জঙ্গল থেকে গ্রামে ঢুকে বাসিন্দাদের তাড়ায় পুকুরে পড়ে গিয়ে মারা গেল একটি হরিণ।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ির বড়রাংরস এলাকায়। বন দফতরের কর্তাদের প্রাথমিক ভাবে অনুমান, পুকুরে পড়ার পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয় হরিণটি। সেখানেই সেটির মৃত্যু হয়েছে। হরিণটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুন্ডিবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, হগ ডিয়ার প্রজাতির ওই পুরুষ হরিণটির বয়স তিন বছরের মতো। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বন দফতরের কর্মীরা দেরি করে পৌঁছতেই এমন ঘটনা হয়েছে। বন দফতরের কর্মীরা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই গ্রাম যান। ততক্ষণে হরিণটি মারা গিয়েছিল। কোচবিহার জেলার বণ্যপ্রাণী বিভাগের ডিএফও ভাস্কর জেবি বলেন, “ভয় থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে হরিণ মারা গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর তা স্পষ্ট হবে।”
বড়রাংরস গ্রামের দাসপাড়া থেকে চিলাপাতার জঙ্গল এবং পাতলাখাওয়ার জঙ্গল কাছাকাছি। ওই জঙ্গল থেকেই বণ্যপ্রাণী মাঝে মধ্যে ওই এলাকায় ঢুকে পড়ে। এর আগে ওই এলাকায় হাতি ও বাইসন ঢুকে পড়ার ঘটনাও ঘটেছিল। বন দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকালে গ্রামের বাসিন্দারা হরিণটি দেখতে পান। মনে করা হচ্ছে রাতেই জঙ্গল থেকে সেটি ঢুকে পড়ে। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ হরিণটিকে ধরার জন্য তাড়া দিতে শুরু করে। নিরুপায় হয়ে ছুটোছুটি শুরু করে হরিণটি। একসময় একটি পুকুরের মধ্যে পড়ে গেলে আর উঠতে পারেনি। সেখানেই মারা যায় হরিণটি। পড়ে বন দফতরের কর্মীরা গিয়ে হরিণটিকে নিয়ে পুন্ডিবাড়ি রেঞ্জ অফিসে নিয়ে যান। সেখানেই তার দেহের ময়নাতদন্ত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন দাবি করেন, সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ হরিণটিকে দেখার পরই সোনাপুর বিট অফিসে খবর দেন স্থানীয়দের কয়েকজন। কিন্তু বনকর্মীরা সেখানে পৌঁছতে অনেক দেরি করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পড়ে তাঁরা সেখানে যান। ওই সময়ের মধ্যে গ্রামেরই কিছু লোক হরিণটিকে ধরার চেষ্টা করে। আড়াই ঘণ্টা ধরে একটানা ছুটে ক্লান্ত হয়ে পড়ে হরিণটি। পুকুরে পড়ার সেখান থেকে আর উঠতে পারেনি। বাসিন্দাদের কয়েকজন দাবি করেন, বন কর্মীরা কিছুক্ষণ আগে সেখানে পৌঁছলে হরিণটি বেঁচে যেত। পরিবেশ প্রেমী অরূপ গুহ বলেন, “বন্যপ্রাণ বাঁচাতে বনকর্মীদের আরও সক্রিয় হতে হবে। পাশাপাশি জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামগুলিতে সচেতনতাও বাড়াতে উদ্যোগী হতে হবে।” পুন্ডিবাড়ির রেঞ্জার রমেশচন্দ্র রায় বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কর্মীরা ওই গ্রামে যায়। ততক্ষণে হরিণটি মারা যায়। দেরি করে পৌঁছনোর অভিযোগ ঠিক নয়।”