চিনুর জন্ম ১৯৮১ সালের ১০ অক্টোবর রাজস্থানের এক সাধারণ পরিবারে। মাত্র এক বছর বয়সে মা তাঁকে ছেড়ে চলে যান। জন্মদাত্রী সৌদিতে চলে যাওয়ায় চিনু তাঁর বাবা এবং সৎমায়ের সঙ্গে থাকতেন। পরিবারে প্রায়ই সৎমা ও বাবার সঙ্গে অশান্তি লেগে থাকত চিনুর। সেই বয়সেই চিনুর উপলব্ধি ছিল, বেঁচে থাকার জন্য তাকে অর্থ উপার্জন করতে হবে।
বাড়ি থেকে পালিয়ে স্বপ্ননগরী মুম্বইয়ে পা রেখে পর পর দু’রাত স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই রাত কাটাতে হয়েছিল পঞ্চদশী কিশোরীকে। নতুন শহরে ছিল না কোনও আত্মীয়-পরিজন। সহায়-সম্বলহীন হলেও চিনুর মধ্যে ছিল অদ্ভুত এক জেদ ও আত্মবিশ্বাস। মুম্বইয়ে পা রাখার দিনগুলির কথা ভাবলে এখনও তাঁর হৃদয় কেঁপে ওঠে বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন তিনি।
বেশির ভাগ বাড়িতেই তাঁর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হত। এ সব নিয়ে প্রথম প্রথম খুব ভেঙেও পড়তেন তিনি। তবে আয় এত কম ছিল যে বেশির ভাগ দিনই মাত্র এক বেলা অন্নসংস্থান করতে পারতেন চিনু। তবে হাল ছাড়েননি। মাত্র এক বছরের মধ্যে তিনিই আবার এই পেশায় এত দক্ষ হয়ে ওঠেন যে, তাঁকে তাঁর সংস্থা সুপারভাইজ়ারের পদে উন্নীত করে।
মুম্বইয়ে তাঁর লড়াইয়ের দিনগুলিতে নানা রকম চাকরিতে হাত পাকিয়েছিলেন চিনু। রেস্তরাঁয় ওয়েট্রেস-এর কাজও করেছেন। রিসেপশনিস্ট, টেলিকলারের মতো চাকরিতে যোগ দিতে হয়েছিল জীবনধারণের জন্য। এমন দিনও গিয়েছে তাঁর যখন সারা দিন সেলসের কাজ করার পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রেস্তরাঁয় খাবার পরিবেশন করে উপার্জন করেছেন। উপার্জন করেছেন মডেলিং থেকেও।
মুম্বইয়ের টাটা কমিউনিকেশনসে টেলিমার্কেটিং বিভাগে এক্জ়িকিউটিভ হিসাবে কাজ করার সময় অমিত কালার সঙ্গে আলাপ হয় চিনুর। ২০০৪ সালে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা অমিতের সঙ্গে বিয়ের পর চিনুর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। অমিতই তাঁকে নতুন কিছু করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। বড় ঝুঁকি নেওয়ার জন্য অমিতই আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিলেন চিনুকে।
মডেলিংয়ের প্রতি চিনুর ভালবাসা ছিল ছোট থেকেই। ২০০৮ সালের একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় যোগ দেন তিনি। সেখানে শীর্ষ ১০ জনের মধ্যে ছিলেন চিনু। বন্ধুদের কথা মেনে মিসেস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেন চিনু। প্রতিযোগিতার ফাইনালেও পৌঁছোন। কিন্তু ইংরেজিতে ঠিকমতো উত্তর দিতে না পারায় প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন।
আজ সেই ব্র্যান্ডের গ্রাহকসংখ্যা ৪০ লক্ষ। বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ এবং কোচিতে রয়েছে আউটলেট। একাধিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে চুক্তি করেছেন চিনু। শার্ক ট্যাঙ্কের সঙ্গে ১.৫ কোটির টাকার চুক্তি হয়েছে চিনুর সংস্থার। পথ চলা শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত সংস্থাটির বিক্রির পরিমাণ ৩১০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy