রক্ষিবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা রুখতে এ বার নয়া প্রযুক্তি ব্যবহার করবে রেল। আজ দিল্লির একটি অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।
জিওস্পেশিয়াল নামে ওই প্রযুক্তির সাহায্যে বদল আনা হবে সিগন্যাল ব্যবস্থায়। রেলমন্ত্রী জানান, এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথাও বলেছেন রেল মন্ত্রকের কর্তারা।
রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, সারা দেশে প্রায় ১১ হাজার রক্ষিবিহীন লেভেল ক্রসিং রয়েছে। তার জেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশে এমনই একটি লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে স্কুলবাসের ধাক্কায় ১৭ জন পড়ুয়া মারা গিয়েছিল। রেলকর্তারা বলছেন, গোটা দেশে এমন উদাহরণ আরও অনেক। ২০০৫ সালে নাগপুর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এমনই একটি রক্ষিবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় ৫৫ জনের প্রাণ গিয়েছিল। রেলের একটি সূত্রের মতে, মোট দুর্ঘটনার ৫০ শতাংশেরও বেশি রক্ষিবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে ঘটে।
বস্তুত, রেল দুর্ঘটনা কমাতে বছর কয়েক আগে পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনিল কাকোদকরকে মাথায় রেখে একটি কমিটি গড়া হয়েছিল। দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রে সেই কমিটির অন্যতম সুপারিশ ছিল উন্নত প্রযুক্তির সিগন্যাল ব্যবস্থা গড়ে তোলা। যার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলেও কমিটি জানিয়েছিল। এ দিন রেলমন্ত্রী খরচের প্রসঙ্গ না তুললেও তাঁর নয়া প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা শুনে অনেকেই মনে করছেন, কাকোদকর কমিটির সেই সুপারিশের দিকেই হাঁটছে মোদী সরকার।
কী এই জিওস্পেশিয়াল প্রযুক্তি?
বিশেষজ্ঞরা জানান, এতে কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের নানা জায়গার ছবি তোলা এবং সেই সঙ্গে কম্পিউটার ও টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জুড়ে একটি মিশ্র প্রযুক্তি গড়ে তোলা হয়।
এ দিন দিল্লিতে দ্য এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনা চক্রে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন সুরেশ প্রভু। সেখানেই মধ্যাহ্নভোজের মাঝে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জিওস্পেশিয়াল প্রযুক্তির সাহায্যে আলোর সঙ্গে সঙ্গে যাতে শব্দেও সতর্কবার্তা দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করা হবে।” তবে রক্ষিবিহীন দুর্ঘটনা যে শুধু রেলের দায় নয়, তা-ও এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রভু। তিনি বলেন, এই ধরনের দুর্ঘটনাকে রেল-সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখা উচিত। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গাড়ি রেললাইনের উপরে উঠে আসে।
শুধু রক্ষিবিহীন লেভেল ক্রসিং নয়, রেললাইনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ কমানোর ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হচ্ছে বলে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “অ্যান্টি-কলিশন ডিভাইস বসানোর উপরেও এ বার জোর দেওয়া হবে।”
চলতি মাসের শেষেই রেল বাজেট হওয়ার কথা। অনেকেরই প্রশ্ন, এ ব্যাপারে কি যাত্রী-ভাড়া বৃদ্ধির পথে হাঁটবে নতুন সরকার?
বাজেট প্রসঙ্গ অবশ্য এ দিন সন্তর্পণেই এড়িয়ে গিয়েছেন রেলমন্ত্রী। বলেছেন, “এখন এ ব্যাপারে কোনও কথা বলাই উচিত নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy