Advertisement
১১ মে ২০২৪
রাজীব স্মরণ

রাহুল নয়, আবেগ জাগালেন সনিয়াই

তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে। তা রুখতেই রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে ফের আবেগ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু মৃত্যুবার্ষিকীতে যুব কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে দেখাই গেল না রাহুল গাঁধীকে।

রাজীব স্মরণ। বীরভূমিতে সনিয়া ও রাহুলের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। শনিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রমাকান্ত কুশওয়াহা।

রাজীব স্মরণ। বীরভূমিতে সনিয়া ও রাহুলের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। শনিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রমাকান্ত কুশওয়াহা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০৩:৪৩
Share: Save:

তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে। তা রুখতেই রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে ফের আবেগ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু মৃত্যুবার্ষিকীতে যুব কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে দেখাই গেল না রাহুল গাঁধীকে।

রাজীবের মৃত্যুবার্ষিকীতে এ বার সকালের পাশাপাশি রাতেও অনুষ্ঠান হয়েছে তাঁর স্মারক বীরভূমিতে। সেই দু’টি অনুষ্ঠানে ছিলেন রাহুল। কিন্তু এর পাশাপাশি ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে দলের যুব সংগঠনের অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল সনিয়া ও রাহুলের। কিন্তু সেখানে রাহুল আসেননি।

ফলে প্রশ্ন উঠে যায়, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খেয়ে রাহুল কি ফের আড়ালে চলে গেলেন? দলের নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, কংগ্রেস সহ-সভাপতির শরীর ভাল নেই। সোমবার থেকে তিনি দলীয় কাজকর্ম শুরু করবেন। ভোটের ফলের ময়নাতদন্ত করবেন রাজ্যের নেতাদের নিয়ে। ছেলের অনুপস্থিতিতে সনিয়াকেই যুব কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে রাজীবের আদর্শের কথা বলতে হয়েছে। রাজীব-আবেগে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। মোদী সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল বাড়াতে বলেছেন, ‘‘ঘৃণা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি করা লোকেরা আমাদের ক্ষমতাচ্যুত করেছে। কিন্তু ওরা রাজীব গাঁধীর আদর্শ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’’

রাহুল ওই অনুষ্ঠানে না আসায় স্পষ্টতই হতাশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশ। ঘরোয়া আলোচনায় তাঁরা জানাচ্ছেন, বীরভূমি রাজনৈতিক বক্তৃতার জায়গা নয়। কিন্তু যুব কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার সুযোগ পেতেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। কিন্তু সেখানেই তাঁর দেখা পাওয়া গেল না।

রাজীব আবেগ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা অবশ্য দলে তরজা ঠেকাতে পারেনি। দলের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনের কথা বলে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন দিগ্বিজয় সিংহ। আজ যুব কংগ্রেসের সভাপতি অমরেন্দ্র রাজা ব্রার যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘কোনও অস্ত্রোপচার, ময়নাতদন্তের দরকার নেই। ভুল মেনে নিয়ে আরও পরিশ্রম করতে হবে।’’ তবে তিনিও মেনে নিয়েছেন, অক্ষম লোকদের বাড়ি পাঠিয়ে সক্ষমদের দায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কিছুটা সুর বদলেছেন দিগ্বিজয়ও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমি অস্ত্রোপচারের কথা বলায় অনেকে আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু দলের প্রয়োজনে তরুণদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়াটাই দরকার।’’ কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, দিগ্বিজয় আসলে দ্রুত রাহুলের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার কথাই এ দিন বলেছিলেন।

যুব কংগ্রেস সভাপতি অমরেন্দ্রও অবশ্য বিধানসভা ভোটে খারাপ ফলের জন্য রাহুলকে দায়ী করতে রাজি নন। তাঁর যুক্তি, রাহুল রাজ্যের বিষয়ে নাক গলান না। প্রদেশ কংগ্রেস ও স্থানীয় নেতারাই ভোটের রণকৌশল ঠিক করেছেন।

এই তরজার মধ্যেই ফের পরিবারতন্ত্র নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন অরুণ জেটলি। তাঁর যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর গদিকে নিজের অধিকার ভেবে ফেলছে নেহরু-গাঁধী পরিবার। কিন্তু বাস্তবে নেহরু-ইন্দিরার মাপের নেতা না থাকাতেই কংগ্রেসে সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। জেটলি বলেছেন, ‘‘পরিবারতন্ত্র মনের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। পরিবার না থাকলে প্রাসঙ্গিকতা থাকে না। পরিবার থাকলে তা পিছুটান হয়ে দাঁড়ায়। এটাই এখন কংগ্রেসের সমস্যা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajiv Gandhi Sonia Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE