জঙ্গিদের আমরা জানিয়ে দিতে চাই, যে আমাদের মনোবল ভাঙা অত সহজ নয়।
বেশ কিছু দিন ধরে কাশ্মীরের জাকুরা ক্যাম্পে রয়েছি। যখন জওয়ানেরা বাড়ি যান বা বাড়ি থেকে ফেরেন তখন তাঁদের গাড়ির সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ছুটিতে বাড়ি যাওয়া জওয়ানদের এগিয়ে দিতে ও বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরা জওয়ানদের আনতে ২৮৫ কিমি দূরে জম্মু গিয়েছিলাম। পরের দিন অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি ওখান থেকে জওয়ানদের গাড়ির কনভয় নিয়ে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রাত থেকে বরফ পড়ায় আটকে যাই। সকলেই ছিলাম জম্মুর ট্রানজিট ক্যাম্পে। অন্য সময় হাজার বারোশো জওয়ান নিয়ে ২০-২৫টি গাড়ির কনভয় যায়। কিন্তু বরফে প্রায় আট দিন আটকে পড়ায় আড়াই হাজারের বেশি জওয়ান নিয়ে ৮০টি গাড়ি ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টে নাগাদ জম্মু থেকে শ্রীনগরের উদ্দেশে রওনা দেয়। তার প্রায় বারো ঘণ্টা পরে পুলওয়ামার কাছে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে কনভয়ে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। কনভয়ের ৪ নম্বর গাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়। জখম জওয়ানদের প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে জম্মুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে সতর্ক থাকতে হয় আমাদের। এখানে জঙ্গিরা সেনাদের থেকে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে। কারণ ওরা স্থানীয় লোক হয়। ওখানকার আবহাওয়া, রাস্তাঘাট সম্পর্কে ওরা অনেক বেশি জানে। অপরাধ করে লুকিয়ে থাকার অসংখ্য জায়গা ওদের জানা। সামনে শিশু ও মহিলাদের রেখে ওরা সেনাদের দিকে পাথর ছোড়ে। আমাদের অনেক সংযত হয়ে, নিয়ম মেনে, মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে হৃদয় পুড়ছে সেনাদের। এখানকার পরিস্থিতি আপাতত ঠিকই আছে। প্রতি রাতে ডিউটি করতে হচ্ছে। সারারাত ডিউটি করে শনিবার ভোর ৪টেয় ক্যাম্পে ফিরেছি। জঙ্গিদের আমরা জানিয়ে দিতে চাই, যে আমাদের মনোবল ভাঙা অত সহজ নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy