রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ না করলে এ বার ভারতের উপরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্য দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের শীতলতার মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি করার দিকে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে নয়াদিল্লি।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ না করলে আরও বড় বিপদে পড়বে ভারত। ফের এক বার নয়াদিল্লিকে হুমকি দিতে গিয়ে ‘বেলাগাম’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, এ দেশের উপর প্রয়োজনে আরও দু’দফায় নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর হুঁশিয়ারি গায়ে মাখছে না কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। জাতীয় স্বার্থে কোনও অবস্থাতেই মস্কোর থেকে ‘তরল সোনা’র আমদানি যে হ্রাস করা হচ্ছে না, তা স্পষ্ট করেছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক।
০২২০
চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী ওয়াশিংটনের ঐতিহ্যবাহী ‘শ্বেত প্রাসাদ’-এ (পড়ুন হোয়াইট হাউস) বসে ভারতের উপরে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ট্রাম্প। ওই সময় তাঁর পাশে ছিলেন পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ক্যারল নওরোকি। আগামী দিনে নয়াদিল্লির উপরে কী ধরনের নিষেধাজ্ঞার কোপ পড়তে চলেছে, তা অবশ্য খোলসা করেননি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা। যদিও রাশিয়া নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে ‘মেজাজ হারাতে’ দেখা যায় তাঁকে।
০৩২০
প্রেসিডেন্ট নওরোকির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। সেখানে পোল্যান্ডের এক সাংবাদিক রাশিয়া সম্পর্কিত একটি প্রশ্ন ছুড়ে দেন তাঁর দিকে। বলেন, ‘‘মস্কোর বিরুদ্ধে তো কোনও পদক্ষেপই করছেন না।’’ এই কথা শোনামাত্রই ‘তেলে-বেগুনে’ জ্বলে ওঠেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তখনই হঠাৎ করে ভারতের প্রসঙ্গ টেনে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়ে বসেন তিনি। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে কথা শোনাতেও ছাড়েননি ‘পোটাস’ (প্রেসিডেন্ট অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেট্স)।
০৪২০
পোলিশ গণমাধ্যমের প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আপনি কী করে জানলেন যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? চিনের বাইরে মস্কোর অপরিশোধিত খনিজ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হল ভারত। নয়াদিল্লি ও বেজিঙের পাল্লা এ ক্ষেত্রে প্রায় সমান বলা যেতে পারে। সেই ভারতের বিরুদ্ধে আমরা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। এতে ক্রেমলিনের কয়েক হাজার কোটি ডলারের লোকসান হয়েছে। আপনি কি এটাকে কোনও পদক্ষেপ বলবেন না?’’
০৫২০
এর পরে ভারতকে হুমকির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে ‘বেনজির’ আক্রমণ করে বসেন ট্রাম্প। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনও দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিনি। দু’সপ্তাহ আগে নয়াদিল্লিকে রুশ খনিজ তেল আমদানি বন্ধ করতে বলি। সেটা না করলে ওদের সমস্যা আছে। এগুলো জানা না থাকলে আপনার অন্য কাজ খোঁজা উচিত।’’ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পোলিশ প্রেসিডেন্টের সামনেই তাঁর দেশের এক গণমাধ্যম কর্মীকে প্রকাশ্যে ‘অপমান’ করেন বর্ষীয়ান ‘পোটাস’।
০৬২০
ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পরই যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপরে আর কী কী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, তা নিয়ে তুঙ্গে ওঠে জল্পনা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান, আগামী দিনে এ দেশের পণ্যে শুল্কের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই অঙ্ক ৫০০ শতাংশে পৌঁছোনোর আশঙ্কাও রয়েছে। সুনির্দিষ্ট যুক্তির উপরে দাঁড়িয়ে এই পূর্বাভাস দিয়েছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে মোদী সরকারের উদ্বেগ বৃদ্ধির যে যথেষ্ট কারণ থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
০৭২০
গত জুলাইয়ে নয়াদিল্লির উপরে ৫০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর দাবি তুলে বিল আনেন মার্কিন পার্লামেন্ট ‘কংগ্রেস’-এর উচ্চকক্ষ ‘সেনেট’-এর সদস্য লিন্ডসে গ্রাহাম এবং রিচার্ড ব্লুমেন্থাল। এর মাধ্যমে ভারতীয় অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করার হুমকি দেন তাঁরা। যদিও ওই সময়ে এই ধরনের কোনও পদক্ষেপ করেননি ট্রাম্প। কিন্তু, এ বার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যারে নিষেধাজ্ঞার নামে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, বলছেন বিশ্লেষকেরা।
০৮২০
এ বছরের ২৭ অগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ করে শুল্ক নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ দেশ থেকে রফতানি হওয়া সমস্ত পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র ওই পরিমাণ কর ধার্য করেছে, এমনটা নয়। মূলত, নয়াদিল্লির বস্ত্র, চর্ম ও কারু শিল্পজাত পণ্য, অলঙ্কার এবং রাসায়নিকের ক্ষেত্রে উচ্চ হারে শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম, স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিন সামগ্রী এবং সেমিকন্ডাক্টরকে এই তালিকার বাইরে রেখেছেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, এ বার সেগুলিরও উচ্চ শুল্কের আওতায় আসার আশঙ্কা রয়েছে।
০৯২০
ট্রাম্পের এই শুল্কযুদ্ধকে কেন্দ্র করে গত জুলাই থেকে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কের ফাটল চাওড়া হতে শুরু করে। চিনের তিয়ানজ়িনে ‘সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা’ বা এসসিও (সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন) বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে ড্রাগন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। এই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে খোশগল্পও করতে দেখা যায় তাঁকে। পরে নিজের গাড়িতে মোদীকে হোটেলে নিয়ে যান পুতিন।
১০২০
তিয়ানজ়িনের এসসিও বৈঠকের এই সমস্ত টুকরো ছবি অবশ্যই ট্রাম্পকে স্বস্তি দেয়নি। ফলে রাগের মাথায় আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারেন তিনি। তখন আমেরিকান ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না এ দেশের কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি, মার্কিন বন্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারে পণ্য কেনাবেচা করা কঠিন হতে পারে। বিষয়টি আঁচ করে ইতিমধ্যেই আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআই।
১১২০
সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন বন্ড বিক্রির মাত্রা বাড়িয়েছে এ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি সোনা কেনার মাত্রা বৃদ্ধি করেছে আরবিআই। এ ছাড়া নতুন করে নিষেধাজ্ঞার নামে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করতে পারেন ট্রাম্প। সে ক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে কেনা অস্ত্রগুলির রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যার মুখে পড়বে ভারতীয় ফৌজ। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিলে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ‘কৌশলগত অংশীদারি’ যে পুরোপুরি ভেঙে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
১২২০
নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একাধিক সামরিক সমঝোতা রয়েছে। তার মধ্যে কমিউনিকেশনস কমপ্যাটিবিলিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট (কমকাসা), বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কর্পোরেশন এগ্রিমেন্ট (বেকা), ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজ়ি (আইসেট) এবং লজ়িস্টিকস এক্সচেঞ্জ মেমোরেন্ডাম অফ এগ্রিমেন্ট (লেমোয়া) উল্লেখযোগ্য। ভারতের উপরে ট্রাম্প নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সংশ্লিষ্ট চুক্তিগুলি স্থগিত করতে পারে মোদী সরকার, বলছেন কূটনীতিকদের একাংশ।
১৩২০
তবে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা হুমকির মধ্যেই বিকল্প বাজারের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। আশার কথা হল, শুল্ক নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘পাগলামি’তে কিছুটা বিরক্ত হয়েই ইউরোপীয় দেশগুলি ধীরে ধীরে ভারতের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে দিয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কোস্টা এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, দ্বিতীয়টি ২৭টি দেশের সংগঠন ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ বা ইইউয়ের অংশ।
১৪২০
বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, ২০২৫ সাল শেষ হওয়ার আগেই ভারতের সঙ্গে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ (পড়ুন ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট বা এফটিএ) সেরে ফেলবে ইইউ। সে ক্ষেত্রে ইউরোপের ২৭টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন কয়েক গুণ বাড়ানোর সুযোগ পাবে নয়াদিল্লি। এ ব্যাপারে মোদী সরকারকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ইইউয়ের অন্যতম সদস্য জার্মানি। এ দেশের সঙ্গে পণ্য আমদানি ও রফতানির মাত্রা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বার্লিনের।
১৫২০
সম্প্রতি, নয়াদিল্লি সফরে এসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন জার্মান বিদেশমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল। আলোচনা শেষে বিবৃতি দেওয়ার সময় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘‘যদি কোনও দেশ ভারতের ব্যবসায় বাধা সৃষ্টি করে, তা হলে জার্মানি সেটা দূর করার চেষ্টা করবে।’’ ভারতকে ‘অর্থনীতি এবং উদ্ভাবনের পীঠস্থান’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি, ইইউয়ের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ওয়াডেফুল।
১৬২০
অন্য দিকে, এসসিও সম্মেলন থেকে ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইউরোপীয় শক্তিজোট ‘উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা’র (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজ়েশন বা নেটো) অন্যতম সদস্য ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব। পরে রাজধানী হেলসিঙ্কিতে একটি অনুষ্ঠানে নাম না করে ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘‘ইউরোপ এবং আমেরিকাকে বৈশ্বিক দক্ষিণ (পড়ুন গ্লোবাল সাউথ) এবং ভারতের প্রতি আরও সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে আমরা হেরে যাব।’’
১৭২০
স্টাব ছাড়াও এসসিও সম্মেলন থেকে ফেরার পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরেঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মোদীর। অন্য দিকে, ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে চিনের মাটি থেকেই ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তাঁর কথায়, ‘‘শুল্কের নামে আপনি নয়াদিল্লি বা বেজিংকে হুমকি দিতে পারেন না। আপনাদের সামনে ভারত রয়েছে, যার জনসংখ্যা ১৫০ কোটি। আর আছে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ চিন। এদের হাতেই সাজা পাবেন আপনি। এখন থেকে সেটা নিয়ে ভাবা শুরু করুন।’’
১৮২০
এ বছরের ডিসেম্বরে নয়াদিল্লি সফরে আসবেন পুতিন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। ওই সময়ে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে একাধিক প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক চুক্তি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। তার আগে ট্রাম্পের নতুন করে নিষেধাজ্ঞা হুমকির আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, বলছেন বিশ্লেষকেরা।
১৯২০
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু করা ইস্তক নয়াদিল্লিকে সস্তা দরে খনিজ তেল বিক্রি করে আসছে রাশিয়া। ট্রাম্পের যুক্তি, এর জেরে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর অর্থ পেয়ে যাচ্ছে মস্কো। আর তাই ক্রেমলিনকে ‘ভাতে মারতে’ বার বার ভারতকে সেখান থেকে ‘তরল সোনা’ আমদানি বন্ধ করতে চাপ দিচ্ছেন তিনি। মোদী সরকারের পাল্টা যুক্তি, রাশিয়ার সঙ্গে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। ফলে সংঘর্ষে নয়াদিল্লি অর্থের জোগান দিচ্ছে, এই দাবি অযৌক্তিক। জাতীয় স্বার্থে রুশ তেল কেনা হচ্ছে বলেও জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
২০২০
এই পরিস্থিতিতে ‘অবাধ্য’ ভারতকে সাজা দিতে গত জুলাইয়ে এ দেশের পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। ফলে মার্কিন বাজারে নয়াদিল্লির সামগ্রীর উপর মোট করের মাত্রা দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। যদিও ওই সিদ্ধান্তের পর ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। আর তাই নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েও সমাজমাধ্যমে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করেন তিনি। সেখানে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আমরা ভারত আর রাশিয়াকে গভীরতম, অন্ধকারতম চিনে হারিয়ে ফেলেছি। ওদের ভবিষ্যৎ দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ হোক, এই কামনা করি।’’ যদিও পরে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অন্য ব্যাখ্যা দেন ট্রাম্প।