শব্দের সঙ্গে কথা বলা এক্স-১৫ চালিয়ে কেমন অনুভূতি হয়েছিল? বিল ডানা নামে এক চালকের কথায়, ‘‘এটাই হল ‘আসল’ বিমান যা ওড়ে।’ নাসা-র আর্মস্ট্রং রিসার্চ ফ্লাইট সেন্টারের প্রধান ইতিহাসবিদ ক্রিস্টিয়ান গেলজার আবার অন্য অনুভূতির আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে বেশি স্পিড, সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা এবং সবচেয়ে বেশি ভয়— এ বিমান ওড়ালে এই সবেরই অনুভতি একসঙ্গে হয়েছিল।’’
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে পরীক্ষানিরীক্ষামূলক ভাবে ৬০টি বিমান তৈরি করেছিল আমেরিকার বায়ুসেনা এবং নাসা। তাদের মধ্যে ‘এক্স’ সিরিজের এই বিমানগুলিও রয়েছে। ১৯৫২ সাল থেকে এর উৎপাদন শুরুর সময় এক্স-১৫ সুপারসনিকের গতি ছিল ঘণ্টায় ৭০০ মাইল। তবে লক্ষ্য ছিল আরও উঁচু। শব্দের চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি গতি। অর্থাৎ ম্যাক ৫ বা প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪ হাজার মাইল।
গেলজার জানিয়েছেন, গতির লক্ষ্যে পৌঁছতে ঝুঁকিও কম ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘এ ধরনের বিমানকে সাধারণ বিমানের তুলনায় আরও উঁচুতে উ়ড়াতে হবে। ভূপৃষ্ট থেকে আড়াই লক্ষ ফুট উঁচুতে ওড়ানোই লক্ষ্য ছিল আমাদের। আর সেটি যে বড়সড় ঝুঁকি নেওয়া, তা বলার নয়।’’ গেলজার জানিয়েছে, রাশিরায় সঙ্গে আমেরিকার ঠান্ডা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটেই এই বিমান তৈরির জন্য গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
কী ভাবে আকাশে উড়ত এক্স-১৫? গেলজার জানিয়েছেন, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এডওয়ার্ড বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে নেভাদা বা ইউটা-র দিকে ঘণ্টায় ৬০০ মাইলেরও বেশি গতিবেগে উড়ে যেত বি-৫২ বম্বার। তবে একা নয়, পেটে থাকত এক্স-১৫। এর পর ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৫ হাজার ফুট উঁচুতে নিয়ে গিয়ে এক্স-১৫’কে আকাশে ছেড়ে দিত। সে সময় আকাশে যেন গ্লাইডারের মতো ভাসতে থাকত ৫০ ফুট লম্বা সুপারসনিক। এর পরই ইঞ্জিন চালু করতেন সুপারসনিকের চালক।
আর পাঁচটা বিমানের থেকে যে এটি কতটা আলাদা, তা বোঝা যায় মিল্ট টমসন নামে এক চালকের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা অন্য বিমানগুলোর মতই আকাশে ভাসত। তবে যখন উপরে উঠতে শুরু করত, তখন মনে হত যেন কারও পরোয়া করে না।’’ মিল্ট আরও বলেন, ‘‘যে ক’টা বিমান উড়িয়েছি, তার মধ্যে একমাত্র এই বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ থাকলে স্বস্তি পেতাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy