রেবেকা ছিল মাক্সিমের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর নাম। কথকের সঙ্গে মাক্সিমের বিয়ের এক বছর আগে সে এক দুর্ঘটনায় প্রয়াত হয়। মাক্সিমের এস্টেটের হাউসকিপার মিসেস ডানভার্স ক্রমাগত নববধূর সঙ্গে প্রয়াত রেবেকার তুলনা শুরু করে। প্রকাশ্যে সে মনিবের নবোঢ়া পত্নীকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থাও করতে শুরু করে। বার বার মনে করিয়ে দিতে থাকে, রেবেকার সৌন্দর্যের কাছে সে কিছুই নয়।
মরিয়েরের উপন্যাস এর পর রহস্যকাহিনির দিকে মোড় নেয়। বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে ক্রমেই উন্মোচিত হতে থাকে প্রয়াত রেবেকার প্রকৃত চরিত্র। জানা যায়, মাক্সিমের সঙ্গে রেবেকার বিয়ে আদৌ সুখের ছিল না। রেবেকাও ছিল অত্যন্ত ক্রুর চরিত্রের মহিলা। স্বামী মাক্সিমের প্রতিও সে বিশ্বস্ত ছল না। শেষ পর্যন্ত মাক্সিমই তাকে হত্যা করে। এবং তার মৃতদেহটিকে এক নৌকায় ভাসিয়ে দুর্ঘটনার রূপ দেয়। এর পরে অবশ্য কাহিনি অন্য দিকে মোড় নেয়।
আধুনিক কালেও ‘রেবেকা’ তার ছায়া প্রলম্বিত রেখেছে। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, রেবেকা সিনড্রমে ভুগতে থাকা মানুষের শুধু মন নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁদের শরীরও। আজানা প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে প্রতিষোগিতায় নেমে এই অসুখে ভুগতে থাকা মানুষ তাঁর যাবতীয় সম্পর্ককেই এক সময় বিষময় বলে ভাবতে থাকেন। মনে করতে থাকেন, তাঁকে হেয় করার জন্যই যেন তাঁর স্বামী (ক্ষেত্র বিশেষে স্ত্রী)-র সঙ্গে সবাই তুলনা করে চলেছেন।
রেবেকা সিনড্রম থেকে মুক্তির উপায় তা হলে কী? মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, ভূতপূর্ব প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে বর্তমান সঙ্গীর তুলনা না করা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। সেই সঙ্গে পূর্বতন সম্পর্কের স্মৃতির মধ্যে বাস করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। না হলে অসতর্ক মুহূর্তেও তা বেরিয়ে এসে বর্তমান সঙ্গীকে আহত করতে পারে। এ দিক থেকে দেখলে আগে থেকে সাবধানি হওয়াই এর দাওয়াই। এক বার রেবেকা সিনড্রমে আক্রান্ত হলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যে খুব সহজ নয়, তা প্রকারান্তরে বোঝা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy