One Asian country Kazakhstan accounted for purchasing 8 tones gold in just one month dgtl
New trends of Gold buying
এক মাসে বিশ্বে বিক্রি হওয়া হলুদ ধাতুর অর্ধেকের বেশি কিনল মধ্য এশিয়ার দেশ! তলে তলে সোনার ভান্ডার ভরাচ্ছে কারা?
এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোনা কিনে এই দেশটি তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্বকে। টানা ছ’মাস দেদার সোনা কেনার ফলে তাদের মজুত ৩০০ টনের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। তাদের সঞ্চিত সোনার পরিমাণ এখন ৩১৬ টন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশগুলিকে পিছনে ফেলে সোনা কেনায় এগিয়ে গেল মধ্য এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশ। চিন, জার্মানি, ইটালি, পোল্যান্ডকে পিছনে ফেলে এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোনা কিনে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই দেশটি।
০২১৭
প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর স্বাধীন প্রজাতন্ত্র দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে কাজ়াখস্তান। এই দেশের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী। অগস্ট মাসে, বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি মোট ১৫ টন সোনা কিনেছে। এর মধ্যে কাজ়াখস্তান একাই অর্ধেকেরও বেশি সোনা কিনেছে। অগস্টে মোট ৮ টন সোনা কিনেছে কাজ়াখস্তান। এর ফলে তাঁদের মোট সোনার সঞ্চয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৬ টন।
০৩১৭
গত মাসে যে সব দেশ তাঁদের সোনার মজুত বৃদ্ধি করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে কাজ়াখস্তান, উজ়বেকিস্তান, তুরস্ক, চিন, বুলগেরিয়া, ঘানা এবং চেক রিপাবলিক। আট টন সোনা কেনার ফলে মাসিক সোনা কেনার নিরিখে প্রথম স্থান দখল করেছে কাজ়াখস্তান।
০৪১৭
টানা ছ’মাস দেদার সোনা কেনার ফলে তাদের মজুত ৩০০ টনের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। তাদের সোনার মজুত এখন ৩১৬ টন, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ৩২ টন বেশি।
০৫১৭
অগস্ট মাসে গোটা বিশ্বের সাতটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তাদের সোনার সঞ্চয় (এক টন বা তার বেশি) বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। বিপরীতে, মাত্র দু’টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক অগস্টে তাদের সোনার সঞ্চয় হ্রাসের কথা জানিয়েছে। সেই দু’টি দেশ হল রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।
০৬১৭
রাশিয়া তাদের মুদ্রা তৈরির কর্মসূচির জন্য ৩ টন সোনা বিক্রি করেছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। অন্য দিকে, ইন্দোনেশিয়া তাদের সঞ্চয় থেকে ২ টন সোনা বিক্রি করেছে। উজ়বেকিস্তানের প্রধান ব্যাঙ্কও ২ টন সোনা যোগ করেছে তাদের রাজকোষে। এর ফলে দেশটির মোট মজুত ৩৬৬ টনে পৌঁছে গিয়েছে। যদিও ২০২৪ সালের তুলনায় ১৭ টন কম সোনা কিনতে পেরেছে তারা।
০৭১৭
চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত) সোনা কেনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশ। বছরের শুরুর তিন মাসে দেশটির সোনা কেনার পরিমাণ ছিল ৬.৪৫ টন। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মজুতের পরিমাণ বেড়েছে অনেকটাই। এপ্রিল, মে, জুন মিলিয়ে একলাফে অনেকটাই সোনা কিনেছে কাজ়াখস্তান, যা প্রায় ১৬ টনের কাছাকাছি।
০৮১৭
বিশ্বব্যাঙ্কের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে কাজ়াখস্তানের মাথাপিছু জিডিপি (মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) ছিল ৯ হাজার ১২২ ডলার। কাজ়াখস্তানের অর্থনীতি এবং মাথাপিছু আয়, উভয় দিক থেকেই মধ্য এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বড় বলে পরিচিত।
০৯১৭
চলতি বছর সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির সোনা কেনার উৎসাহে কিছুটা ভাটা প়ড়েছে। সোনা দিয়ে ভান্ডার ভরানোর কার্যকলাপ কিছুটা মন্থর হলেও চাহিদা এখনও স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল।
১০১৭
তুরস্ক এবং চিন উভয় দেশই ২ টন করে সোনা কিনেছে। এর ফলে তুরস্কের মোট মজুত এসে দাঁড়িয়েছে ৬৩৯ টনে। ২ টন সোনা যোগ হওয়ার পর চিনের ভাঁড়ারে ২,৩০০ টন হলুদ ধাতু সঞ্চিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের পর চলতি বছরের অগস্টে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ সোনা ক্রয় করতে পেরেছে বলকান এলাকার দেশ বুলগেরিয়া।
১১১৭
২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ইউরোজ়োনে যোগদান করতে চলেছে বুলগেরিয়া। ইউরোজ়োন হল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মুদ্রা ইউনিয়ন, যেখানে দেশগুলি তাদের নিজস্ব মুদ্রার পরিবর্তে ইউরো মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করে। বুলগেরিয়া সেই ইউনিয়নের ২১তম সদস্য হতে চলেছে। তার আগে দেশের সোনার মজুত ৪৩ টনে পৌঁছেছে।
১২১৭
চেক রিপাবলিকের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ভান্ডারে ২ টন সোনা সঞ্চিত হয়েছে। টানা ৩০ মাস ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সোনা কেনা অব্যাহত রেখেছে দেশটি। ৬৫ টনে উন্নীত হয়েছে সে দেশের সোনার ভান্ডার।
১৩১৭
এখনও বিশ্বের শীর্ষ সোনার মজুতদার রাষ্ট্র হল আমেরিকা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডেরাল ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে রয়েছে ৮,১৩৩ টন সোনা। গত ২৫ বছর ধরে সেই সঞ্চয় মূলত অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০২৫ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (এপ্রিল থেকে জুন) অনুযায়ী ৮,১৩৩.৪৬ টন সোনা রয়েছে আমেরিকার কাছে।
১৪১৭
যুক্তরাষ্ট্রের পর, জার্মানির মজুত সোনার পরিমাণ ৩ হাজার ৩৫০ টন। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ইটালি (২,৪৫২ টন), ফ্রান্স (২,৪৩৭ টন) এবং রাশিয়া (২,৩৩০ টন)। ২,৩০১ টন মজুত নিয়ে চিন ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে, তার পরে রয়েছে সুইৎজ়ারল্যান্ড (১,০৪০ টন)।
১৫১৭
ডলার ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল কমিয়ে সোনা জমানোর পথে হাঁটছে ভারতও। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কে মজুত সোনার পরিমাণ ৮৪০ টন। এর পরেই রয়েছে জাপান (৮৪৬ টন) এবং তুরস্ক (৮৩৭ টন)। ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে অনেক দেশ তাদের সোনার মজুত বাড়িয়ে ডলারের উপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করেছে, যা সোনার ক্রমবর্ধমান দামের অন্যতম প্রধান কারণ।
১৬১৭
সোনাকে সব সময়ই নিরাপদ বিনিয়োগ বলে ধরা হয়। সোনা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের মুদ্রার দর নিয়ন্ত্রণেও সোনার ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব রাজনীতি অস্থির হওয়ার কারণে হলুদ ধাতুর দাম রকেটের গতিতে চড়তে শুরু করেছে।
১৭১৭
বিশ্বের অধিকাংশ দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডারে কিছু বৈচিত্র থাকার প্রয়োজন রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি। শুধু ভারত নয়, একাধিক দেশই স্বর্ণসঞ্চয়ে জোর দিচ্ছে। শুধুমাত্র ডলারের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে তারা। আর তাই বিকল্প হয়ে উঠছে সোনা।