Advertisement
E-Paper

প্রশ্ন অনেক রয়ে গেল

দু’দিনের ‘দর্পণী’র অনুষ্ঠানে। লিখছেন বারীন মজুমদার।দু’দিনের ‘দর্পণী’র অনুষ্ঠানে। লিখছেন বারীন মজুমদার।

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ১৬:৫৫

ঠিক মতো সংমিশ্রণ করতে না পারলে ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যের সঙ্গে ‘পরিশোধ’ কবিতার সংযোজনে নাটকের গতি যে বাড়ে না বরং প্রতিরুদ্ধ হয়। তারই একটি নিদর্শন দেখা গেল সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে। পরিকল্পনা, পরিচালনা ও বজ্রসেনের ভূমিকায় ছিলেন অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়। যুগের বিবর্তনের সঙ্গেই পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রশংসনীয়। কিন্তু দৃশ্যকল্পনার অবিমিশ্রকারিতা প্রকট হয়েছে বারেবারেই। যেমন শুরুতেই ‘বাজে গুরু গুরু’ সহকারে প্রদীপ হাতে শ্যামার প্রবেশ। তারপরেই সখীদের লোকনৃত্য। কেন? আবার কারারুদ্ধ বজ্রসেন যখন গায়ের কালো কাপড় উন্মোচন করেন দেখা যায় তাঁর পোশাক পরিবর্তন হয়ে গেছে। অনেক ‘কেন’-র প্রশ্ন থেকেই যায়। পরবর্তী পর্যায়ে দেখা গেল শ্যামা (সৌমিলি বিশ্বাস) ও বজ্রসেনের মুখাবয়বে ফুটে ওঠে না কোন মন্ত্রবলে শ্যামা তাকে মুক্ত করেছে তার প্রশ্নচিহ্ন। তবে নৃত্য নির্মাণ ও উভয়েরই নৃত্য যথেষ্ট নজর কেড়েছে। যেমন নজর কেড়েছেন উত্তীয় চরিত্রে রক্তিম গোস্বামী। গানে, কাব্যে ও নাট্যে শ্রাবণী সেন, প্রমিত সেন, শ্রীলা মজুমদার ও সব্যসাচী চক্রবর্তী প্রত্যেকেই নিজেদের সুনাম বজায় রেখেছেন।

প্রথম পর্বে দর্পণীর ছাত্রীদের দ্বারা আয়োজিত নৃত্যানুষ্ঠানের পর রায়া ভট্টাচার্য ও বাংলাদেশের সামিয়ুল ইসলাম ‘তোমার অসীমে’ শীর্ষক একটি পাঠের অনুষ্ঠান করলেন। বিশেষ ভাবনা ভিত্তিক বা বিষয় কেন্দ্রিক নয় অনুষ্ঠানটি। এক মহাকবিকে শ্রদ্ধার্ঘ্য। রায়া বরাবরের মতো এ দিনও চমৎকার ও প্রশংসনীয়। তুলনায় সামিয়ুলের কণ্ঠটি ভাল হলেও আরও পরিমিতিবোধের প্রয়োজন।

দ্বিতীয় দিনে অর্ণবের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ‘করুণাধারায় এসো’ শীর্ষক একটি নৃত্যগীতি আলেখ্য হল ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারে। নাচে অর্ণব, গানে স্বপ্নিল, সজীব ও কবিতায় সামিয়ুল ইসলাম তিন জনে মিলেই মঞ্চে একসঙ্গে অনুষ্ঠানটি পরিবেশন করলেন। সঙ্গে নাচে ছিলেন সৌমিলি বিশ্বাস ও ইংরেজি গীতাঞ্জলি পাঠে বরুণ চন্দ। শিল্পীরা সফলও হয়েছেন।

যথাযথ নয়, তবুও সুন্দর

রামকৃষ্ণ মিশন-এ সুপ্রতীকের একক শুনলেন বারীন মজুমদার।

রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার ও ভাবনার উদ্যোগে সুপ্রতীক দাসের একক রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠান হল ‘রাগ অনুরাগে রবীন্দ্রনাথ’। শুরু থেকে শেষ অবধি সুপ্রতীক যে সব গান নির্বাচন করেছিলেন, সেখানে তাঁর কণ্ঠ অবলীলায় পঞ্চমে চলে যায় কিন্তু কিছু কিছু গানে ভাবের ঘাটতি থেকে যায়। যেমন ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে’ গানটিতে ‘দেখা দেবে বলে’ প্রচলিত সুরের বাইরে মনে হয়। আবার ওই একই গানে সারেঙ্গির প্রয়োগ যথাযথ হয়নি। তবুও সুপ্রতীক অধিকাংশ গানেই প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। বিশেষ করে ‘নিভৃত প্রাণের দেবতা’, ‘যে রাতে মোর’, গভীর রজনী নামিল হৃদয়ে’ গানে শ্রবণ কাড়েন। কিন্তু তবলায় পার্থ মুখোপাধ্যায় ও কীবোর্ডে অয়ন মুখোপাধ্যায় অতিরিক্ত উচ্চকিত ও অনেক সময়ই না বুঝে সঙ্গত করায় গানগুলি সর্বাঙ্গসুন্দর হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয়ার্ধে তিনি নিবেদন করলেন রাগ দেশ, মিঞা মল্লার, খাম্বাজ, মালকোষ ও ভৈরবী রাগের ছোট বন্দিশ ও রাগগুলিতে আধারিত একটি করে রবীন্দ্রসঙ্গীত। এই পর্বটি খুবই শ্রুতিমধুর হয়েছে। বিশেষ করে খাম্বাজ ঠুমরি ‘কোন গলি গয়ে শাম’ ও মিঞা মল্লারে ‘বরষন লাগিরে’ বেশ স্মরণীয়।

রাধা চলেছে...

সম্প্রতি বিভিন্ন আঙ্গিকের গান শোনালেন সুমিত্রা রায় ও মালবিকা সুর। সুমিত্রার কণ্ঠে অপ্রচলিত গান ‘চলে রাই বিনোদিনী’ ভূয়সী প্রশংসা আদায় করে নেয়। অন্যান্য গানগুলির মধ্যে ছিল ‘রাধা চলেছে মুখটি লুকায়ে’, ‘ভালবাসি গো কেন’ প্রভৃতি। মালবিকা এ দিন নির্বাচন করেছিলেন নস্টালজিক গান। ‘তখন তোমার একুশ বছর’, ‘ঘুম ঘুম চাঁদ’ ছাড়াও আরও পাঁচটি গান শোনালেন। শুরুতে সংস্থার শিশুশিল্পীদের সমবেত গীতিনাট্যটি বেশ মনে দাগ কাটে।

এ মণিহার আমায়

সম্প্রতি সূর্য সেন মঞ্চে ‘ইমন’ আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রবীণ শিল্পী রামকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় শোনালেন রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘এ মণিহার আমায়’। এখনও কত পরিণত গলা। এর পরে অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন দীপান্বিতা গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ প্রমুখ। বক্তব্য রাখেন সুপ্রকাশ চাকী, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত।

রাঙিয়ে দিয়ে যাও

সম্প্রতি দয়ানন্দ হলে ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের শুরুতেই নানা রাগ রূপায়ণে ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী সেতার বাজিয়ে শোনালেন। অনায়াস দক্ষতায় খুব কম সময়ের ব্যাপ্তিতে বিভিন্ন তালে বাজিয়েছেন গানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বৈচিত্রময় গৎ-তান-বিস্তার ও ঝালা। তবলা সহযোগিতায় সৌমেন সরকার সুখশ্রাব্য। পরবর্তী পর্যায়ে ভাল লাগে মঞ্জুষা চক্রবর্তী ও সুনন্দিত চৌধুরীর গান। এ ছাড়াও অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন রঘুনাথ কর্মকার, সোনালী সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানে শান্তা চৌধুরী ও নরেশ নন্দীর ভাষ্যপাঠ যথাযথ। শেষে ছিল রণদীপ ঘটকের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য।

music barin majumder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy