শৃন্নন্ত বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রাঃ’ — এই অখণ্ড বিশ্বে আমরা এক এবং এক সর্বশক্তিমানের সৃষ্ট অংশমাত্র। অবিনশ্বর আত্মা ও পঞ্চভূতের সম্মিলিত রূপ এই মানবশরীর যা পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে বিভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। নবজাতক পায় মাতৃস্নেহ, কৈশোরে খেলার ছলে বন্ধুত্ব ও যৌবনে সেই বন্ধুত্ব রূপান্তরিত হয় গভীর প্রণয়ে। কিন্তু কখনও কখনও এই গতিময়তার ছন্দপতন ঘটে। মানবজীবনকে গ্রাস করে লোভ, হিংসা ও ক্ষমতার মদমত্ততা। তবুও আমরা আশাবাদী যে একদিন ঈশ্বরের নামে, ধর্মের নামে এই ধ্বংসলীলার অবসান হবে, উপনিষদের এই বাণীটিকে মানুষ মর্মে উপলব্ধি করবে আর সেদিনই শুরু হবে অন্ধকার থেকে আলোর অভিমুখে তার চিরন্তন যাত্রা। যা তাকে উত্তরণের পথে নিয়ে যাবে। আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে নৃত্যগুরু উদয় শঙ্করের সুযোগ্যা কন্যা প্রখ্যাতা নৃত্যশিল্পী মমতাশঙ্করের সাম্প্রতিকতম প্রযোজনা ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’ এই বার্তাই বহন করে। একজন দায়িত্ববান শিল্পী হিসাবে তাঁর এরূপ ভাবনাকে সাধুবাদ। পঞ্চভূতের উপস্থিতির তারতম্যে মানুষের চরিত্রের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলিকে সুন্দর মুখজ ও শরীরী অভিব্যক্তির মাধ্যমে দর্শকের কাছে উপজীব্য করে তোলে মমতাশঙ্কর ডান্স সংস্থার সদস্যরা। বাৎসল্য রসে পূর্ণ মমতা শঙ্করের দক্ষ অভিনয় মন ছুঁয়ে যায়। কৈশোরকালে খেলা, ও খেলতে খেলতে যৌবনের প্রথম প্রেম উপলব্ধি করার অংশগুলিতে সহকারী শিল্পীরা এককথায় অনবদ্য। সর্বোপরি স্বজনহারা ব্যথায় ডুকরে কেঁদে ওঠা ও মৃত্যুমিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে দর্শকের উদ্দেশ্যে শিল্পী মমতাশঙ্করের প্রশ্ন — এই হিংস্রতা ভয়াবহ নাশকতার কি কোনও প্রয়োজন আছে যা শুধুই জীবনকে অন্ধকারময় করে তোলে, দৃশ্যটি কুর্নিশ করার মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy