Advertisement
E-Paper

শিশির-সারাভাইয়ের চাঁদে তেরঙ্গার ছোঁয়া 

এই মুহূর্তে চাঁদের দু’প্রান্তেই তিনি! উত্তর গোলার্ধে সারাভাই। দক্ষিণে বিক্রম। চাঁদে ২৪.৭ ডিগ্রি উত্তর ও ২১.০ ডিগ্রি পশ্চিমে গোল বাটির মতো একটা গর্ত।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:২৮
বিক্রম অম্বালাল সারাভাই। পাশে ‘সারাভাই ক্রেটার’। (নীচে) শিশিরকুমার মিত্র। পাশে ‘মিত্র ক্রেটার’।

বিক্রম অম্বালাল সারাভাই। পাশে ‘সারাভাই ক্রেটার’। (নীচে) শিশিরকুমার মিত্র। পাশে ‘মিত্র ক্রেটার’।

ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের গায়ে আঁকা রয়েছে ভারতের পতাকা। সেই তেরঙ্গা চাঁদের মাটি স্পর্শের অনেক আগে থেকেই সেখানে পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নিয়েছেন দুই ভারতীয়। তাঁদের এক জন বাঙালি। শিশিরকুমার মিত্র। যাঁর হাত ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম চালু হয়েছিল বেতার সম্প্রচার। দ্বিতীয় জন বিক্রম অম্বালাল সারাভাই। আধুনিক ভারতের মহাকাশবিজ্ঞান চর্চার পিতৃপুরুষ মানা হয় যাঁকে।
এই মুহূর্তে চাঁদের দু’প্রান্তেই তিনি! উত্তর গোলার্ধে সারাভাই। দক্ষিণে বিক্রম। চাঁদে ২৪.৭ ডিগ্রি উত্তর ও ২১.০ ডিগ্রি পশ্চিমে গোল বাটির মতো একটা গর্ত। ৮ কিলোমিটার ব্যাস। ১.৭ কিলোমিটার গভীর। এটিই সারাভাই গহ্বর। ১৯৭১-এ সারাভাইয়ের মৃত্যুর পরে ওই গহ্বরটি চিরকালের জন্য তাঁর নামে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। সেই ‘সারাভাই ক্রেটার’ থেকে অনেক দূরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে দ্বিতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। গায়ে তেরঙ্গা নিয়ে।
মহাকাশে ভারতের একের পর এক সাফল্যের সুবাদে সারাভাই বিক্রমের নাম এখন বহুচর্চিত। চাঁদে ভারতীয় বিজ্ঞানীর নাম ঠাঁই পেয়েছে এরও আগে। চন্দ্রযান ২ স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ভারতের পথিকৃৎ বেতার-পদার্থবিদ শিশিরকুমার মিত্রকে। তাঁর নামেও রয়েছে চাঁদের একটি গহ্বর। ৯২ কিলোমিটার ব্যাসের যে গহ্বর আন্তর্জাতিক মহলে ‘মিত্র ক্রেটার’ হিসেবে পরিচিত। দ্বিতীয় চন্দ্রযান তার ছবি তুলেছিল গত ২৩ অগস্ট। চার দিন পরে যা প্রকাশ করে ইসরো।
কে এই ‘চাঁদের শিশির’? জন্ম ১৮৯০-এ হুগলির কোন্নগরে। মা শরৎকুমারী দেবী ছিলেন ভাগলপুরে লেডি ডাফরিন হাসপাতালের চিকিৎসক। বাবা জয়কৃষ্ণ মিত্র ছিলেন শিক্ষক। পরে চাকরি নেন ভাগলপুর পুরসভায়। তরুণ শিশির প্রেসিডেন্সিতে পড়ার সময়ে সান্নিধ্যে আসেন জগদীশচন্দ্র বসুর। কাজ করেন তাঁর সহ-গবেষক হিসেবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স কলেজ তৈরি হলে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৯১৬-তে তাঁকে সেখানে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক নিযুক্ত করেন।
সেখানে তখন চাঁদের হাট। রয়েছেন সি ভি রামন, দেবেন্দ্রমোহন বসু, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো বিজ্ঞানীরা। আলোর প্রতিসরণ সংক্রান্ত গবেষণায় শিশির ডিএসসি করেন ১৯১৯-এ। পরের বছর ইউরোপে গিয়ে মেরি কুরি, চার্লস ফেবরেদের সান্নিধ্যে এসে আগ্রহ তৈরি হয় রেডিয়ো-ফিজিক্সে। ১৯২৫-এ শিশিরবাবুর উদ্যোগেই প্রথম বেতার সম্প্রচার চালু হয় ভারতীয় উপমহাদেশে। কলকাতায় সেই কেন্দ্রটির নাম ছিল ‘রেডিয়ো টু-সি-জ়েড’। বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ার নিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা রয়েছে তাঁর। ১৯৬৩-তে মারা যান। পৃথিবীর আয়নমণ্ডল থেকে বহু দূরে তাঁর নামটি যেখানে অক্ষয় হয়ে আছে, সেখানে ভারতের বিক্রমকে দেখার জন্য আজ রাত জাগল গোটা ভারত। নজর রাখলেন বিশ্বের বিজ্ঞানীরাও।

Sisir Kumar Mitra Vikram Sarabhai Chandrayaan 2
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy