Advertisement
১১ মে ২০২৪

চন্দ্রযাত্রায় চমক কি অগস্টেই

বিজ্ঞানীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, যদি খুব তাড়াতাড়িও যাত্রা শুরু হয়, তা-ও সেপ্টেম্বরের আগে চাঁদে রওনা দিতে পারবে না ইসরো। অনেকে এই প্রশ্ন ও তুলছেন, এত বড় হোঁচট খেয়ে এত দ্রুত কি বাহুবলীকে যাত্রা করাবে ইসরো?

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শ্রীহরিকোটা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫৬
Share: Save:

তামাম ভারতবাসীর আপাতত প্রশ্ন একটাই। কবে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান-২?

হোয়্যাটসঅ্যাপে, ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ নিয়ে নানা রকম জল্পনা। তবে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ইসরোর কর্তারা। তাঁরা শুধু বলছেন, সব কিছু খতিয়ে দেখে ফের দিন ঘোষণা হবে।

ইসরোর একটি সূত্র বলছে, রকেট থেকে পুরো জ্বালানি বার করে, পুরো খোলনলচে খতিয়ে দেখে এবং প্রয়োজনীয় মেরামতি করতে হবে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করলেও সেই পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত দিন দশেক লাগবে। কিন্তু মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, দশ দিনে কাজ শেষ করলেও তড়িঘড়ি পাড়ি দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাতে গবেষণার উদ্দেশ্য সাধন হবে না।

কেন? কলকাতার এস এন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস-এর মহাকাশ বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তীর ব্যাখ্যা, পৃথিবীর ২৮ দিনে চাঁদের এক দিন হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন চাঁদে টানা সূর্যের আলো থাকে। পরের ১৪ দিন নিকষ অন্ধকার। ইসরোর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার বা রোবট-গাড়ি প্রজ্ঞান সৌরশক্তিতে চলবে। তাই টানা ১৪ দিন তারা কাজ করতে পারে এমন হিসেব কষেই ১৫ জুলাইকে বাছা হয়েছিল উৎক্ষেপণের জন্য। যাতে ৫৩-৫৪ দিন পরে বিক্রম তার গন্তব্যে এমন সময়ে পৌঁছয় যখন চাঁদে ভোরের আলোর ফুটছে। ৬ সেপ্টেম্বর রাতে পৌঁছলে ৭ সেপ্টেম্বর সূর্যের আলো ফোটার সময় থেকেই ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান কাজ করতে পারত। তাতে টানা ১৪ দিন অর্থাৎ চাঁদের একটি দিনের আলোর পুরো সুবিধা নিতে পারত ইসরো। সেই সূর্যের আলোর হিসেব করলে, চাঁদে দিন শুরু হবে ৭ অক্টোবর। সেই হিসেবে ৬ অক্টোবর রাতেই ভারতের দূতকে চাঁদে পা দিতে হবে। সেটা দুর্গাপুজোর অষ্টমী। সে দিন পৌঁছতে হলে পৃথিবী থেকে রওনা দিতে হবে ৫৩-৫৪ দিন আগে। ১৩-১৪ অগস্ট নাগাদ। অর্থাৎ লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী ভাষণের এক বা দু’দিন আগে।

বিজ্ঞানীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, যদি খুব তাড়াতাড়িও যাত্রা শুরু হয়, তা-ও সেপ্টেম্বরের আগে চাঁদে রওনা দিতে পারবে না ইসরো। অনেকে এই প্রশ্ন ও তুলছেন, এত বড় হোঁচট খেয়ে এত দ্রুত কি বাহুবলীকে যাত্রা করাবে ইসরো? নাকি রয়েসয়ে বড় লাফ দিতে চাইবেন বিজ্ঞানীরা? আপাতত এর কোনও উত্তর নেই।

ইসরোর বিজ্ঞানীদের দাবি, যে কোনও অভিযানেই এমন হতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারেরা দ্রুত ত্রুটি ধরতে পারায় রক্ষে। নয়তো বড় বিপদ ঘটত। প্রকল্পের খরচ ৯৭৮ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। উৎক্ষেপণের পরে বিপত্তি ঘটলে পুরো টাকাটাই জলে যেত। ইসরো সূত্রের খবর, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন গ্যাসকে অতি-কম তাপমাত্রায় তরলে পরিণত করা হয়। রবিবার রাতে শ্রীহরিকোটায় ওই অতিশীতল জ্বালানির ট্যাঙ্কেই সমস্যা দেখা গিয়েছিল। ট্যাঙ্কের ভিতরে উচ্চ চাপে রাখা হয় ওই জ্বালানি। কিন্তু ট্যাঙ্কের ভিতরে সেই চাপের সমস্যার ফলেই জ্বালানি বেরিয়ে আসছিল। রবিবার রাতে ইসরোর মুখপাত্র বি আর গুরুপ্রসাদ অবশ্য বলেন, ‘‘আমি এ সব কিছু জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ISRO Chandrayaan 2 Cryogenic Engine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE