Advertisement
E-Paper

কখনও কবিতায়, কখনও গানে

সম্প্রতি সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে কবিতা ও গানে মাতিয়ে দিলেন শোভনসুন্দর বসু, লোপামুদ্রা মিত্র ও অমিতকুমার। সঞ্চালনায় ছিলেন মধুমন্তী মৈত্র। সেদিন বাইরে বৃষ্টি, ভিতরে শোভনসুন্দরের আবৃত্তির ব্যান্ড ‘বৃষ্টি’র ‘কবিতাধারার জলে’ এক অন্য অনুভূতি। শুরুতেই শোভন ও সঙ্গে পাঁচ জন সহশিল্পী। ‘ভারততীর্থ’ কবিতাটির আবৃত্তি আমরা শুনে এসেছি একই আঙ্গিকে বিভিন্ন কণ্ঠে।

শিখা বসু

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৪ ০০:৩৬

সম্প্রতি সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে কবিতা ও গানে মাতিয়ে দিলেন শোভনসুন্দর বসু, লোপামুদ্রা মিত্র ও অমিতকুমার। সঞ্চালনায় ছিলেন মধুমন্তী মৈত্র। সেদিন বাইরে বৃষ্টি, ভিতরে শোভনসুন্দরের আবৃত্তির ব্যান্ড ‘বৃষ্টি’র ‘কবিতাধারার জলে’ এক অন্য অনুভূতি। শুরুতেই শোভন ও সঙ্গে পাঁচ জন সহশিল্পী। ‘ভারততীর্থ’ কবিতাটির আবৃত্তি আমরা শুনে এসেছি একই আঙ্গিকে বিভিন্ন কণ্ঠে। কিন্তু এই কবিতা যে ৬ মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন এবং ছয়, ছয়, পাঁচ মাত্রায় ভেঙে দাদরা তালের সঙ্গে এর যে অপরূপ এক দ্যোতনা সৃষ্টি করা যায় তা এ দিন সুন্দর উপলব্ধি করা গেল। এর পর শোভন শোনালেন ‘দিনের আলো নিভে এল’। কার্তিক ঘোষের ‘তুমিও বলবে’ কবিতাটি ছোটদের ব্যাপারে বাবা-মায়ের কাছে এক শিক্ষণীয় পরামর্শ। হারিয়ে যাওয়া শৈশব-স্বপ্ন-বেদনার অসাধারণ অনুভব ফুটে উঠল শিল্পীর কণ্ঠে রতনতনু ঘাটির কবিতায়। সেই সুর-তাল-লয়-কণ্ঠ মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতাটিতেও। বেশ উপভোগ্য হয়েছে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও রামচন্দ্র পালের কবিতার কোলাজে, শোভন ও ‘বৃষ্টি’র উপস্থাপনায়।

এর পরে লোপামুদ্রা শুরু করলেন ‘আলোকেরই ঝর্নাধারায়’। পর পর অনেকগুলি গান। ‘মিলন হবে কতদিনে’, ‘ডাকছে আকাশ ডাকছে বাতাস’ প্রভৃতি গানগুলিতে সেই চেনা লোপা। শ্রোতাদের মন রাখতে তাকে গাইতেই হয় ‘হৃদমাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না’। উত্তাল প্রেক্ষাগৃহ। শিল্পীকে ছাড়তে নারাজ তাঁরা। শেষমেশ গাইতেই হল, ‘বেণীমাধব’, ‘বাংলা আমার সর্ষে ইলিশ’।

সব শেষে অমিতকুমার। সঙ্গে ব্যান্ড ‘অমৃত মজলিশ’। বহু দিন পরে কিশোরকুমারের গানগুলি অমিতকুমারের কণ্ঠে শুনতে মন্দ লাগল না। নিজের কয়েকটি আধুনিক গানও এ দিন গাইলেন তিনি। মন্দ নয়।

বিবেক বীণায়

বিবেকানন্দের প্রয়াণ দিবসে তারই প্রতিধ্বনি নাট্যগানে।

রচনা ও নির্দেশনায় দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

উনিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব। বণিকের মানদণ্ড বদলে গেল শাসকের রাজদণ্ডে। বাবু-কলকাতা হল ভারতের রাজধানী। তখনও বনেদি বাড়ির ছাদ-খিলানে ঝাড়বাতির রোশনাই। সেই কলকাতার উত্তরে যখন এক প্রান্তে আবির্ভাব রবীন্দ্রনাথের, তখন অন্য প্রান্তে নরেন্দ্রনাথ তথা বিবেকানন্দের। এই দুই মহাসাধকের জীবনসেতু কিন্তু সঙ্গীত তথা গান। রবীন্দ্রনাথ বহুচর্চিত হলেও বিবেকানন্দের গান, বিশেষ করে মঞ্চগান বা থিয়েটারের গানের প্রসঙ্গ অবহেলিতই রয়ে গেছে। আড়াল পড়ে গেছে বিস্মৃতির। অথচ তিনিই বলেন ‘ড্রামা অ্যান্ড মিউজিক আর দেমসেলভস হেল্ড টু বি রিলিজিয়ন’। নরেন্দ্র-অনুজ ভূপেন্দ্রনাথের বয়ানে, ‘পিতৃদেবের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন নরেন্দ্রনাথ। সঙ্গীতের তালিমের পাশাপাশি চোদ্দো বছরের কিশোর নরেন গড়ে তুললেন এক নাট্যদল। মঞ্চস্থ হল নাটক ‘মহন্তর এই কি কাজ!’ নাট্যের চাপল্য প্রকাশ পেল নেপথ্যগানে। নরেন গানে মাত করে দিলেন ‘আয় গো আয় মহন্তের তেল নিবি কে?’ সে সময় একাধিক মঞ্চে অভিনীত হল বঙ্কিমচন্দ্রের মৃণালিনী। নাট্য-নায়ক হেমচন্দ্র যে গানের দৌত্যে খুঁজে ফেরেন প্রণয়িণীকে সে গানই বিলেতে বসে একান্তে গেয়ে চলেন বিবেকানন্দ ‘সাধের তরণী আমার কে দিল তরঙ্গে’। গাইতেন গিরিশের নাটকেরও বহু গান। বিবেকানন্দ-গীত ‘বুদ্ধদেব চরিত’ নাটকের ‘জুড়াইতে চাই কোথায় জুড়াই’ প্রসঙ্গে ‘শ্রীম’ মহেন্দ্রনাথের অভিজ্ঞতা ‘সঙ্গীতকালে যেন এক বৈরাগ্যের হিল্লোল চারদিকে প্রবাহিত হইত’। এমনি বহু অজানিত বা বিস্মৃত মঞ্চগানের ছড়ানো ছেটানো তথ্য আর ইতিহাসকে একত্র করে গড়ে উঠবে জুলাইতে অ্যাকাডেমি থিয়েটারের প্রযোজনা ‘বিবেক-বীণায় নাট্য-সঙ্গীত’।

ধায় যেন মোর

সম্প্রতি জি ডি বিড়লা সভাঘরে শ্রুতিবৃত্ত ও পিকাসোর যৌথ নিবেদনে ইন্দ্রাণী সেন, শ্রাবণী সেন, প্রবুদ্ধ রাহা, তন্ময় মুখোপাধ্যায় ও আরও অনেকে শোনালেন বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত। ইন্দ্রাণী সেন গাইলেন ‘কাঁদালে তুমি মোরে’। তাঁর সমৃদ্ধ কণ্ঠ গানে নিয়ে আসে এক অনন্য মাত্রা। প্রবুদ্ধ রাহার কণ্ঠে ‘ধায় যেন মোর’ ভাল লাগল। তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের পরিবেশন ‘আমি হেথায় থাকি শুধু’। তাঁর কণ্ঠের ঋজুতা, মাধুর্য ও ভাবের সমন্বয় গানের অবয়বটিকে মূর্ত করে তোলে।

অন্য মাত্রা আনে

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘আবৃত্তি উত্তম’-এর দু’ দিনের আবৃত্তির আসর। শুরুতেই অর্ণব চক্রবর্তীর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব বসু ও বিমলচন্দ্র ঘোষের কবিতা নজর কাড়ে। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে উৎপল কুণ্ডু, বিজয়লক্ষী বর্মন, সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীমন্তী দাশগুপ্ত ও সায়ন্তনী মণ্ডল প্রমুখের কবিতা অনুষ্ঠানটির এক অন্য অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন সুপ্রকাশ মুখোপাধ্যায় এবং ঐশিক দাশগুপ্ত।

shikha basu debjit bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy