বাড়িতে সোনা রাখার বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সোনা রাখা এবং বিক্রির ক্ষেত্রেও করের নিয়ম আলাদা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সামনেই বিয়ের মরসুম। ঠিক তার আগে কমতে কমতে ৭০ হাজার টাকায় নেমেছে ২২ ক্যারেট সোনার দর। ফলে নতুন সংসার শুরু করতে চলা যুগলের মুখে ফুটেছে হাসি। পাশাপাশি, মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই ভবিষ্যতের সঞ্চয় হিসাবে মন দিয়েছেন গয়নার দিকে।
০২১৫
ভারতীয় মহিলাদের হলুদ ধাতুর অলঙ্কারের প্রতি রয়েছে প্রবল আকর্ষণ। সোনাকে এ দেশে সৌভাগ্য ও সম্পদের প্রতীক বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া বরাবরই বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যমের তকমা পেয়ে এসেছে হলুদ ধাতু।
০৩১৫
আর তাই গয়না হোক বা কয়েন, প্রায় প্রত্যেকেই সাধ্য অনুযায়ী বাড়িতে কিছু সোনা রাখা পছন্দ করেন। ভারতীয় সংস্কৃতিতে উৎসবের সময়ে হলুদ ধাতু কেনাকে শুভ বলে মনে করা হয়।
০৪১৫
তবে কত পরিমাণ সোনা বাড়িতে রাখা যাবে, সেই বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। তার বেশি হলুদ ধাতু থাকলে গ্রেফতার, এমনকি জেল পর্যন্ত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই সোনা কেনার সময়ে সেই নিয়ম মনে রাখা প্রয়োজন।
০৫১৫
‘সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস’-এর (সিবিডিটি) নিয়ম অনুযায়ী, একজন বিবাহিত মহিলা নিজের কাছে সর্বোচ্চ ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনা রাখতে পারেন। অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ২৫০ গ্রাম। পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা ১০০ গ্রাম পর্যন্ত হলুদ ধাতু রাখার অধিকারী।
০৬১৫
সরকারি নিয়মে এটাও বলা রয়েছে যে, নাগরিকদের কাছে সোনা সংক্রান্ত বৈধ নথি থাকতে হবে। তবে বাড়িতে নির্দিষ্ট পরিমাণে হলুদ ধাতু থাকলে তল্লাশির সময়ে সরকারি আধিকারিক ইচ্ছা করলেই তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন না।
০৭১৫
সোনার উপর আয়করের নিয়মটি বেশ সহজ। যদি কোনও ব্যক্তি ঘোষিত আয় বা করমুক্ত আয়ের (যেমন কৃষি) অর্থে হলুদ ধাতু কিনে থাকেন, তবে তাঁকে কোনও কর দিতে হবে না। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সোনার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
০৮১৫
সোনা রাখার ক্ষেত্রে আয়কর না থাকলেও বিক্রির ক্ষেত্রে অবশ্যই কর দিতে হবে। যদি কোনও ব্যক্তি হলুদ ধাতু মজুত থাকার তিন বছর পর বিক্রি করেন, তা হলে সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ ‘দীর্ঘমেয়াদি মূলধন লাভ’ (লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইনস্) হিসাবে গণ্য হবে। এর পরিমাণ ২০ শতাংশ।
০৯১৫
কিন্তু গ্রাহক সোনা কেনার তিন বছরের মধ্যে তা বিক্রি করলে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। সে ক্ষেত্রে লভ্যাংশ ব্যক্তিগত আয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। এর পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর প্রযোজ্য করের স্ল্যাবের উপর ভিত্তি করে কর নেবে সরকার।
১০১৫
অনেকে আবার ‘কাগুজে সোনা’ কিনতে পছন্দ করেন। যার পোশাকি নাম ‘সোভেরেইন গোল্ড বন্ড’ (এসজিবি)। প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালে এটি চালু করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এর মাধ্যমে সরকারের ঘর থেকে স্বর্ণ বন্ড কেনার সুযোগ পায় আমজনতা।
১১১৫
সোভেরেইন গোল্ড বন্ডে একজন গ্রাহককে এক গ্রাম থেকে চার কিলো পর্যন্ত সোনা কেনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মেয়াদ আট বছর রেখেছে সরকার। হলুদ ধাতুর ক্রমবর্ধমান আমদানি বন্ধ করতে ওই সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র।
১২১৫
স্বর্ণ বন্ড যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া পর্যন্ত রেখে দেওয়া হয়, তা হলে এতে কোনও কর দিতে হবে না। কিন্তু এসজিবি বিক্রি করলে প্রাপ্ত লভ্যাংশ সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের আয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। তার পর নির্বাচিত ট্যাক্স স্ল্যাব অনুযায়ী তাঁকে আয়কর দিতে হবে।
১৩১৫
২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর বাড়িতে সোনা রাখার ব্যাপারে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সিবিডিটি। সেখানে বলা হয়, স্বর্ণালঙ্কার রাখার পরিমাণের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে থাকা হলুদ ধাতুর উৎস পরিষ্কার হতে হবে। পাশাপাশি, এটি আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন হলে চলবে না।
১৪১৫
সোনার নথিপত্রে গরমিল থাকলেই যে অলঙ্কার আয়কর দফতর বাজেয়াপ্ত করবে, এমনটা নয়। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষে কিছু ছাড় মিলবে। উদাহরণ হিসেবে বিবাহিত মহিলার কথা বলা যেতে পারে। তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে অধিক স্বর্ণালঙ্কার থাকলে তা বাজেয়াপ্ত না করার নির্দেশ দিয়েছে সিবিডিটি।
১৫১৫
১৯৬৮ সালে সোনা নিয়ন্ত্রণ আইন (গোল্ড কন্ট্রোল অ্যাক্ট) পাশ করে কেন্দ্র। ওই আইনে হলুদ ধাতু কেনার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯০ সালে সেই আইন বাতিল করে সরকার।