Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্যানসেলড চেকে প্রতারণা, মহিলার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল স্বামী-স্ত্রী!

শুরু হয় শিকারের খোঁজ। শিকার পেতে অবশ্য খুব একটা দেরিও হয়নি তাঁদের। পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা এক মহিলাকে তাঁদের ফাঁদে ফেলেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ১১:৪১
Share: Save:

বাস্তবের ‘বান্টি-বাবলি’র হদিশ পেল দিল্লি পুলিশ। দক্ষিণ দিল্লিতে এক মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

আপাতত শ্রীঘরে বাস্তবের ‘বান্টি’ দীপক অরোরা। যদিও তাঁর স্ত্রী শোভনার খোঁজ পায়নি পুলিশ। বাস্তবের এই ‘বান্টি-বাবলি’ উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা।

দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ শোভনা। তাঁর চিকিত্সার জন্য টাকাও প্রয়োজন। সেই টাকা জোগাড় করতে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন স্বামী-স্ত্রী মিলে। প্রতারণা করার রাস্তাও অবশ্য পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ‘এজেন্ট’ হিসেবে প্রতারণার যাত্রা শুরু হয় দু’জনের। এ কাজে স্ত্রী শোভনাকেই কাজে লাগানো শুরু করেন দীপক।

শুরু হয় শিকারের খোঁজ। শিকার পেতে অবশ্য খুব একটা দেরিও হয়নি তাঁদের। পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা এক মহিলাকে তাঁদের ফাঁদে ফেলেন। দীপক টোপ হিসেবে ব্যবহার করেন স্ত্রীকে। প্রতারিত মহিলা পুলিশের কাছে জানান, শোভনা নিজেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এজেন্ট হিসাবে পরিচয় দেন। কম সুদে তাঁকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। মহিলা আরও জানান, তাঁর ঋণের খুব একটা প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু তাঁকে এমন ভাবে বোঝানো হয়, যে তিনি বুঝতেই পারেননি প্রতারণার ফাঁদে পা দিতে চলেছেন।

প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে রাজি হয়ে যান ঋণ নেওয়ার জন্য। ১২ লক্ষ টাকা ঋণ, তা-ও আবার নামমাত্র সুদে! মহিলা রাজি হয়ে গেলে শোভনা তাঁকে সমস্ত নথিপত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে যেতে বলেন। সেই মতো নির্ধারিত দিন ও সময়ে শোভনার বাড়িতে হাজির হন মহিলা। তিনি তাঁর নথিপত্র শোভনার হাতে জমা দেন। এর পর একটা ক্যানসেলড চেক চাওয়া হয় তাঁর কাছে। তিনি সই করে চেকটা দিয়ে দেন। মহিলার বিশ্বাস অর্জনে তাঁর সামনেই চেকের নামের জায়গাটা পেন দিয়ে কেটে দেন শোভনা। এর পর মহিলা বাড়িতে ফিরে আসেন। আধ ঘণ্টা পরেই তাঁর মোবাইলে ব্যাঙ্ক থেকে একটা মেসেজ আসে। মহিলা দেখেন মেসেজে লেখা, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্যাঙ্কে ছোটেন। ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে চান, কী ভাবে এত টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হল! মহিলার দাবি, ব্যাঙ্ক থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁর সই করা চেক পাওয়ার পরই টাকা তুলে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মহিলা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ দীপককে গ্রেফতার করে। পশ্চিম দিল্লির জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক বিনয় কুমার জানান, প্রতারণার অর্ধেক টাকা শোভনার হাতে দিয়ে দীপক উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে চলে যান। শোভনা দিল্লির একটি হোটেলে থেকে ওই টাকা দিয়ে নিজের চিকিত্সা করাচ্ছিলেন। আর দীপক সাহারানপুরে গিয়ে আইপিএলের বেটিংয়ে টাকা লাগিয়েছিলেন আরও টাকা পাওয়ার আশায়। কিন্তু বাজিতে হারতে থাকেন। দীপককে গ্রেফতার করা হয়, তখন তাঁর কাছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা পড়ে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। দীপককে গ্রেফতার করলেও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE