ফাইল চিত্র
আক্রমণে নেমেছিলেন গত কালই। দেশ জুড়ে মানবাধিকার কর্মীদের ধরপাকড়ের পরে রাহুল গাঁধী টুইটারে লিখেছিলেন, ‘দেশে একটা মাত্রই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থাকবে। সেটা আরএসএস।’ আজও সঙ্ঘকে আক্রমণ জারি রাখলেন তিনি। কেরলের বন্যা পরিদর্শনের ফাঁকে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘দেশে এখন দু’টো দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একটা শুধুমাত্র নাগপুরের আদর্শকেই সম্মান করে। অন্যটা সম্মান করে নানা রাজ্যকে, নানা মতাদর্শকে, নানা মানুষকে।’’ প্রসঙ্গত, নাগপুরেই আরএসএসের সদর দফতর।
রাহুলের গত কালের মন্তব্যের জবাবে আজ টুইট করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে মনমোহন সিংহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় বিপদ বলেছিলেন মাওবাদীদের। এখন কংগ্রেস মাওবাদীদের প্রকাশ্য সংগঠন ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। রাজনীতিকে জাতীয় নিরাপত্তার ঊর্ধ্বে রাখুন।’
ওই পাঁচ জন মানবাধিকার কর্মীর কাউকে কাউকে যে মনমোহন জমানাতেও গ্রেফতার করা বা জেলে পাঠানো হয়েছিল, ঘরোয়া মহলে তা অস্বীকার করছেন না কংগ্রেস নেতারাও। কিন্তু তাঁদের যুক্তি, ইউপিএ জমানায় এই গ্রেফতারিকে কেউ ‘রাষ্ট্রের প্রতিহিংসা’ বলে অভিযোগ তোলেননি। নরেন্দ্র মোদীর শাসনকালে সেই অভিযোগই উঠছে। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমাদের আদর্শগত বিরোধ থাকতেই পারে। তার মানেই কাউকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ বলা যায় না। সরকার বলুক, তাদের কাছে কী তথ্য রয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করতে হলে তো কারণটাও প্রকাশ্যে জানাতে হবে। তা না-হলে বোঝাই যাবে যে, গোটাটাই প্রতিহিংসা। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সাড়ে চার বছর ধরে অনেক অসন্তোষ জমা হয়েছে।’’
রাহুল জানিয়েছেন, কেন্দ্রের ‘অগণতান্ত্রিক’ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়বে বিরোধীরা। কংগ্রেস অবশ্য সিপিএমের মতো পথে নামার কর্মসূচি নেয়নি। সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দিয়েছেন, আগামিকাল দিল্লির যন্তর-মন্তরে সভা করবে বাম ও প্রগতিশীল সংগঠনগুলি। প্রতিবাদ সভা করবেন কলকাতার বিশিষ্টরাও। সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য আজ বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে মোদী সরকার!’’
আজ কার্যত যুদ্ধই বাধে টুইটারে। সৌজন্যে দু’টো
হ্যাশট্যাগ। ‘#আরবাননকশালস’ এবং ‘#মিটুআরবাননকশাল’। ‘শহুরে নকশালেরা’ এবং তার পাল্টা ‘আমিও শহুরে নকশাল’। শুরুটা এক রকম করেন বিজেপি-ঘনিষ্ঠ চিত্র পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। হ্যাশট্যাগ-সহ তিনি লেখেন, ‘একটা তালিকা বানানো যাক— কারা শহুরে নকশালদের সমর্থন করছে।’ এর পরেই ‘আমিও শহুরে নকশাল’ হ্যাশট্যাগে ভরে যেতে থাকে বিবেকের টুইটার পেজ। মানবাধিকার কর্মী প্রতীক সিংহ লেখেন, ‘আমার নামটা লিখে নিন।’ একই বক্তব্য নিয়ে আসতে থাকে অজস্র টুইট। ‘লগে রহো মুন্নাভাই’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’-র অভিনেতা অশ্বিন মুশরানের মতো কারও কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত তরজাতেও জড়ান বিবেক। ইতিমধ্যে কানহাইয়া কুমার টুইট করেছিলেন অন্য একটি হ্যাশট্যাগ দিয়ে— ‘ভুয়ো অভিযোগ আর নয়’। ছাত্র নেতা লেখেন, ‘আজব ব্যাপার। যারা দাঙ্গা করে, তারা দেশভক্ত। আর যারা মানবাধিকারের জন্য লড়াই করে, তারা কি না দেশদ্রোহী!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy