ছোট্ট একটা চিরকুট। আর তাতে কয়েক কুচি শান্তির বার্তা। সীমান্তে কাঁটাতারের দু’ দিকে জমে থাকা, বাড়তে থাকা সমস্ত ঘৃণা, দ্বেষকে মাত্র কয়েকটা লাইন দিয়ে মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা। আর সেই চেষ্টাই এখন ভাইরাল অন্তর্জাল দুনিয়ায়।
প্রোফাইল ফর পিস আদতে একটি হ্যাসট্যাগ ক্যাম্পেন। শুরুটা করেছিলেন বান্দ্রার ৩৬ বছরের রাম সুব্রহ্মণ্যম। শিবসেনার দাপটে মুম্বইতে বাতিল হয়েছে পাক শিল্পিদের কনসার্ট। গায়ের জোরে আতঙ্কের পরিবেশে জোর করে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে পাক লেখকদের বইপ্রকাশে। তাদের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি বলিউড, ক্রিকেটও। সব দেখে বীতশ্রদ্ধ রাম সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেছে নেন তাঁর প্রতিবাদের মাধ্যম হিসাবে। হাতে চিরকুট। তাতে লেখা ‘আমি ভারতীয়, আমি মুম্বইয়ে থাকি, আমি পাকিস্তানকে ঘৃণা করি না, আমি জানি আমি একা নই।’ এই ছবি তুলে ফেসবুকে নিজের প্রোফাইল পিকচার চেঞ্জ করে ফেলেন তিনি। এক রাতের মধ্যে হুহু করে ফেসবুক, টুইটার, ইন্সট্রাগ্রামে ছড়িয়ে পরে এই ক্যাম্পেন। প্রায় একই রকম বার্তা লিখে সবাই সবার প্রোফাইল পিকচার পাল্টাতে শুরু করে করে দেন। কাশ্মীর থেকে কেরালার টেকস্যাভি ভারতীয় এখন মেতে ঘৃণার বিরুদ্ধে এই ভার্চুয়াল আন্দোলনে। রোজ বাড়ছে সংখ্যাটা। যোগ দিয়েছেন বহু সেলিব্রেটিও। জোরালো হচ্ছে প্রতিবেশী দেশের প্রতি সৌহার্দের এই আহ্বান। একই কায়দায় অসুয়া ভুলে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন পাকিস্তানিরাও। সীমান্তের ওপারে প্রোফাইলে প্রোফাইলে ভারতের প্রতি ভালবাসার সোচ্চার ঘোষণা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউএই, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়ার অনাবাসী ভারতীয় ও পাকিস্তানিরা একই সঙ্গে সামিল হয়েছে এই অনলাইন ক্যাম্পেনে।
এমন একটা সময় যখন ধর্মের দোহাই দিয়ে ঘৃণার রাজনীতি চেপে ধরছে একের পর এক প্রতিবাদী কণ্ঠ, যখল তখন যেকোনও ভাবে নেমে আসছে হামলা, ভয়ে বেশীরভাগই মুখ খুলতে চাইছে না, তখন সরাসরি এই ক্যাম্পেনের শুরু ব্যতিক্রমী তো বটেই। একই সঙ্গে এতে যোগ দেওয়ার প্রবণতা যে হারে বাড়ছে এই ভীষণ অন্ধকারে তা বেশ খানিকটা আশার আলোও দেখাচ্ছে।
দু’দেশের রাজনীতিকরা, কিছু শিখছেন কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy