এমন একটা গাছ, যার পুরোটাই কাজে লাগে। ধনে পাতা দিয়ে যেমন সুবাসিত করতে পারেন আপনার রান্না, তেমনই মশলা হিসাবে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে ধনের গুঁড়ো বা ধনে বাটা। আবার থাই রান্নাতে ধনে গাছের শিকড় ব্যবহার করা হয় হার্ব হিসাবে।
তবে ভারতীয় রান্নায় ধনে মশলা, মানে গাছের বীজের ব্যবহারটাই বেশি। পরিণত গাছকে কেটে, শুকিয়ে বীজ ঝেড়ে নেওয়া হয়। বাজারে গোটা ধনে কিনতে পাওয়া যায়। আবার গুঁড়ো হিসাবেও পাওয়া যায়। উচিত, গোটা কেনা। রান্নার আগে গুঁড়ো করলে গন্ধটা ঠিক থাকে, আগে থেকে গুঁড়ো করে রাখলে উবে যায়। খুব ভাল হয়, রান্নার আগে ধনে শুকনো কড়ায় সামান্য নেড়ে গুঁড়িয়ে নিলে। ওই গুঁড়োটা একটা বায়ুশূন্য পাত্রে ভরে কিছু দিন রেখে দিতে পারেন। তবে, সেক্ষেত্রে কৌটোটা ঠান্ডা, আলো পড়ে না এমন জায়গায় রাখলে ভাল।
আসলে ধনে বীজের ওই সুগন্ধটা আসে ভোলাটাইল তেল আর ফ্যাটি আ্যসিড থেকে-যেগুলো উবে গেলে মুশকিল। বীজে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড হল পেট্রোসেলিনিক, লিনোলেইক, ওলেইক, পালমিটিক। এ ছাড়াও লিনালুল, তারপাইন-সহ বেশ কিছু এসেনশিয়াল অয়েলও রয়েছে ধনে বীজে। আর অবশ্যই অন্য মশলার মতো ডায়েটারি ফাইবার— খাবার পরিপাকে যা সাহায্য করে থাকে। ডায়েটারি ফাইবার আছে বলেই ধনের ব্যবহারে ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ কমে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেও ধনের ব্যবহার কার্যকরী। খনিজের মধ্যে আয়রন, কপার, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে। আয়রন ও কপার রয়েছে বলে রক্তশূন্যতা দূর হয়, জিঙ্ক বিভিন্ন উৎসেচক নিঃসরণে সাহায্য করে হজমক্ষমতা বাড়ায়, পটাশিয়াম হার্ট রেট আর ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ম্যাঙ্গানিজের কারণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণে গুণান্বিত ধনে। অন্য মশলায় থাকে না এমন একটা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদানও ধনেতে থাকে প্রচুর পরিমাণে, সেটি হল ভিটামিন সি। অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট গুণের জন্য ক্যানসার প্রতিরোধ-সহ বেশ কিছু রোগের ওষধি হিসাবে ধনের নাম-ডাক।
তবে কোনও কিছুই বেশি ভাল নয়। ধনেতে অনেকের অ্যালার্জি হয়। সূর্যরশ্মিতে সংবেদনশীলতার দিকটিও খারাপ। অন্তঃসত্ত্বাদের তরকারিতে বেশি ধনে না দেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy