনে বিহারের ভোট মাথায় রেখে নতুন নামের মোড়ক। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দাবি, উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে এক কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকেরা যে ভাবে একটি স্কুল রং করে ভোল পাল্টে দিয়েছিলেন, তা দেখেই এমন প্রকল্পের কথা প্রথম উঁকি দিয়েছিল তাঁর মাথায়। মোদীর দাবি, কাউকে যাতে হাত পাততে না-হয়, তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট সরকার।
আরও পড়ুন: চিনের উস্কানিতেই লাদাখে বেঁধেছিল গন্ডগোল, জানাল বিদেশ মন্ত্রক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy