Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
China’s ‘Golden Dome’

ভেদ করে গলতে পারবে না মাছিও! ট্রাম্পের ‘গোল্ডেন ডোম’ স্বপ্ন চুরমার করে হাজার ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর বর্ম তৈরি করল বেজিং

চিনা বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই তাঁদের বিশ্বব্যাপী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্ল্যাটফর্মের একটি কার্যকরী প্রোটোটাইপ স্থাপন করেছেন, এমনটাই দাবি চিনা সংবাদমাধ্যমের। শত্রুর ছোড়া ব্যালেস্টিক বা ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত করবে চিনা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৪০
Share: Save:
০১ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

আমেরিকা যা এখনও করে দেখাতে পারেনি তা করে দেখাল চিন। ওয়াশিংটনের স্বপ্নের প্রকল্প ‘গোল্ডেন ডোম’ বা সোনালি গম্বুজ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি ২০২৯ সালের আগে চালু হওয়ার কোনও আশা নেই বলে মেনে নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। এ দিকে তলে তলে ট্রাম্পের সেই ‘মহাপরিকল্পনা’কে টক্কর দিয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল বেজিং।

০২ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

চিনা সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ‘গোল্ডেন ডোম’কেও ছাপিয়ে যেতে পারে এই চিনা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনও স্থান থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে চিন। এমনকি একসঙ্গে এক হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে এলেও তা আটকাতে পারবে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এমনটাই দাবি।

০৩ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

পরমাণু অস্ত্র হোক বা অন্য কোনও বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, তা ধরা পড়বে ‘ডিস্ট্রিবিউটেড আর্লি ওয়ার্নিং ডিটেকশন বিগ ডেটা প্ল্যাটফর্ম’ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়। পিপল্স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির সাহায্যে একটি নমুনা সংস্করণ (প্রোটোটাইপ) তৈরি করা হয়েছে। চিনা সংবাদমাধ্যমে ঘোষণার পর আমেরিকার ‘সোনালি গম্বুজ’-এর সঙ্গে চিনা সংস্করণের তুলনা টানা শুরু হয়ে গিয়েছে।

০৪ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

পিপল্স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) তত্ত্বাবধানে ‘নানজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ ইলেক্ট্রনিক্স টেকনোলজির’ বিজ্ঞানীদের তৈরি এই প্রোটোটাইপটি। মহাকাশে, সমুদ্রে এবং স্থলে মোতায়েন করা বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবিধি ধরা পড়বে এর রাডারে। এটি দু্র্ভেদ্য বর্মের মতো শত্রুপক্ষের আঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করবে। পরমাণু অস্ত্র হোক বা অন্য কোনও বিধ্বংসী অস্ত্র, আছড়ে পড়ার আগেই তাকে ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়।

০৫ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

হাজার হাজার মাইল দূর থেকে ছোড়া শত্রুর ব্যালেস্টিক বা ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত করবে চিনের এই ‘সোনালি গম্বুজ’। যদিও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তার উন্নত সংস্করণ তৈরির কাজ জোরকদমে এগিয়ে নিয়ে চলেছে পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। উপগ্রহ, রাডার, অপটিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক রিকনেসান্স নেটওয়ার্ক থেকে প্রাপ্ত তথ্য যুক্ত করে শত্রুর অস্ত্রকে চিহ্নিত করে এটি।

০৬ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর মতে, চিনা বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই তাঁদের বিশ্বব্যাপী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্ল্যাটফর্মের একটি কার্যকরী প্রোটোটাইপ স্থাপন করেছেন। এটি সমুদ্র, আকাশ এবং স্থলে একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ‘রিয়্যাল টাইম’ তথ্য সংগ্রহ করে। সম্ভাব্য হুমকি শনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা রয়েছে এর।

০৭ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

এই প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত এক গবেষক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটির সাহায্যে শত্রুর আক্রমণের গতিপথ সম্পর্কে আগাম পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। চিনের দিকে ধেয়ে আসা শত্রুপক্ষের হুমকিগুলি চিহ্নিতকরণ সম্ভব হবে নতুন ধরনের এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়।

০৮ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

আমেরিকা যে ‘সোনালি গম্বুজ’ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আমেরিকার ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’-এর সময়কাল থেকেই। ১৯৮৩ সালে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ‘কৌশলগত প্রতিরক্ষা উদ্যোগ’ বা ‘স্টার ওয়ার্স’ চালু করেছিলেন। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে একটি মহাকাশভিত্তিক ঢাল বা বর্ম দিয়ে আমেরিকাকে মুড়ে ফেলা।

০৯ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

১৯৮৩ সালের ২৩ মার্চ, হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে রিগ্যান বলেছিলেন, ‘‘এমন একটি ব্যবস্থা কল্পনা করুন যা আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের উপকূলে পৌঁছোনোর আগেই বাধা দিতে সক্ষম হবে। এমন একটি ব্যবস্থা কল্পনা করুন যা আমাদের শহর এবং আমাদের জনগণকে পারমাণবিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।’’

১০ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ অবসানের পর প্রকল্পটি অবশ্য স্থগিত করা হয়েছিল। রোনাল্ড যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন ট্রাম্প। ২০২৫ সালের মে মাসে প্রকল্পটি পুনরুজ্জীবিত করেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি ছিল বিশ্বের সেরা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হতে চলেছে ‘গোল্ডেন ডোম’। ইজ়রায়েলি আয়রন ডোমের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে আমেরিকার এই প্রতিরক্ষা বর্ম।

১১ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে শত্রুর ছোড়া ব্যালেস্টিক বা ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত করবে আমেরিকার ‘সোনালি গম্বুজ’। এর জন্য স্থলভিত্তিক রেডারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে এই ব্যবস্থা। তার পর লেজ়ার ব্যবহার করে হাইপারসনিক, ব্যালেস্টিক এবং ক্রুজ়— তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝ-আকাশে ধ্বংস করবে গোল্ডেন ডোম।

১২ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

গোল্ডেন ডোমের জন্য প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ লক্ষ কোটি টাকা) খরচ করবে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য আড়াই হাজার কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা) বরাদ্দ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ট্রাম্প আশা করেছিলেন কলার তুলে কৃত্রিম উপগ্রহ-ভিত্তিক ‘আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’ তৈরি করার কৃতিত্ব দাবি করবে একমাত্র আমেরিকাই। ট্রাম্পের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে শি জিনপিং সরকারের লাল ফৌজ।

১৩ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

চিনের দাবি, রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র তো কোন ছার, বর্ম ভেদ করে নাকি গলতে পারবে না একটা মাছিও! আন্তর্মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি কত গতিবেগে ধেয়ে আসছে তা-ও আগাম ধরা পড়বে রেডারে। কী ধরনের অস্ত্র ছুড়েছে শত্রুদেশ, গতিবেগ কত, কোন গতিপথ ধরে এগোচ্ছে তা-ও বলে দেবে এই সিস্টেম। এমনকি ছুটে আসা বস্তু যুদ্ধাস্ত্র কি না তার তথ্য পৌঁছে যাবে ডেটা প্ল্যাটফর্মে।

১৪ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

বর্তমান বিশ্বের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলির মধ্যে ইজ়রায়েলের ‘আয়রন ডোম’ যথেষ্ট চর্চিত। স্বল্পপাল্লার রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র, মর্টার ও কামানের গোলা আটকাতে এই লৌহকবচটির নকশা তৈরি করেছেন সে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল হাতিয়ার হল রাশিয়ার তৈরি ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’।

১৫ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পুরোপুরি বেজিঙের উপর নির্ভরশীল পাকিস্তান। ড্রাগনভূমির তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা ধরা পড়ে গিয়েছিল ভারতীয় ফৌজের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়। সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি ধ্বংস করতে ছোড়া স্ক্যাল্প ক্রুজ় বা ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করতে বা আটকাতে পারেনি ইসলামাবাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম)।

১৬ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

লাহৌর এবং রাজধানী ইসলামাবাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এইচকিউ-৯পি/এইচকিউ-৯বিই নামের সেই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন রেখেছে পাক ফৌজ। স্ক্যাল্প ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিতকরণ এবং ধ্বংসের জন্য রাখা এফএম-৯০ বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটিও কার্যক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ায় ড্রাগনের অত্যাধুনিক হাতিয়ারের কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

১৭ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানের দিক থেকে প্রত্যাঘাত আসবে, আগেই আন্দাজ করেছিল ভারতীয় সেনা। সেই অনুযায়ী বন্দোবস্ত করে রাখা হয়েছিল। ভারতের সীমান্তে তৈরি ছিল কাউন্টার আনম্যান্ড এরিয়াল সিস্টেম, শোল্ডার-ফায়ার্ড অস্ত্র, লিগ্যাসি এয়ার ডিফেন্স অস্ত্র এবং মডার্ন এয়ার ডিফেন্স অস্ত্র। বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সমস্যায় পড়ে পাকিস্তান।

১৮ ১৮
China’s ‘Golden Dome’

পাকিস্তানকে সরবরাহ করা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর বেজিঙের সাম্প্রতিক দাবি নিয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রোটোটাইপে কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশভিত্তিক রেডার ব্যবস্থা এবং কক্ষপথের যান চিহ্নিতকরণ যন্ত্রের (অরবিটাল ইন্টারসেপ্টর) ব্যবহার করা হলেও কার্যক্ষেত্রে দূরাগত ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে কতটা আটকানো যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আধুনিক সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy