Advertisement
০৭ মে ২০২৪

তিন দশক পরেও

আইসিসিআর-এ কর্মা। লিখছেন পিয়ালী দাসতিন দশক পেরিয়ে গেল ফিউশন ব্যান্ড ‘কর্মা’-র। সেই উপলক্ষেই আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সন্ধ্যা। ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের মেলবন্ধনে তৈরি সংস্থার নিজস্ব ঘরানার পরিবেশনে বেশ নতুনত্ব আছে। মনে রাখার মতো শুভেন চট্টোপাধ্যায়ের তালবাদ্যের উপস্থাপনা। তাঁর পরিবেশনায় বাদ্যন্ত্রের সমবেত ঝঙ্কারে সমগ্র প্রেক্ষাগৃহ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল মুগ্ধতার আবেশ। অনুষ্ঠানে এ দিন কার্তিক দাস বাউল-কে পাওয়া গেল চেনা মেজাজে।

ছবি: কবীর সৌরভ

ছবি: কবীর সৌরভ

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

তিন দশক পেরিয়ে গেল ফিউশন ব্যান্ড ‘কর্মা’-র। সেই উপলক্ষেই আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সন্ধ্যা। ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের মেলবন্ধনে তৈরি সংস্থার নিজস্ব ঘরানার পরিবেশনে বেশ নতুনত্ব আছে। মনে রাখার মতো শুভেন চট্টোপাধ্যায়ের তালবাদ্যের উপস্থাপনা। তাঁর পরিবেশনায় বাদ্যন্ত্রের সমবেত ঝঙ্কারে সমগ্র প্রেক্ষাগৃহ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল মুগ্ধতার আবেশ। অনুষ্ঠানে এ দিন কার্তিক দাস বাউল-কে পাওয়া গেল চেনা মেজাজে। গাইলেন ‘বেঁধেছ এমন ঘর’, ‘প্রেম রসিকা হব’ এক অন্য আঙ্গিকে। দীপান্বিতা পরিবেশন করলেন লোকগান ‘সাওন লাগো’। তবে তাঁর পরিবেশনে সঙ্গতের বাদ্যযন্ত্রের ধ্বনি কখনও ছাপিয়ে যাচ্ছিল কণ্ঠকে। রাঘব চট্টোপাধ্যায় রাগাশ্রয়ী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। জোজো-র কণ্ঠে ‘রঙ্গ সারি গুলাবি চুনরিয়া’ গানটি এ দিন অন্য মাত্রা পেয়েছে। এ দিনের শেষ নিবেদন ছিল রাঘব এবং জোজো-র যৌথ কণ্ঠে ‘ও মন মাঝিরে’ গানটি। যেটি সংস্থার নিজস্ব গায়কি আঙ্গিকে পরিবেশিত হয়।

অব কে শাওন...

গজল ও ঠুমরি শোনালেন সুস্মিতা গোস্বামী

ছাতুবাবু-লাটুবাবুর ঠাকুরবাড়িতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল এক শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর। নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পরে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আসরের কর্ণধার সন্দীপ দেব। অনুষ্ঠানের প্রথমেই ছিল শিশুশিল্পীদের কত্থক নৃত্য। এর পরে সুস্মিতা গোস্বামী রাগেশ্রী রাগে যথাক্রমে বিলম্বিত একতাল ও দ্রুত তিনতাল পরিবেশন করেন। তাঁর সুরেলা কন্ঠে রাগবিস্তার এক অন্য মাত্রা এনে দেয়। পরে তিনি মাঝ-খাম্বাজ রাগে ঠুমরি পরিবেশন করেন ‘অব কে শাওন ঘর আজা’। বেগম আখতারের এটি বিখ্যাত গান। তবলা সঙ্গতে ছিলেন সন্দীপ দেব। সব শেষে বেহালা বাজিয়ে শোনালেন সঞ্জয় ঘোষ। তবলায় ছিলেন সঞ্জীব রায় ও সৌমেন মুখোপাধ্যায়।

