লোকবলের অভাবের কথা জানিয়ে অসমে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত অতিরিক্ত মামলার দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছিল সিবিআই। তা অগ্রাহ্য করে আজ গৌহাটি হাইকোর্ট জানাল, প্রয়োজনে কর্মীসংখ্যা বাড়িয়েই সিবিআইকে ওই কাজ করতে হবে। অসমে শ’দুয়েক ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে দায়ের সমস্ত মামলার তদন্ত করুক সিবিআই-ই।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যে সারদা-কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ওই সংস্থাই। অসমে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত অধিকাংশ মামলার আইনজীবী দেবাশিস শূর গত ডিসেম্বরে আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন, টাকা লোপাটের তদন্তের দায়িত্ব পুরোপুরি সিবিআইকেই দেওয়া হোক। কারণ, রাজ্য পুলিশের তদন্তের গতি অত্যন্ত ধীর। অভিযুক্তরা নিশ্চিন্তে ঘুরছে। তাতে তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। দেবাশিসবাবু বলেন, “গত মাসের শুনানিতে উত্তর-পূর্বে নয়ছয় হওয়া টাকার আনুমানিক হিসেব আদালত জানতে চেয়েছিল। এ দিন ১৭৯টি সংস্থার লগ্নির তথ্য জমা দিয়েছি। যার পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা।” তিনি জানান, এর পরই প্রধান বিচারপতি শ্রীধর রাও ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার শইকিয়ার বেঞ্চ সমস্ত মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী প্রশান্তনারায়ণ চৌধুরী আদালতে জানান, এত গুলি মামলার তদন্ত চালানোর মতো লোকবল ও পরিকাঠামো সিবিআইয়ের নেই। কিন্তু বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, প্রয়োজনে লোকবল বৃদ্ধি করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়ুক সিবিআই। সিবিআই যদি সমস্ত মামলার তদন্তভার নিতে না চায়, তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে লিখিত ভাবে তা আদালতে জানাতে হবে।
রাজ্য সরকারের তরফে হাইকোর্টে জানানো হয়েছিল, পুলিশ, সিআইডি ও ‘ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনস্’ (ইকনমিক অফেন্সেস) মামলাগুলির তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে ১০৭টি চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ১৪টি মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি। আদালত জানিয়ে দেয়, এর পর ওই মামলাগুলিও দেখবে সিবিআই। চার্জশিট খতিয়ে দেখার পর প্রয়োজনে ফের তাঁরা তদন্ত শুরু করতে পারে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত বছর এপ্রিলে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত ১৫টি মামলার তদন্তভার সিবিআইকে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, সিবিআই দু’টি মামলা নিজেদের হাতে নেয়। গত বছর ডিসেম্বরে সারদার বিরুদ্ধে দায়ের দু’টি মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছিল সিবিআই।
প্রশাসনিক হিসেবে, গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানতকারী ও এজেন্টদের তরফে সারদা, জীবন সুরক্ষা, বাসিল, রোজ ভ্যালি-সহ রাজ্যে সক্রিয় বা সম্প্রতি বন্ধ হওয়া ১৭৯টি ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ২১২টি মামলা দায়ের করা হয়। ওই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
এ দিন কলকাতা ও ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় অর্থলগ্নি সংস্থা ‘আশা আগ্রো ইকুইপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর অফিস, কর্তাদের বাড়িতে হানা দেন সিবিআই তদন্তকারীরা। তল্লাশি চলে ম্যানেজিং ডিরেক্টর তরুণ কুমার বারুই ও চার ডিরেক্টরের বাড়িতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy