রাজ্যসভার শীতকালীন অধিবেশনে তিল তালাক বিল পেশ করা হবে।
শেষবেলায় তিন তালাক বিল পাশের উদ্যোগ। লক্ষ্য সনিয়া-রাহুল গাঁধীকে কাঠগড়ায় তোলা।
সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুসলিম মহিলাদের চটিয়ে দিতে এই কৌশলই নিল মোদী সরকার তথা বিজেপি। তিন তালাক বিল আটকেই রইল। কিন্তু এতে বাধা দেওয়ার জন্য আজ সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে দায়ী করল মোদী সরকার।
সুপ্রিম কোর্ট তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিষিদ্ধ করার পরে তাকে আইনি অপরাধের তকমা দিতে বিল আনে মোদী সরকার। লোকসভায় বিল পাশ হয়ে গেলেও, রাজ্যসভায় কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের আপত্তিতে বিল আটকে রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এই স্পর্শকাতর বিলটির আগে সিলেক্ট কমিটিতে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
সরকারের তরফে অবশ্য ইঙ্গিত মিলেছে, তিন তালাক বিল পাশ না হওয়ায় এ বার সরকার অধ্যাদেশ বা জরুরি কারণে প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করে তিন তালাককে আইনি অপরাধের তকমা দিতে পারে। যদিও গত বছরের শেষ থেকে বিল আটকে রইলেও, মোদী সরকার এত দিন এ বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। অধ্যাদেশ জারি করে আইন চালুর রাস্তাতেও হাঁটেনি। হঠাৎই বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় তিন তালাকের অপরাধে জামিনের ব্যবস্থা করে বিলে সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। তার
পরেই আজ রাজ্যসভায় বিল পাশ করাতে উদ্যোগী হয় সরকার। কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে অন্যান্য দলের নেতারা প্রশ্ন তোলেন, কেন অধিবেশনের শেষ দিনে তাড়াহুড়ো করে এই বিলে আলোচনা হবে? অধিকাংশ দলেরই আপত্তি রয়েছে বলে রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু জানিয়ে দেন, ঐকমত্য হয়নি বলে তিন তালাক বিল আসছে না।
বিজেপি সরকারের কৌশল অবশ্য তৈরিই ছিল। সূত্রের খবর, সকালে অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, মুখতার আব্বাস নকভিরা এ বিষয়ে বৈঠকও করেন। বিল পাশ না হওয়ার জন্য সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার রাহুল গাঁধীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতিই এর জন্য দায়ী। অকারণে এই বিল আটকানো হচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সনিয়া গাঁধীকে রবিশঙ্কর প্রসাদ অনুরোধ করেছিলেন, মহিলা হিসেবে তিনি যেন এই বিল পাশ করাতে উদ্যোগী হন। আজ একই সুরে অনন্ত কুমার বলেন, ‘‘সনিয়া ও রাহুল গাঁধী মুসলিম মা-বোনেদের কথা ভাবেন না। শুধু কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করেন।’’
সনিয়া গাঁধীকে সংসদে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাদের দলের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। আমি এ বিষয়ে আর কিছু বলব না।’’ কংগ্রেসের প্রশ্ন ছিল, কেন বৈবাহিক সম্পর্কে আইনি অপরাধ টেনে আনা হবে?
কেনই বা তিন তালাকের অপরাধে জামিনের ব্যবস্থা থাকবে না? সরকার নতুন করে জামিনের ব্যবস্থা করলেও, এই বিল নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনার প্রয়োজন বলে মনে করছে কংগ্রেস। যাকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায়ও।
আরও পড়ুন: অমিতের সভার দিনেই গোটা রাজ্যে পথে নামছে তৃণমূল, পাল্টা হুঁশিয়ারি বিজেপিরও
বিরোধীদের যুক্তি, মোদী জমানায় মাত্র ২৬ শতাংশ বিল নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। ইউপিএ সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় জমানায় ৭১ ও ৬০ শতাংশ বিল সংসদীয় কমিটিতে গিয়েছিল। আজ রাজ্যসভার নতুন ডেপুটি চেয়ারম্যানের সম্মানে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুর প্রাতরাশে যোগ দেয়নি কংগ্রেস। এর পিছনেও তাড়াহুড়ো করে, কমিটিতে আলোচনা ছাড়াই বিল পাশ করানোর অভিযোগ প্রধান কারণ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy