Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যাসাগরই আজ ভরসা বাংলার

বিদ্যাসাগর সিংহ, সুমন দাস, তীর্থঙ্কর সরকার-রা কেউ গোল করছেন, কেউ বাইরে মারছেন, যিনি বাইরে মারছেন তাঁকে ফের কিক মারতে বলা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

গনগনে রোদে যখন রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে কাকপক্ষী খুঁজে পাওয়া কঠিন, তখনও নাগাড়ে পেনাল্টি কিক অনুশীলন চলছিল বাংলার।

বিদ্যাসাগর সিংহ, সুমন দাস, তীর্থঙ্কর সরকার-রা কেউ গোল করছেন, কেউ বাইরে মারছেন, যিনি বাইরে মারছেন তাঁকে ফের কিক মারতে বলা হচ্ছে।

আগের দু’দিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে এটাই ছিল রঞ্জন চৌধুরীর বাংলার অনুশীলন-সূচির অন্যতম অংশ। তবুও আজ, শুক্রবার সন্তোষ ট্রফির সেমিফাইনাল টাইব্রেকারে গড়ালে কোন কোন ফুটবলার পেনাল্টি মারবেন, তার তালিকা তৈরি করেননি বাংলার কোচ। রঞ্জনের সাফ কথা, ‘‘আমাদের লক্ষ্য নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ জেতা। তবুও যদি টাইব্রেকার হয় তা হলে সবাইকে ডেকে জানতে চাইব, কার কার কলজের জোর আছে বলো। যে হাত তুলবে তাকে মারতে পাঠাব।’’

প্রায় দু’ঘণ্টার অনুশীলন। তাতে দল গড়ে রক্ষণ সংগঠনের উপর জোর দেওয়া তো ছিলই। এর বাইরেও বিভিন্ন রকমের ফ্রি-কিক থেকে কর্নার মারার অনুশীলনও হল।

ময়দানের বহু ছোট দলে একক ভাবে কোচিং করেছেন রঞ্জন। ট্রেভর মর্গ্যান থেকে খালিদ জামিল, যে যখন ইস্টবেঙ্গলের কোচ হয়েছেন, তাঁর সহকারী থেকেছেন। অনুশীলনে বা ড্রেসিংরুম রসায়নে সেই অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার উজাড় করে দিচ্ছেন মনে হল। প্রতিপক্ষ কর্নাটকের সব ম্যাচের ভিডিও ক্লিপিংস তাঁর মোবাইলে। টিমের ফুটবলারদের প্রত্যেককে তা দেখাচ্ছেন বারবার।

কোথায় প্রতিপক্ষের শক্তি এবং দুর্বলতা সেটা বোঝাচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, বড় দলের কোচেরা যেটা করেন সে রকমই, জিতেন মুর্মু, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়, তীর্থঙ্কর সরকারের মতো সিনিয়রদের করে দিয়েছেন ড্রেসিংরুম-অধিনায়ক। রঞ্জন বলছিলেন, ‘‘কর্নাটক যথেষ্ট শক্তিশালী টিম। দূর থেকে জোরালো শট মারে মাঝেমধ্যেই। ছেলেগুলোর গড় উচ্চতাও ভাল। সে সব নিয়ে আলোচনা করছি।’’

বাংলা চার ম্যাচে মোট নয় গোল করেছে। এর মধ্যে বিদ্যাসাগর সিংহ একাই করেছেন চারটি। কর্নাটকের স্ট্রাইকার এস রাজেশও চার গোল করেছেন। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই গোল আছে তাঁর। কর্নাটকের কোচ মুরলীধরন হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘‘আমরা বিদ্যাসাগরকে আটকাতে চাইব। ওরা আমাদের রাজেশকে। ম্যাচ কিন্তু পঞ্চাশ-পঞ্চাশ।’’ মজার ব্যাপার হল, বিদ্যাসাগর বা রাজেশ দু’জনের কেউই যে রাজ্যের জার্সিতে আজ হাওড়া স্টেডিয়ামে নামবেন, সেখানকার ভূমিপুত্র নন। বিদ্যাসাগর মণিপুরের। রাজেশ কেরলের।

বেঙ্গালুরুর দ্বিতীয় ডিভিশনের একটি ক্লাবের মালিক মুরলীধরন অবশ্য বলছিলেন, ‘‘কেরলের বিরুদ্ধে বাংলার খেলা দেখেছি। ওদের আক্রমণভাগটা খুব ভাল। তবে টিমের আসল ফুটবলার দশ নম্বর (তীর্থঙ্কর সরকার)। ও খেলাটা তৈরি করে।’’ বোঝাই যাচ্ছিল, রঞ্জনের মতো তিনিও বাংলা দল নিয়ে রীতিমতো অঙ্ক কষে নামবেন।

বাংলার অনুশীলন দেখে মনে হল, রঞ্জন ফর্মেশন বদল করে কিছুটা আক্রমণাত্মক হওয়ার কথা মাথায় রাখছেন। টিম যাতে চাপে না পড়ে সে জন্য ট্রফি শব্দটাই ঢুকতে দিতে চাইছেন না ড্রেসিংরুমে। বললেন, ‘‘ট্রফি নয়, ছেলেদের শুধু বলেছি সেমিফাইনাল নিয়ে ভাবতে।’’কোচ কিছু না বললেও তাঁর দলের অধিনায়ক জিতেন মুর্মু কিন্তু বললেন, ‘‘গতবার টিমকে মূলপর্বে তুললেও মূলপর্বে খেলার সুযোগ পাইনি। ফলে ট্রফি ছুঁতে পারিনি। এ বার সেটা করতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE