Old social rituals are still active in parts of rural Rajasthan which force minor girls to marry dgtl
Social Rituals and Superstition
স্বামী হারানোর ‘শাস্তি’ পায় নাবালিকা বধূরা, চলে বেচাকেনা! দেশের যে রাজ্য থমকে উনিশ শতকেই
অকালে বিয়ে, বৈধব্যের অভিশাপ ভোগ করে গ্রামের মেয়েরা। কারও বিয়ে হয়ে যায় ৭ বছরেই। কেউ কেউ ১৫ বছর বয়সে হয় দুই সন্তানের জননী। প্রাচীন প্রথায় আবদ্ধ ভারতের এক রাজ্য।
সংবাদ সংস্থা
জয়পুরশেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
মেয়ের বয়স ১০ থেকে ১২ বছর পেরোলেই বিয়ের সানাই বেজে ওঠে বাড়িতে। (সু)পাত্রের হাতে মেয়েকে সঁপে দিয়ে দায়মুক্ত হন বাবা-মা। পুতুল খেলার বয়সে গুটিগুটি পায়ে শ্বশুরবাড়ি যায় কনে। কখনও কখনও বিয়ের বয়স ৭ কিংবা ৮ বছর।
ছবি: প্রতীকী।
০২১৭
আঠারো কিংবা উনিশ শতকের ভারতে এই ছবি অচেনা ছিল না। বরং কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়াই ছিল সমাজের রীতি। কিন্তু ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েও বাল্যবিবাহ এবং নাবালিকাদের বৈধব্যের ছবিটা পাল্টায়নি রাজস্থানে।
ছবি: প্রতীকী।
০৩১৭
পালি, ভিলওয়াড়া, রাজসমন্দ— রাজস্থানের একাধিক জেলায় প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে এখনও প্রচলিত রয়েছে বাল্যবিবাহ। ছোট ছোট মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। তার পর যদি অকালে নেমে আসে বৈধব্যের অভিশাপ, বালিকার জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ।
ছবি: প্রতীকী।
০৪১৭
বিয়ের পর স্বামী মারা গেলে বিধবা কন্যাকে পরবর্তী ৬ মাস কঠোর অনুশাসনে রাখা হয়। রাজস্থানে এই প্রথার নাম কোনা প্রথা। প্রাচীন কালের এই প্রথার দাপট ২০২৩ সালেও সমান।
ছবি: প্রতীকী।
০৫১৭
কোনা প্রথা অনুযায়ী, ছোট ছোট বিধবা মেয়েদের স্বামী মারা যাওয়ার পর পরই একটি বদ্ধ ঘরে ‘নির্বাসন’-এ পাঠানো হয়। টানা ৬ মাস ওই ঘরেই থাকতে হয় মেয়েদের। তারা না পারে কারও সঙ্গে কথা বলতে, না পারে কারও মুখ দেখতে। সূর্যের আলোও তাদের ছুঁতে পারে না।
ছবি: প্রতীকী।
০৬১৭
বিধবা কন্যার সন্তানকেও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় ওই ৬ মাস। প্রতি দিন ভোরবেলা সূর্য ওঠার আগে তাকে এক বার করে ঘর থেকে বেরিয়ে স্নান ও প্রাতঃকৃত্য সেরে আসতে হয়। তার পর সারা দিনে প্রস্রাবের জন্যেও ঘর থেকে বেরোনোর অনুমতি নেই কারও।
ছবি: প্রতীকী।
০৭১৭
কেন এই নির্বাসন? বলা হয়, স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী ওই কমবয়সি নাবালিকাই। তাই তার ছায়াটুকুও অমঙ্গলের বার্তাবহ। সন্তানের উপর সেই ছায়া যাতে না পড়ে, তাই বদ্ধ ঘরে সরিয়ে রাখা হয় মাকে।
ছবি: প্রতীকী।
০৮১৭
১৪ কিংবা ১৫ বছর বয়সেই এই কঠিন বৈধব্য সহ্য করতে হয় রাজস্থানের গ্রামে গ্রামে বেড়ে ওঠা হাজারো মেয়েকে। স্বামী মারা যাওয়ার পর তাদের আর বিয়ে করারও উপায় নেই। বিয়ের কথা ভাবলেও ধেয়ে আসে সমাজের তর্জনী।
ছবি: প্রতীকী।
০৯১৭
সংসার পাতার উপায় যে একেবারে নেই, তা অবশ্য নয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই সমস্ত বিধবা কন্যাকে নিয়ে ব্যবসা হয়। দর কষাকষি করে মেয়েদের শ্বশুরবাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান অন্য কোনও গৃহকর্তা।
ছবি: প্রতীকী।
১০১৭
নতুন বাড়িতে বিধবা কন্যা স্ত্রীর মর্যাদা পায় না। তাকে দিয়ে বাড়ির সব কাজ করানো হয়। মনিবের সন্তানও গর্ভে ধারণ করে সে। বিধবা নাবালিকা তার শ্বশুরবাড়ি এবং বাপের বাড়ি, সব ক্ষেত্রেই হয়ে পড়ে বাড়তি বোঝা।
ছবি: প্রতীকী।
১১১৭
কোনও শুভ কাজেও ঠাঁই হয় না এই কন্যাদের। নিকট আত্মীয়ের বিয়ে কিংবা রাখিপূর্ণিমা, কোনও অনুষ্ঠানেই ইচ্ছা থাকলেও অংশ নিতে পারে না তারা। গয়নাগাটি ছেড়ে সাধারণ পোশাকে দিন কাটাতে হয়।
ছবি: প্রতীকী।
১২১৭
রাজস্থানের গ্রামে গ্রামে মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে হয়ে যায়, এ কথা কারও অজানা নয়। অভিযোগ, সব জেনেশুনেও সরকার উদাসীন। যে যুগে মেয়েরা মাটি ছেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে, পাড়ি দিয়েছে মহাকাশে, সেই যুগেও ভারতের বৃহত্তম রাজ্যের অলিগলিতে রয়ে গিয়েছে গাঢ় অন্ধকার।
ছবি: প্রতীকী।
১৩১৭
রাজস্থানে বাল্যবিবাহ, কোনা প্রথার বিরুদ্ধে সাধ্যমতো প্রচার চালায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয় না। অভিযোগ, সরকারের তরফে মাঝেমধ্যে প্রচারমূলক অভিযান চালানো হয়। তবে তা জোরদার নয়।
ছবি: প্রতীকী।
১৪১৭
গ্রামে প্রচলিত আরও এক রীতি অনুযায়ী, পরিবারের কোনও সদস্যের মৃত্যু হলে ওই দিনেই বাড়ির মেয়ের বিয়ে দিতে হয়। যে বয়সের মেয়েই হোক, মৃতের পরিবারে মেয়ে থাকলে সেই রাতে তার বিয়ে হবেই। মাঠে নিয়ে গিয়ে কোনও রকমে চারহাত এক করে দেওয়া হয় পাত্র-পাত্রীর।
ছবি: প্রতীকী।
১৫১৭
অভিযোগ, এই সমস্ত ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই মেয়ের বিয়ে স্থির করার সময় পান না মা-বাবাও। গ্রামের বর্ষীয়ান বাসিন্দারাই বিয়ের আয়োজন করে ফেলেন।
ছবি: প্রতীকী।
১৬১৭
রাজস্থান মহিলা কমিশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লাদ কুমারী জৈন দৈনিক ভাস্করকে বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ রোখার জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু মানসিকতায় কোনও পরিবর্তন আসেনি। এ সব ক্ষেত্রে সরকারও খুব একটা কড়া নয়। সরকারি পরিসংখ্যানেও বাল্যবিধবা মেয়েদের কোনও উল্লেখ থাকে না।’’
ছবি: প্রতীকী।
১৭১৭
সামাজিক প্রথার নেপথ্যে অশিক্ষা, দারিদ্র এবং সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেন অনেকে। একুশ শতকের সমাজেও তাই রয়ে গিয়েছে উনিশ শতক। রাজস্থানের গ্রামগুলিতে উন্নয়নের পালে হাওয়া লাগেনি কখনও। উনিশ শতকেই থমকে রয়েছে গ্রামবাসীদের মনন।