Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Cyber Crime

ডিজিটাল যুগে কোনও তথ্যই আর গোপন নয়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

যেমন, ২০১৩-য় আমেরিকা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল সাইবার ক্রাইমের কবলে পড়ে। একটি সংস্থার প্রায় ৭ কোটি ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে গিয়েছিল পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) সিস্টেমের মাধ্যমে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ১৩:২৪
Share: Save:

আপনার অনলাইন তথ্য কতটা সুরক্ষিত? প্রতি দিন বেড়ে চলা সাইবার ক্রাইমের ঘটনায় প্রশ্নটা মনে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে নিশ্চয়ই। কিঞ্চিত্ কপালে ভাঁজও পড়েছে। সাইবার হানা ঠেকানোর জন্য নানা রকম উপায়ও বের হচ্ছে। কিন্তু হ্যাকাররা ঠিক বিকল্প পথ খুঁজে বের করে নিচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে। রূপ বদলে হামলা চালাচ্ছে।

গত মে মাসেই যে ভাবে ওয়ানাক্রাই র‌্যানসমওয়্যার এবং তার পর পরই পেটিয়া ভাইরাস হামলা চালিয়েছিল বিশ্বের শতাধিক দেশে, এর পর আপনার দেওয়া অনলাইন তথ্য কতটা সুরক্ষিত প্রশ্ন থেকেই যায়। যেমন, ভারতে আধার কার্ডের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে নানা রকম তথ্য উঠে আসছিল মাঝেমধ্যেই। তীব্র প্রতিবাদও হয়েছিল এই যুক্তিতে যে, এই বায়োমেট্রিক সিস্টেমে সাধারণ নাগরিকের কোনও তথ্যই নাকি গোপন থাকবে না! সরকার অবশ্য নাগরিকদের তথ্য গোপন রাখার নিশ্চয়তা দিয়েছে। কিন্তু এর পরেও কি অনলাইন তথ্য ফাঁস হওয়া আটকানো যাবে? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

আরও পড়ুন: সাইবার মামলায় গ্রেফতার ‘ওয়ানাক্রাই’ হামলা রুখে দেওয়া সেই যুবক

যেমন, ২০১৩-য় আমেরিকা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল সাইবার ক্রাইমের কবলে পড়ে। একটি সংস্থার প্রায় ৭ কোটি ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে গিয়েছিল পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) সিস্টেমের মাধ্যমে। ফরেন্সিক বিশ্লেষণ করে জানা যায়, শুধুমাত্র গুগল সার্চের মাধ্যমেই নাকি হ্যাকাররা সাইবার হামলা চালানোর পথ বের করে নিয়েছিল! হ্যাকাররা ওই সংস্থার ডেটা সার্ভার অ্যাক্সেস করে একটি ম্যালওয়্যার পাঠিয়ে দেয়। ফলে পুরো সিস্টেম ভেঙে পড়ে। আর তথ্যও হাতিয়ে নিতে সুবিধা হয় হ্যাকারদের।

আরও একটি ঘটনায় সাইবার হামলার কবলে পড়ে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সাল ২০১৬। সে দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ১০ কোটি ১০ লক্ষ ডলার ফিলিপিন্স, শ্রীলঙ্কা-সহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। কী ভাবে এত বড় সাইবার জালিয়াতি হল, এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার তদন্তেও নামে।

আরও পড়ুন: র‌্যানসমওয়্যার নয়, পেটিয়া আরও বিপজ্জনক ‘ওয়াইপার’

সাইবার ক্রাইম বহু দিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হয়ে আসছে। কিন্তু সাইবার ক্রাইমের ‘গ্লোবালাইজেশন’-এ সারা বিশ্ব ত্রস্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার ক্রাইম আটকানোর পদ্ধতিতেই গলদ থেকে যাচ্ছে। সাইবার হামলা ঠেকাতে সাধারণত অ্যান্টি-ভাইরাস প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর উপরই দেশগুলোকে নির্ভর করতে হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংস্থাগুলোয় তৈরি অ্যান্টি-ভাইরাসগুলো ‘গেটকিপার’ হিসাবেই কাজ করে। ফলে হ্যাকারদের মনে ভয় ধরাতে পারে না এরা। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, অ্যান্টি-ভাইরাস প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর দক্ষতার উপরও।

আরও পড়ুন: হ্যাকার হানা! পাকিস্তানের সরকারি ওয়েবসাইটে বাজল ভারতের জাতীয় সঙ্গীত

মোবাইলে কোনও অ্যাপ ইনস্টলেশনের জন্য কিছু শর্ত থাকে। যেগুলো আমরা অধিকাংশই না পড়ে ‘ওকে’ করে দিই। অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইনস্টল হল ঠিকই, কিন্তু তার সঙ্গে আপনার সিস্টেমের সমস্ত তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে না তো?

যতই সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে বড়াই করা হোক না কেন, এটা আসলে একটা মিথ মাত্র। ডিজিটাল যুগে কোনও কিছুই আর গোপন নয়। বলা ভাল, ওপেন সিক্রেট। এমনটা বলছেন বিশেষজ্ঞরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE