All need to know about Amarjeet Sada, believed to be youngest serial killer of world dgtl
Youngest Serial Killer
দুই বোনকে নৃশংস ভাবে খুন, মাটিতে পুঁতে দেয় প্রতিবেশীকে! ভয় ধরাবে বিশ্বের কনিষ্ঠতম সিরিয়াল কিলার অমরজিতের কাহিনি
অমরজিৎ পরিচিতি পেয়েছিল পৃথিবীর কনিষ্ঠতম সিরিয়াল কিলার হিসাবে। তার প্রথম শিকার ছিল খুড়তুতো বোন। কিন্তু ধরা না পড়ার কারণে একের পর এক অপরাধ চালিয়ে গিয়েছিল অমরজিৎ।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
জ্যাক দ্য রিপার থেকে শুরু করে জেফ্রি ডাহমার, রমন রাঘব, আক্কু যাদব— পৃথিবীর অপরাধের ইতিহাসে বার বার উঠে এসেছে এই সব ভয়ানক সিরিয়াল কিলারদের নাম। তবে বিহারের অমরজিৎ সদা ছিল এঁদের থেকে একটু হলেও আলাদা। মাত্র সাত বছর বয়সে একের পর এক খুন করা শুরু করেছিল সে। ধরাও পড়েছিল।
০২১৯
কথায় বলে শিশু-মন মানেই নিষ্পাপ। কিন্তু অমরজিৎ আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতো ছিল না! সাত বছর বয়সেই একের পর এক খুন করে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল দেশের এই খুদে।
০৩১৯
অমরজিৎ পরিচিতি পেয়েছিল পৃথিবীর কনিষ্ঠতম সিরিয়াল কিলার হিসাবে। তার প্রথম শিকার ছিল খুড়তুতো বোন। কিন্তু ধরা না পড়ার কারণে একের পর এক অপরাধ চালিয়ে গিয়েছিল অমরজিৎ।
০৪১৯
অমরজিৎকে ছোটবেলায় দেখেছিল এমন অনেকেরই মত, বালক অমরজিতের তীক্ষ্ণ চোখের চাহনি এতটাই ঠান্ডা ছিল যে অনেক বড় মানুষের মধ্যেও তা শিহরন জাগাত। দেশের সবচেয়ে ছোট সিরিয়াল কিলার অমরজিতের কাহিনি যে কোনও বড় অপরাধকেও হার মানাবে।
০৫১৯
১৯৯৮ সালে বিহারের বেগুসরাইয়ে জন্ম অমরজিতের। পরে তার পরিবার চলে যায় মুশাহারিতে। অমরজিৎ ছিল গরিব পরিবারের সন্তান। ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ইন্ডিয়ান সাইকোলজি’তে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, ছোটবেলা থেকেই অবহেলিত ছিলেন অমরজিৎ।
০৬১৯
আবার অনেকের দাবি, অমরজিতের বাবার মদের আসক্তি ছিল। মদ খেয়ে ছোট্ট অমরজিৎকে মারধরও করতেন তিনি। শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। এর ফলে অমরজিতের মানসিক সুস্থতা ধীরে ধীরে বিগড়োতে থাকে।
০৭১৯
সাত বছর বয়সে প্রথম খুনের অভিযোগ উঠেছিল অমরজিতের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ন’মাসের খুড়তুতো বোনকে মারধর করেছিল অমরজিৎ। বোনের চিৎকার-কান্নায় হাসিতে ফেটে পড়ে সে। পরে খুড়তুতো বোনকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে।
০৮১৯
পরিবারের সদস্যেরা বাড়ি ফিরে তাকে বোনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সত্যি কথা স্বীকার করে অমরজিৎ। তাকে ব্যাপক মারধর করা হয় বাড়িতে। তবে, তার বাবা-মা পুলিশে খবর দেননি। অমরজিতের বাবার অনুরোধে তার কাকাও বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।
০৯১৯
এর পর অমরজিতের যখন ১০ বছর বয়স, সে সময় নিজেরই আট মাসের বোনকে খুন করেছিল সে। কিন্তু তার পরেও তার অপরাধ চাপা থেকে গিয়েছিল। ২০০৬ ও ২০০৭ সালের মধ্যে তিন শিশুকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল অমরজিৎ।
১০১৯
অমরজিতের হাতে শেষ খুন হয়েছিল খুশবু নামে গ্রামেরই ছ’মাসের শিশু। মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল তাকে। খুশবুর মা জানিয়েছিলেন, ঘরে তাঁর মেয়ে ঘুমোচ্ছিল। কাজের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে দেখেন মেয়ে নেই।
১১১৯
গ্রাম জুড়ে খোঁজ-খোঁজ রব উঠলে খুশবুর সন্ধান নিজেই জানায় অমরজিৎ। গ্রামবাসীদের জানায়, তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে সে পুঁতে দিয়েছে। এর পর গ্রামবাসীরা অমরজিতের এই ভয়াল কীর্তির কথা পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে আটক করে অমরজিৎকে।
জানা যায়, খুনের ঘটনায় প্রথমে কোনও ভাবেই সন্দেহের তালিকায় ছিল না অমরজিৎ। এমনকি, সাত বছরের শিশু যে খুন করতে পারে, তা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি পুলিশকর্মীরা।
১৪১৯
অমরজিৎকে পাকড়াও করে জেরা করা হয়। সে সময় খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছিল সে, যা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছিল পুলিশমহল। জেরার সময় পুলিশ যখন অমরজিৎকে জিজ্ঞাসা করে, কেন সে ওই অপরাধগুলি করল, জবাবে অমরজিৎ হেসে বলেছিল, ‘‘আমার খিদে পেয়েছে। আমাকে খেতে দিন।’’ এর পর তাকে বিস্কুট দেন পুলিশকর্মীরা।
১৫১৯
বিস্কুট খেতে খেতে অমরজিৎ জানিয়েছিল, খুশবুকে প্রথমে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে মুখে মারে সে। যত ক্ষণ না মৃত্যু হচ্ছে, তত ক্ষণ ইট দিয়ে মারতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দেহটি মাটিতে পুঁতে পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়।
১৬১৯
এর পর বাকি খুনের কথাও নাকি স্বীকার করে নিয়েছিল অমরজিৎ। তদন্তে উঠে আসে, এক বছরের কম বয়সি শিশুদেরই নিশানা করত সে। সিরিয়াল কিলার তকমা জোটে তার কপালে।
১৭১৯
এর পর অমরজিৎকে আদালতে তোলা হয়েছিল। কিন্তু তার বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায়, একটি সংশোধনাগার হোমে পাঠানো হয় তাকে।
১৮১৯
২০০৭ সালে এক মনোবিজ্ঞানী জানান, অন্যকে আঘাত করে আনন্দ পায় অমরজিৎ। ঠিক-ভুলের বোধ নেই তার। সে সময় বিদেশি অনেক মনোবিজ্ঞানীরও চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে অমরজিৎ।
১৯১৯
২০১৬ সালে ১৮তম জন্মদিনে অমরজিৎকে মুক্তি দেওয়া হয়। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৩০। কিন্তু ছাড়া পাওয়ার পর সে কোথায় আছে, তা কেউ জানে না।