All need to know about killing of Japanese Girl Junko Furuta dgtl
Junko Furuta
৪০ দিন ধরে ৪০০ বারের বেশি ধর্ষণ! পুড়িয়ে দেওয়া হয় পা-যৌনাঙ্গ, খাওয়ানো হয় প্রস্রাব, ভয় ধরাবে জুনকো ফুরুতার কাহিনি
১৯৮৮ সালের ঘটনা। জাপানের সাইতামা শহরের মিসাতো এলাকার বাসিন্দা ছিল জুনকো। পড়াশোনায় যেমন চৌখস, তেমনই সুন্দরী। পাড়া থেকে স্কুল— সকলে একডাকে চিনত জুনকোকে।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৫ ১৪:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
বছরখানেক আগের ঘটনা। আরজি করের তরুণী চিকিৎসককে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় শিউরে উঠেছিলেন রাজ্যবাসী। উত্তাল হয়েছিল দেশ। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছিল বিদেশেও। ‘নির্যাতিতার বিচার চাই’— দাবি তুলে রাস্তায় নেমেছিলেন হাজারো মানুষ। লেখালিখিও হচ্ছিল বিস্তর।
০২২৩
তবে এ রকম নৃশংস ঘটনার সাক্ষী আগেও হয়েছে মানুষ। লালসার শিকার হয়েছেন মেয়েরা। এর মধ্যে কিছু ঘটনার কথা অনেকেই জানেন না। সেই ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম জুনকো ফুরোতা ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ড।
০৩২৩
প্রায় ৪০ দিন ধরে গণধর্ষণ করা হয়েছিল জুনকোকে। ১৭ বছরের কিশোরীকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল প্রায় ১০০ জনের বিরুদ্ধে। সঙ্গে চলেছিল অমানুষিক অত্যাচার।
০৪২৩
১৯৮৮ সালের ঘটনা। জাপানের সাইতামা শহরের মিসাতো এলাকার বাসিন্দা ছিল জুনকো। পড়াশোনায় যেমন চৌকস, তেমনই সুন্দরী। পাড়া থেকে স্কুল— সকলে একডাকে চিনত জুনকোকে।
০৫২৩
ভ্রমণের শখ ছিল জুনকোর। চাইত, পড়াশোনা শেষ করে নিজের টাকায় ঘুরতে। আর সে কারণে পড়াশোনা করতে করতেই চাকরি শুরু করে সে। সব কিছু ঠিকই চলছিল জুনকোর জীবনে। কিন্তু হঠাৎই তার জীবনে আসে অন্ধকার সেই রাত।
০৬২৩
১৯৮৮ সালের ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা। মিয়ানো এবং মিনাতো নামে দুই তরুণ স্থানীয় মহিলাদের লুটপাট এবং উত্ত্যক্ত করার উদ্দেশ্যে বাইকে করে মিসাতোর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সেই সময়ই তাদের নজরে পড়ে জুনকো। সাইকেলে চড়ে কাজ থেকে ফিরছিল সে।
০৭২৩
মিয়ানোর কথামতো মিনাতো লাথি মারে জুনকোর সাইকেলে। মাটিতে পড়ে যায় সে। মিনাতো ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কাছেই লুকিয়ে ছিল মিয়ানো। জুনকোকে সাহায্যের ভান করে এগিয়ে যায় সে।
০৮২৩
জুনকোকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় মিয়ানো। জুনকোর বিশ্বাসও অর্জন করে। এর পর তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে একটি গুদামে নিয়ে যায়। তার পরেই মুখোশ খোলে মিয়ানো। জুনকোকে হুমকি দেয়, তার নির্দেশ না মানলে চরম ক্ষতি হয়ে যাবে। নির্দেশ মানলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
০৯২৩
প্রথমে জুনকোকে দিয়ে বাড়িতে ফোন করায় মিয়ানো। পরিবারের সদস্যদের জানাতে বলে যে, সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে এবং তাকে যেন খোঁজার চেষ্টা না করা হয়। ভয় পেয়ে মিয়ানোর নির্দেশ মেনে নেয় জুনকো। তার পরেই শুরু হয় নির্মম অত্যাচার।
১০২৩
ওই ফাঁকা গুদামে প্রথমে জুনকোকে ধর্ষণ করে মিয়ানো এবং তার কয়েক জন সঙ্গী। দিনের পর দিন আটকে রাখা হয় তাকে।
১১২৩
এর পর একে একে মিয়ানোর আরও সঙ্গী আসতে থাকে মিসাতো এলাকার ওই পরিত্যক্ত গুদামে। গণধর্ষণের শিকার হয় জুনকো। জুনকোর উপর অত্যাচার চালানো সকলেই ছিল ১৮-১৯ বছর বয়সি তরুণ।
১২২৩
এক দিন মিয়ানোর এক সঙ্গী জুনকোকে তার বাড়িতেও নিয়ে যায়। বাড়িতে বান্ধবী হিসাবে পরিচয় দিয়ে জুনকোকে শোষণ করতে থাকে সে। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হওয়ায় আবার ওই গুদামে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
১৩২৩
তবে তত দিনে জুনকোর শরীরে শক্তি প্রায় নেই। হাঁটাচলার ক্ষমতাও হারিয়েছে সে। তার উপর অত্যাচার আরও বাড়ে। জোর করে আরশোলা খাওয়ানো শুরু হয় তাকে। জলের বদলে পান করতে দেওয়া হয় প্রস্রাব।
১৪২৩
মদ খেতে এবং ধূমপান করতেও বাধ্য করা হয় জুনকোকে। পোশাক ছাড়া ছাদে ঘুমোতেও বাধ্য করা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, সারা শরীরে সিগারেটের ছেঁকা দিয়ে তাকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা অপরাধীদের কাছে হয়ে উঠেছিল ‘বিনোদন’।
১৫২৩
জুনকো যাতে পালাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে তার গোড়ালি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল জানুও।
১৬২৩
এর মধ্যেই এক অপরাধী ‘মজা’ করার জন্য জুনকোর যৌনাঙ্গ এবং পায়ুতে ধারালো অস্ত্র ঢুকিয়ে দেয়। যৌনাঙ্গ পুড়িয়েও দেওয়া হয়। কিছু দিন পর কিশোরীর দুর্বল শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে।
১৭২৩
জুনকোর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, তার শরীরের ক্ষত থেকে পুঁজ বার হতে শুরু হয়। দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। নিষ্ঠুরতায় মত্ত তরুণদের কাছে পাগলের মতো মৃত্যুভিক্ষা চাইতে থাকে সে। কিন্তু তা-ও মেলেনি।
১৮২৩
গুদামের এক কোণে ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছিল জুনকোকে। তার সারা শরীরে পোকামাকড় চড়তে শুরু করেছিল। কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়েছিল সে। সারা ডিসেম্বর ধরে অত্যাচার চলেছিল জুনকোর উপর।
১৯২৩
বন্দি হওয়ার প্রায় ৪০ দিন পর নরকযন্ত্রণা থেকে ‘মুক্তি’ পেয়েছিল জুনকো। তাকে বন্দি করে রাখা মিয়ানো জুয়ায় হেরে মত্ত অবস্থায় ওই গুদামে আসে। জুয়ায় হারার রাগ গিয়ে পড়ে জুনকোর মৃতপ্রায় শরীরে। লাঠি দিয়ে প্রচণ্ড মারধর করা হয় তাকে। চোখে গরম মোম ঢেলে দেওয়া হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় তার শরীরে। মৃত্যু হয় কিশোরীর।
২০২৩
জুনকোর মৃত্যুর পর তার দেহ প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে একটি ড্রামে ঢুকিয়ে দেয় অপরাধীরা। এর পর সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয় ড্রামটি। মোট ৪০ দিন নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছিল জুনকোকে। মনে করা হয়, ওই ৪০ দিনে শতাধিক পুরুষ ৪০০ বারেরও বেশি ধর্ষণ করেছিল তাকে।
২১২৩
তবে অপরাধ চাপা থাকেনি। কিছু দিন পরে ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে ১৯ বছরের অন্য এক তরুণীকে অপহরণ এবং গণধর্ষণের অভিযোগে মিয়ানো এবং তার সঙ্গী ওগুরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
২২২৩
পুলিশ যখন মিয়ানোকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তখন তার মনে হয়েছিল জুনকোকে ধর্ষণ এবং খুনের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। ভয়ে নিজে থেকেই সব দোষ স্বীকার করে সে। জুনকোর দেহ কোথায় পাওয়া যাবে, তা-ও বলে দেয়। মিয়োনোর কথা শুনে হতবাক হয়ে যান তদন্তকারীরা। কারণ তাঁরা সম্পূর্ণ অন্য এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিলেন দুই তরুণকে।
২৩২৩
২৯ মার্চ জুনকোর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার দেহ শনাক্তও করা হয়। মিয়ানো এবং ওগুরাকে গ্রেফতারের পর একে একে আরও অনেককে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। এদের মধ্যে মিয়ানোকে ২০ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়। ওগুরাকে ১০ এবং মিনাতোকে ৯ বছর জেলবন্দি থাকার সাজা শোনানো হয়। জরিমানাও করা হয় তাদের। পৃথিবীর ইতিহাসে নারী়দের উপর অত্যাচারের অন্যতম ভয়ঙ্কর নিদর্শন হিসাবে রয়ে গিয়েছে জুনকোর মৃত্যু।