শুধু রবি নন

নজরুলতীর্থে ঠাকুরবাড়ির গান

রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, দাদা—দ্বিজেন্দ্রনাথ, সতেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, দিদি স্বর্ণকুমারী, ভ্রাতুস্পুত্র বলেন্দ্রনাথ বেশ কিছু গান রচনা করেছিলেন। এঁদের মধ্যে স্বর্ণকুমারীর গান সর্বাধিক- তিনশোরও বেশি। এঁদের গান সুরচিত অথচ তেমন প্রচারিত নয়। সম্প্রতি নজরুলতীর্থে ‘ঠাকুরবাড়ির গান ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে গান শোনালেন দেবারতি সোম, স্বপন সোম ও বৈতালিক শিল্পীগোষ্ঠী। দেবারতির কন্ঠে সত্যেন্দ্রনাথের ‘কেন ভোলো’, দিনেন্দ্রনাথের ‘পথপাশে মোর’, স্বপনের কণ্ঠে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ‘অন্তরতর অন্তরতম’, দ্বিজেন্দ্রনাথের ‘জাগো সকল অমৃতের’ কিংবা সমবেত কন্ঠে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ‘ধন্য তুমি ধন্য’ অনুষ্ঠানে এক অন্য আমেজ এনে দেয়। দ্বিতীয়ার্ধে ছিল রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন পর্যায়ের গান, যেগুলি বেশ উপভোগ্য বলা যায়। তবে মাঝে মধ্যে মাইক্রোফোন বেশ বিঘ্ন ঘটিয়েছে।

ফুল ফুটুক...

শরৎসদনে ‘আস্থায়ী’র অনুষ্ঠানে। লিখছেন পিনাকী চৌধুরী

বেহালা শরৎসদনে ‘আস্থায়ী’র অনুষ্ঠানে শুরুতেই সংস্থার খুদে ছাত্র-ছাত্রীরা আবৃত্তি শোনাল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য তমোঘ্না মিত্রর ‘ঠিকানা’ এবং সৌত্রিক মন্ডলের ‘বোম্বাগড়ের রাজা’। পরে বড়দের পাঠ করা তিনটি কবিতা শুনতে মন্দ লাগে না। তার মধ্যে ‘শঙ্খ’, ‘আগামী’ এবং ‘সব্যসাচী’।

দ্বিতীয় পর্বে ছিল সুদর্শনা ভট্টাচার্যের সঙ্গীত সহযোগে একক আবৃত্তি পাঠ। গান যখন বিভিন্ন কবিতার বিষয় হয়ে ওঠে, তাই নিয়েই এই উপস্থাপনা। রবীন্দ্রনাথের ‘যথা স্থান’, নজরুলের ‘গানের আড়ালে’, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক’, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের ‘কলাবতী আজও’ কবিতাগুলির পাঠ শিল্পীর কণ্ঠে অনন্য হয়ে ওঠে। শ্রোতারাও মুগ্ধ হন।

সব শেষে ছিল দুটি শ্রুতি নাটক। বনানী মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘আ মরি বাঙলা ভাষা’। অংশ নিয়েছিলেন অমলেন্দু ভট্টাচার্য এবং পাপিয়া অধিকারী। দু’জনের অভিনয়ই অনবদ্য। দ্বিতীয় শ্রুতিনাটক তৃপ্তি মিত্রর কাহিনি অবলম্বনে ‘অব্যক্ত’।

অংশগ্রহণে অমলেন্দু ভট্টাচার্য এবং রনিতা দাস মুখোপাধ্যায়। নাটকীয়তার বদলে আবেগ বেশি ফুটেছে।

সৃষ্টির কত রূপ

আমি সৃষ্টির সেই রূপ, কখনও জগতের স্রষ্টা। কখনও অসুর বিনাসিনী, আবার স্নেহময়ী মা। পুরুষের কাছে প্রেমময়ী, আমি সেই নারী। সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে শব্দতীর্থ আয়োজিত অনুষ্ঠানের ‘পৃথিবী’ আবৃত্তিটি দিয়ে শুরু। সুপর্ণা ঘোষ শোনালেন ‘ওগো মা ভুবনেশ্বরী’। পরে ঈশিতা দাস অধিকারী শোনালেন ‘বলো যদি মেঘ হই’, রথীন কর ‘আমি নাচনী’। নাচনীর আত্মকথা, জীবন যন্ত্রণা তুলে ধরলেন ঈশিতা। সুপর্ণা গাইলেন ‘এখন তোমার নাগর’। ঈশিতা শোনালেন, ‘ভোটার মেয়ের বারোমাস্যা’, ‘বুলবুলি’, ‘মণিপুরের মা’। তবে এ দিনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি ‘নির্ভয়ার প্রতি’ কবিতাটি। সঙ্গে গান ‘আগুনের পরশমণি’।

কাকলির বর্ষবরণ

শরৎচন্দ্রের বাসভবনে ‘কাকলি’-র আয়োজনে রজনীকান্তের গান শোনালেন প্রবীণ ও নবীন শিল্পীরা। ‘যদি কুমড়োর মতো’ হাসির গানটি শুনিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করে নিলেন প্রবীণ শিল্পী নিশীথ সাধু। এ দিন অনুষ্ঠানে কান্ত কবির গান শোনালেন সংস্থার প্রায় কুড়ি জন শিল্পী। প্রতিটি গানই সুগীত।

বাড়তি পাওয়া

মিনার্ভা থিয়েটারে রবীন্দ্রমেলায় নজর কাড়ে পঞ্চম বৈদিকের ‘স্ত্রীর পত্র’, পলি গুহ নির্দেশিত ‘অচলায়তন’ নৃত্যনাট্য। এ ছাড়াও গানে ছিলেন আশিস ভট্টাচার্য, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, রাজশ্রী ভট্টাচার্য, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত, শ্রেয়া গুহঠাকুরতা, দেবারতি সোম, অলক রায়চৌধুরি, স্বপন সোম প্রমুখ। বিজয়লক্ষ্মী বর্মন, জগন্নাথ ও উর্মিমালা বসুর বাচিক নিবেদনে ছিল স্বাদ বদল।

গানের সুরে

সম্প্রতি মধুসূদন মঞ্চে কসবা সঞ্চারি-র অনুষ্ঠানে তানিয়া দাস গাইলেন ‘পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে’। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে শিখা চৌধুরী গাইলেন ‘তুমি কিছু দিয়ে যাও’, দীপান্বিতা ভৌমিক ‘আমার দোসর যে জন’, কল্যাণ মান্ডি ‘আমার মনের কোণের বাইরে’। সব শেষে গাইলেন সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘আনন্দ ধারা বহিছে ভুবনে’। নৃত্যাংশে অঙ্কিতা, রিয়া, ঊষসী শ্রোতাদের নজড় কাড়ে। পরিচালনায় অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভাল লাগার গান

দক্ষিণ কলকাতার সাংস্কৃতিক চক্র-র অনুষ্ঠানে ভারতী চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় সমবেত সঙ্গীতটি বেশ মনোরম। পরে একক গান শোনালেন বিভিন্ন শিল্পীরা। আবৃত্তি পাঠে ছিলেন মৌ গুহ। ‘সুর ও তাল’ সংস্থার শিশু শিল্পীদের অভিনীত নাটক ‘ভূষণ্ডির মাঠ’ প্রশংসনীয়। দ্বিতীয় পর্বে ‘সৃজন সন্ধানী’-র আয়োজনে গান গাইলেন অভিজিৎ ঘোষ, সুতপা দত্ত রায় ও সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নৃত্যে ছিলেন সুমিতা ঘোষ। তবে অভিজিৎ-এর (এ নয়ন ভরি), সুমিতার (মাধবী রাতে মম),
সুতপার (আজ হৃদয়ে ভালবেসে) এ দিনের সেরা প্রাপ্তি।

দু’ দিন ধরে

ঐন্দ্রিলা জাতীয় সঙ্গীত অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে গান শোনালেন রাজেশ্বর ভট্টাচার্য, শুভমিতা, সৈকত মিত্র, অনুশীলা বসু, শংকর রায় প্রমুখ। দ্বিতীয় পর্বে দেবলীনা কুমার ও তাপস দেবনাথের নৃত্য নজর কাড়ে। আবৃত্তি ও কত্থকের কোলাজে দেবাশিস কুমার বসুর ‘ছুটি’ কবিতাটি অনবদ্য রূপ পায়।

আবারও তিনি

দীপালিকা-র নিবেদনে ছিল ‘কান্ত কবি’। শুরুতেই সমবেত সঙ্গীতে অংশ নিলেন অনিন্দিতা, মৌমিতা প্রমুখ। এর পর মূল অনুষ্ঠানের নাট্যাংশ পাঠে ছিলেন রজত সেনগুপ্ত, স্বর্ণাভ রায়, ডালিয়া মুখোপাধ্যায়, সুপর্ণা ঘোষ, অশোক ঘোষ প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন সুপর্ণা ঘোষ।

কথার সারথি

বাংলা অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত ‘সারথি’র আয়োজনে আবৃত্তি শোনালেন নাতাশা দাশগুপ্ত, শ্রীমন্তি দাশগুপ্ত ও ছন্দা রায়। নাতাশার কণ্ঠে ‘ভোরের পাখি’ ও ‘রোজগেরে গিন্নি’ ভাল লাগে। ছন্দার কণ্ঠে ‘মৃণালের পত্র’ ও শ্রীমন্তির কণ্ঠে ‘বিবাহ’ শ্রুতিসুখকর। সবশেষে ছিল পার্থ মুখোপাধ্যায়ের আবৃত্তি। অনন্য পাঠ, যা মুগ্ধ করে শ্রোতাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE