Advertisement
০২ মে ২০২৪

অপরাজিতা

তৃপ্তি মিত্র। পৃথিবীতে ওঁর মাপের অভিনেত্রী কমই আছেন। অথচ আমৃত্যু কুকথা তাঁর পিছু ছাড়েনি। প্রয়াণের পঁচিশ বছরে বলছেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তগরদের শাড়ি পরে হুইল চেয়ারে বসে আছেন তৃপ্তিদি। খুব সেজেছেন। ভারী খুশি খুশি মুখ। কে বলবে, মারণরোগে ওঁর ভেতরটা তখন ক্ষয়ে ক্ষয়ে এতটুকু! গোলপার্কে শম্ভুদার বাড়ির বাইরের ঘরে আমরা ক’জন। মৃণালবাবু (সেন) তৃপ্তিদির হাতে কালিদাস সম্মান তুলে দিলেন। দুর্বল হাতটা দিয়ে ছুঁলেন শুধু। পাশেই দাঁড়িয়ে শাঁওলী। শম্ভুদা, আমি, অন্যরা একটু তফাতে। মৃণালবাবু শাঁওলীকে বললেন, “যাও, এ বার তোমার মাকে ভেতরের ঘরে পৌঁছে দাও। উনি ছুঁয়ে তো দেখেছেন, ব্যস তা হলেই হবে।”তৃপ্তিদির সারা মুখ জুড়ে তখনও হাসি লেগে আছে।

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৪ ০০:১৫
Share: Save:

গরদের শাড়ি পরে হুইল চেয়ারে বসে আছেন তৃপ্তিদি। খুব সেজেছেন। ভারী খুশি খুশি মুখ। কে বলবে, মারণরোগে ওঁর ভেতরটা তখন ক্ষয়ে ক্ষয়ে এতটুকু!

গোলপার্কে শম্ভুদার বাড়ির বাইরের ঘরে আমরা ক’জন। মৃণালবাবু (সেন) তৃপ্তিদির হাতে কালিদাস সম্মান তুলে দিলেন। দুর্বল হাতটা দিয়ে ছুঁলেন শুধু। পাশেই দাঁড়িয়ে শাঁওলী। শম্ভুদা, আমি, অন্যরা একটু তফাতে।

মৃণালবাবু শাঁওলীকে বললেন, “যাও, এ বার তোমার মাকে ভেতরের ঘরে পৌঁছে দাও। উনি ছুঁয়ে তো দেখেছেন, ব্যস তা হলেই হবে।”তৃপ্তিদির সারা মুখ জুড়ে তখনও হাসি লেগে আছে।

এর তো কয়েক দিন বাদেই চলে গিয়েছিলেন। আজও ভাবি ভেতরে ভেতরে কতটা জীবনীশক্তি থাকলে ওই চরম সময়েও অতটা জ্বলজ্বলে থাকা যায়!

তখন মধ্যপ্রদেশ সরকারের ‘কালিদাস সম্মান’-এর জুরি বোর্ডে ছিলাম আমি। সে বছর প্রাপকের নাম ঠিক করার আগে মনে হয়েছিল, এই মুহূর্তে তৃপ্তি মিত্রের চেয়ে যোগ্যতর আর কেউ হতে পারেন না। তাছাড়া সেই সম্মানের অর্থমূল্যও বেশ অনেকটা।

ভেবেছিলাম, সংসারের নিত্যদিনের খরচের পর ওই কঠিন রোগ সামলাতে যে ঝক্কি, তাতে হয়তো ওই অর্থ কিছুটা কাজে দেবে। তাছাড়া এ তো দয়া করা নয়, যোগ্যতার প্রতিদান। অথচ তৃপ্তিদির শরীরের কারণেই পুরস্কার নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরনোর কোনও উপায় নেই। ফলে ভাবলাম, কী আছে! পর্বতই না হয় মহম্মদের কাছে যাবে।

মধ্যপ্রদেশ সরকারের শিক্ষা-সংস্কৃতি সচিব অশোক বাজপেয়ী। ওঁকে বলতেই কাজ হল। ভোপাল থেকে চলে এসেছিলেন উনি। তার পরই গোলপার্কের বাড়িতে আমাদের যাওয়া।

মিত্র পরিবার

ততদিনে আমার সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক তিন দশকের বেশি, প্রায় চার দশক গড়িয়ে গিয়েছে। তার আগে থিয়েটারে যা দেখেছি, দেখেছি। কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ে না ঠিক কী ভাবে আলাপ হয়েছিল তৃপ্তিদির সঙ্গে।

‘বাংলা নাটমঞ্চ প্রতিষ্ঠা সমিতি’ তৈরির সময়ের কথা মনে পড়ে। ’৬৮ সালের কাছাকাছি। দু’চার দিন শম্ভুদার ১১এ নাসিরুদ্দিন শাহ রোডের বাড়িতে মিটিং। নাটমঞ্চ তৈরির জন্য টাকা তোলা। চার-পাঁচটা দল নিয়ে নাট্যোৎসব। এ সব করতে করতেই বোধহয় তৃপ্তি মিত্র আমার কাছে ‘তৃপ্তিদি’ হয়ে উঠেছিলেন।

থিয়েটারের মানুষ বলেই সবার সঙ্গে তো আর সম্পর্ক হয় না। উৎপলবাবুর (দত্ত) সঙ্গে যেমন আমার কোনও কালেই তেমন কিছু হয়নি। শোভাদির সঙ্গেও না। এমনকী শম্ভুদার সঙ্গে আদানপ্রদানটা ছিল সমীহজাগানো। তক্ক-টক্ক করতাম। সে তো স্বভাব বলে। কিন্তু শ্রদ্ধামিশ্রিত দূরত্ব একটা ছিলই।

তৃপ্তিদির বেলায় ওই বেড়াজালটাই ধুয়ে যেত। সব সময় মনে হত কেমন যেন হৃদয়বতী! মঞ্চে তো বটেই, তার বাইরেও তাই। ওঁর চোখে আমি জল দেখেছি। রাগ, দুঃখ, ভালবাসা, কৌতূহল, আবেগ সব পেয়েছি। বিপরীতে শম্ভুদা সব সময় ‘ইন্টেলেক্ট’-এর ওপর জোর দেওয়া একজন মানুষ। কঠোর। সেই কঠোরতা আবার একেক সময় আমাদের কাছে ভীতিপ্রদ হয়ে দাঁড়াত।

এমনিতে তৃপ্তিদিকে আমার বরাবরই মনে হত, ওঁর মতো একজন অভিনেত্রী সারা পৃথিবীতেই কম আছেন। ওই ‘রেঞ্জ’, ভাবুন তো, একদিকে রাজনন্দিনী, অন্য দিকে চাষির বৌ। একদিকে ‘রক্তকরবী’, ‘রাজা’, অন্যদিকে ‘ছেঁড়াতার’, ‘ফুলজান’। কিংবা ‘পুতুলখেলা’ বা ‘রাজা অয়দিপাউস’। একটার সঙ্গে আরেকটার ন্যূনতম কোনও মিল নেই, মঞ্চে তৃপ্তিদির প্রকাশভঙ্গিতেও তাই। আর এমন একটা চেহারা ছিল ওঁর, যে কোনও পোশাকও অদ্ভুতভাবে মানিয়ে যেত। জলে যেমন মাছ, থিয়েটারে তেমনই যেন তৃপ্তিদি।

‘রাজা’র সেই সুদর্শনা

একসঙ্গে একই শিল্পীর মধ্যে অত অসংখ্য রকমের থিয়েটারি উপাদান আমি সত্যিই বড় একটা দেখিনি। তিন অক্টেভে গলা খেলাতে পারতেন। তার সঙ্গে শরীরী অভিনয়। ‘রাজা’য় সুদর্শনা যখন দু’হাত ছড়িয়ে মঞ্চে দাঁড়াত, জাগতিক সব অনুভূতি শুষে নিত। বার বার বলব, শুধু অনুশীলন দিয়ে এই ক্ষমতা অর্জন করা যায় না।

এটা আরও বুঝেছিলাম, যখন ‘অবিরত চেনামুখ’ বলে একটা টেলিভিশন সিরিয়াল করছি। তৃপ্তিদিকে আমি অনুরোধ করেছিলাম অভিনয় করতে। মনে পড়ে, একজন দজ্জাল মায়ের অভিনয় করলেন। স্বাতী (স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত) হয়েছিল ওঁর মেয়ে।

মা একটা রকিং চেয়ারে বসে দুলে দুলে কড়া হুমকি দিয়ে মেয়ের ঘরদোরের কাজের তদারকি করতেন। একদিন সেই মায়ের মৃত্যু হল। মেয়ে তখন চেয়ারটার কাছে বসেই কুটনো কাটে। আর চেয়ার দুলে উঠলে সে চমকে চমকে ওঠে। এই বুঝি মায়ের হুঙ্কার ভেসে এল! দর্শক তাতে মজা পান।

চরিত্রটা করতে গিয়ে এমন একটা ‘আনডারস্কোরড্ কমিক’ বুনে দিয়েছিলেন তৃপ্তিদি, যে তাঁর অনুপস্থিতিও অদ্ভুত একটা হাস্যরসের আবছায়া ছবি ফুটিয়ে তুলত। এতটাই বড় মাপের অভিনেত্রী তৃপ্তিদি।

সহশিল্পীর প্রতি এত ‘কোঅপারেটিভ’ অভিনেত্রীও আমি ক’জনকে দেখেছি! রেডিয়োয় অনেক নাটক করেছি ওঁর সঙ্গে। বাঁশরী, প্রফুল্ল...। কত বার যে বলতাম, “তৃপ্তিদি এই জায়গাটা আপনি একটু এরকম করুন না, তা হলে আমার সুবিধে হয়।” কোনও ‘না’ নেই। মুহূর্তে করে দিতেন।

অথচ কী আশ্চর্য, এই মানুষটাই কি না তাঁর কৈশোরে ডাক্তার, প্রফেসর নয়তো সমাজসেবী হবে ভেবে তৈরি হচ্ছিল! এমনকী তাঁর মঞ্চে ওঠা নেহাতই পাকেচক্রে।

টাঙ্গন নদীর পারে ঠাকুরগাঁ ডিভিশনের মেয়ে। বাবা আশুতোষ ভাদুড়ি। পেশায় উকিল। মা শৈলবালা স্বদেশীতে উৎসাহী। তাঁদেরই নয় মেয়ে, এক ছেলের একজন তৃপ্তি। মাসতুতো ভাই বিজনের (ভট্টাচার্য) লেখা নাটকে হঠাৎই এক অভিনেত্রী উধাও হয়ে যাওয়াতে শেষ মুহূর্তে ধরেবেঁধে নামানো হয় কিশোরী তৃপ্তিকে। এর পর বলতে গেলে ওই মাসতুতো ভাইয়ের জোরাজুরিতেই ওঁর থিয়েটারে আসা।

কিন্তু থিয়েটারে তাঁর আগ্রহ কবে থেকে, এই কথাটা যখন জিজ্ঞেস করতাম, তৃপ্তিদি একটা দৃশ্যের কথা বার বার বলতেন। ১৯৪৩। মন্বন্তর। নিজের চোখে দেখেছিলেন নিকাশির পাইপ দিয়ে ফ্যান গড়াচ্ছে। আর গ্রামের লোকজন শহরে এসে চেটেপুটে সেই ফ্যান খাচ্ছে। তখনই ‘নবান্ন’, ‘প্রগতিশীল শিল্পী সংঘ’ আর তাঁর সেই বিজনদা। সব মিলিয়ে থিয়েটারকে উনি আর ছাড়তে পারলেন না।

‘নবান্ন’ দেখে খাজা আহম্মদ আব্বাস ওঁকে ‘ধরতি কে লাল’-এ নিয়েছেন, এর পর ডাক পেয়েছেন মহেশ কাউলের ‘গোপীনাথ’-এও। কিন্তু থিয়েটার তত দিনে ওঁকে কব্জা করে ফেলেছে। তারই মধ্যে তখন বোম্বে গিয়ে শম্ভু মিত্রের সঙ্গে আলাপ, বিয়ে। ‘বহুরূপী’র জন্ম। মঞ্চ ওঁকে পাকড়ে ধরল।

থিয়েটার করতে করতেই সংসার করেছেন। সংসার করতে করতে থিয়েটার। খুন্তি নাড়ার সময়ও হাতে স্ক্রিপ্ট নিয়ে সংলাপ মুখস্ত করেছেন।

‘বাকি ইতিহাস’-এ তিনটে মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন তৃপ্তিদি। স্বভাবতই প্রত্যেকের হাঁটাচলা, কথাবলা সব আলাদা। নাসিরুদ্দিন শাহ রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ‘বহুরূপী’-র রিহার্সালে যাওয়ার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেও এই ‘আলাদা’টা রপ্ত করতেন তিনি। তৃপ্তিদিকে দেখলে কেবলই মনে হত, ওঁর মধ্যে যেমন একটা কুমোর বাস করে, তেমনই এক তাল কাদাও। তাই কোনও কিছুই বোধহয় গড়ে নিতে অসুবিধে হত না।

এমন থিয়েটার নিবেদিত-প্রাণ মানুষটা যখন বাণিজ্যিক থিয়েটারে গেলেন, রে রে করে তেড়ে উঠলেন অনেকে। ভাবখানা এই, তৃপ্তিদি আপস করেছেন। তিনি ব্রতচ্যুত। অথচ আমি জানি, আমার মতো অনেকেই জানেন, ওটুকু না করলে তখন তাঁদের সংসার চলত না।

শম্ভুদা কোনও দিন চাকরি করেননি। একেবারে শেষ দিকে রবীন্দ্রভারতীর সময়টুকু বাদ দিলে, থিয়েটারই ছিল ওঁর প্রথম ও শেষ কথা। বইয়ের রয়্যালটি ইত্যাদিতে কতই বা আসত। সংসারটা চলত তৃপ্তিদি দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলেই। তাঁকে বাণিজ্যিক থিয়েটারে রাসবিহারী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছিল অনেকটা বাধ্যতা থেকেই। অথচ তার পরেও ওই সমালোচনা ওঁকে শুনতে হয়েছে। একদিন দুঃখ করে বলেছিলেন, “উনি (শম্ভুদা) রোজ এক টুকরো মাংস খান, লোকে কি জানে, সেই টাকাটা কোত্থেকে আসে?” আমার উত্তরটা হল, সেটা ওই ‘সেতু’র মতো থিয়েটার করেছেন বলেই।

স্তানিস্লাভস্কি একটা কথা বলে গেছেন, অভিনয় করতে গিয়ে নিজের স্বভাব, আচরণ, আদবকায়দা চরিত্রটার ওপর চাপিয়ে দিতে নেই। তৃপ্তিদি বোধহয় এর জলজ্যান্ত উদাহরণ। ‘উলুখাগড়া’য় শম্ভুদার মা হতেন, মঞ্চে তাঁর সেই অভিনয় দেখে না জানলে এক মুহূর্ত বোঝার উপায় ছিল না, জীবনের ক্ষেত্রে ওঁরা স্বামী-স্ত্রী। অথচ অমন অভিনয় দেখেও ওঁদের সম্পর্ক ঘিরে কী কুরুচিকর মন্তব্যই না হয়েছে!

যে কোনও পোশাকেই অনন্যা

একবার একটা ঘটনা নিয়ে অহেতুক জলঘোলা করা হল। ‘পুতুলখেলা’র মহলা। একটি আবৃত্তির দৃশ্যে শম্ভুদার অভিনয় দেখে তৃপ্তিদির মনে হয়েছিল, উনি এমন কিছু ভঙ্গি করছেন, যাতে তৃপ্তিদির অভিনয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাতে উনি অসম্ভব উত্তেজিত হয়ে যান। একটা চাবি নিয়ে আঙুলে করে ঘোরাচ্ছিলেন শম্ভুদা। আপত্তিটা সেটাতেই।

থিয়েটারে ‘সিরেনডেপিটি’ বলে একটা কথা খুব কাজ করে। একজন চরিত্রাভিনেতা প্রতি মুহূর্তে তাঁর চরিত্রটাকে নতুন নতুন করে আবিষ্কার করতে করতে চলেন। তাতে তাঁর ভঙ্গিও অনেক সময় পাল্টে পাল্টে যায়। বহিরঙ্গটা এক থাকে। প্রতিদিন রান্নাটা আলাদা হয়। স্বাদও। সেটাই হয়তো হয়েছিল শম্ভুদার ক্ষেত্রে। থিয়েটারের মানুষদের এটা অজানা থাকার কথা নয়, তা’ও জলঘোলা হল। ওঁদের সম্পর্ক ঘিরে যেটা বারবার ঘটেছে। তাতে ওঁদের তো যা হবার হয়েছে, থিয়েটারেরও কম ক্ষতি হয়নি। কাজের গুণবিচার থেকে ফোকাসটা সরে গিয়েছে। এক ধরনের অনৈতিক আলোচনা গুচ্ছের অশ্বডিম্ব প্রসব করেছে।

মানুষে-মানুষে সম্পর্কে অনেক যুক্তিহীন ব্যাপারস্যাপার থাকে। যাকে বলে ‘এলিমেন্ট অব অ্যাবসার্ডিটি’। সেগুলো বুঝে চলাই তো আধুনিকতা, ওঁদের বেলায় আশপাশের লোকজন কেন যে তা মেনে চললেন না, আজও বুঝিনি।

অথচ শেষজীবনে এই শম্ভুদাই তো এনে রাখলেন ওঁকে। দু’জনে দু’জনকে তখন চোখে হারাতেন। কোনও বাড়াবাড়ি নেই। ভিতরের ছটফটানি বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। শুধু দম বন্ধ করে এক প্রবীণ মানুষ তাঁর সব কষ্ট চেপে ধীরে ধীরে বহু কালের সঙ্গীকে নিভে যেতে দেখছেন, এটুকু অনুভব করা যেত শুধু। কই সে সব কথা তো কেউ বলেননি। খবরই বা রেখেছেন ক’জন!

অসম্ভব আবেগী ছিলেন তো! একেবারে শেষের দিকে একটি সাক্ষাৎকারে বললেন, “আবার যদি হারানো দিনে ফিরে যাই, তা হলে থিয়েটার আর করব না। আসলে আমি না বুঝে এখানে চলে এসেছিলাম।” — কী অসম্ভব জলঘোলা হল এই কথাটা নিয়েও! অথচ কে বলল, ওটা ছিল তাঁর সারা জীবনের একটা আপশোস? পরিতাপ? মুহূর্তের অভিমানতাড়িত কথাও তো হতে পারে। অথচ তাকে নিয়েও বাজার গরম করা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

দেখতে দেখতে পঁচিশটা বছর পার হয়ে গেল। চলে গেছেন তৃপ্তিদি। তবু নাটমঞ্চের মানুষরা জানেন, এখনও কী ভাবে তাঁর ছড়িয়ে রাখা মণিমুক্তো অন্ধকারেও আলো হয়ে জ্বলে। তিনি যে অপরাজিতা!

অনুলিখন: দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE