Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোটে টার্গেট পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব, গাঁধীজির পর নেতাজি হাতিয়ার মোদীজির

স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতাজির ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে মোদীর মন্তব্য, ‘‘শুধু একটা পরিবারকেই বড় করে দেখানো ঠিক নয়। সুভাষচন্দ্র বসু, বল্লভভাই পটেল এবং অম্বেডকরের মতো সুসন্তানের অবদানকে ওই পরিবার কোনও মর্যাদা দেয়নি। অবহেলা করেছে।’’

লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী। রবিবার। ছবি: পিটিআই। আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্র পড়ছেন নেতাজি (ইনসেটে)। ফাইল চিত্র।

লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী। রবিবার। ছবি: পিটিআই। আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্র পড়ছেন নেতাজি (ইনসেটে)। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৫
Share: Save:

তিন সপ্তাহ আগে গাঁধীজির ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী পালন করেছিলেন ধুমধাম করে। এ বার আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন করতে লাল কেল্লায় আজ পতাকা তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে তিনি অস্ত্র করলেন সুভাষচন্দ্র বসুকেও। অনুষ্ঠানে নেতাজি-টুপি পরা মোদী অভিযোগ করলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘একটি পরিবারের’ অবদানকেই এত দিন বড় করে তুলে ধরা হয়ে এসেছে। অর্থাৎ এখানেও ঘুিরয়ে নেহরু পরিবারকেই নিশানা করলেন তিনি।

স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতাজির ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে মোদীর মন্তব্য, ‘‘শুধু একটা পরিবারকেই বড় করে দেখানো ঠিক নয়। সুভাষচন্দ্র বসু, বল্লভভাই পটেল এবং অম্বেডকরের মতো সুসন্তানের অবদানকে ওই পরিবার কোনও মর্যাদা দেয়নি। অবহেলা করেছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, স্বাধীনতার পরে দেশ চালানোর নীতি স্থির করতে গিয়ে ব্রিটিশের চোখ দিয়েই সব কিছু দেখা হয়েছে। যা নেতাজির ভাবনার বিরোধী। মোদী বলেন, ‘‘নেতাজির বিশেষ নজর ছিল পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে। অথচ এই এলাকাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চনার শিকার।’’

মোদীর আক্রমণের জবাব দিতে নেমে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইটারে লেখেন, ‘‘আপনি ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছেন। ভারতকে মুক্ত করতে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে সলতেতে আগুন দিয়েছিলেন নেতাজি। আর বিজেপির আইকন সাভারকর ব্রিটিশের হয়ে কাজ করেছেন।’’ কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যই নেতাজিকে নেহরুর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু বাস্তবে নেহরু এবং গাঁধী দু’জনের প্রতিই শ্রদ্ধা ছিল নেতাজির।’’ সিঙ্ঘভি মনে করিয়ে দেন, নেতাজি নিজেই হিন্দু মহাসভাকে সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ১৯৪৫-এ আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হলে তাঁদের হয়ে ১৭ জন আইনজীবীর প্যানেলে ছিলেন নেহরু।

মুখ খুলেছেন নেতাজি পরিবারের সদস্য তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসুও। তাঁর কথায়, ‘‘আজকের দিনে নেতাজিকে নিয়ে সঙ্কীর্ণ বাদানুবাদে লিপ্ত হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। নেতাজি এ সবের অনেক ঊর্ধ্বে।’’ নেতাজি পরিবারের আর এক সদস্য, সাংসদ সুগত বসু বলেন, ‘‘১৯৬৭ সালে স্বাধীনতার ২০ বছরে লাল কেল্লাতেই নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। বিরোধী নেতাদের ডাকা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন দীনদয়াল উপাধ্যায়ও। এতেই বোঝা যায় নেতাজি সংকীর্ণ রাজনীতির বিষয় নন।’’

প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, নেতাজির নামে পুরস্কার চালু করবে সরকার। ত্রাণে দক্ষতা দেখানোর জন্য প্রতি বছর এক পুলিশকর্মী পুরস্কার পাবেন। ৩০ ডিসেম্বর পোর্ট ব্লেয়ারেও যাবেন মোদী। ১৯৪৩ সালে ওই দিনই ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE