আহত দমকল কর্মী বিশ্বজিৎ দেববর্মা। পরে মারা যান তিনি। নিজস্ব চিত্র.
রাজ্যের সব রিয়াং শরণার্থীকে শুধু কাঞ্চনপুর মহকুমায় পুনর্বাসন দেওয়ার উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি (জেএমসি)-র আন্দোলন চলছিলই। সেই আন্দোলনে রক্ত ঝরল আজ। ঘটল দু’জনের মৃত্যু। পানিসাগরে জেএমসি-র জাতীয় সড়ক অবরোধ চলার সময় টিএসআর জওয়ানের ছোড়া গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হন। আন্দোলনকারীদের হামলায় নিহত হন এক দমকলকর্মী। পুলিশ-টিএসআর এবং আন্দোলনকারী-সহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের জিবি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগরে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পানিসাগরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়ছে।
জেএমসি-র আহ্বায়ক সুশান্ত বড়ুয়া জানাচ্ছেন, আজ সকাল থেকে পানিসাগর, চামটিলা এবং পেচারথলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। তাদের গাড়িগুলি অবরোধস্থলে আসার সময় পুলিশ ভাঙচুর করে। শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে গুলি চালায় টিএসআর। দশদা-র বাসিন্দা, পেশায় কাঠমিস্ত্রি শ্রীকান্ত দাস(৪৫)-র বুকে এবং আর এক জনের পায়ে গুলি লাগে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা শ্রীকান্তকে মৃত ঘোষণা করেন। আরও কয়েক জনকে ধর্মনগর এবং আগরতলা জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য, অবরোধকারীরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছেন। বারবার বলা সত্বেও তাঁদের শান্ত করা যায়নি। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছিলেন বলে গুলি চালানো হয়েছিল। সংঘর্ষে আহত ২৩ জনের মধ্যে ১৪ জন শান্তিরক্ষার কাজে যুক্ত ছিলেন। দমকল দফতরের কর্মী বিশ্বজিৎ দেববর্মা গুরুতর আহত হন। তাঁকে আগরতলা জিবি হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
রাজ্য সরকার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছে এ দিনের ঘটনায়। রিপোর্ট দিতে হবে এক মাসের মধ্যে। মৃতের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও জখমদের চিকিৎসার খরচ দেবে রাজ্য সরকার।
বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপি এবং রাজ্য সরকার চায় না কোনও অংশের মানুষেরই স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হোক। আজকের ঘটনা অনভিপ্রেত।” তিনি জানিয়েছেন জেএমসি-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা এবং স্থানীয় বিধায়ক ভগবান দাস দীর্ঘ সময় বৈঠক করেছেন। জাতীয় সড়ক অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মতি জানিয়েছেন জেএমসি-র প্রতিনিধিরা। মূল সমস্যা সমাধানে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে মনে করেন নবেন্দু। সিপিএমের পশ্চিম জেলার সম্পাদক পবিত্র কর এ দিনের রক্তপাত ও প্রাণহানির জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, “ছ’দিন ধরে একটি মহকুমায় ধর্মঘট চলছে। রাজ্য সরকারের কোনও মন্ত্রীর কথা বলার সময় হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত বিভিন্ন উৎসব উদ্বোধন করতে ও ভাষণ দিতে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy