চুম্বন! ইতিহাস স্পর্শ করে বিরাট কোহালি। ছবি: রয়টার্স।
পারেননি কপিল দেব, রাহুল দ্রাবিড় বা মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কাছাকাছি গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। বিরাট কোহালির হাত ধরে এ বার সেই অধরা ইতিহাস ছুঁল ভারতীয় ক্রিকেট। ইতিহাসে প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরছে ভারত। সিডনিতে বৃষ্টিতে ম্যাচ ড্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২-১ ফলাফলে সিরিজ জিতে নিল ভারত। শুধু তাই নয়, এশিয়ার প্রথম দল হিসেবেও অস্ট্রেলিয়ার মাঠে টেস্ট সিরিজ জিতল ভারত।
এর আগে শেষ বার অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয়ের সুযোগ এসেছিল ২০০৩-০৪ সালে। কিন্তু, সে বার ভারত এবং সিরিজ জয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন স্টিভ ও। সে দিন স্টিভের স্টাম্পিং সুযোগ নষ্ট করেছিলেন পার্থিব পটেল। আর তার পরই অজি অধিনায়কের মহাকাব্যিক ইনিংস প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতের টেস্ট জয়ের মাঝে। সে দিন ম্যাচটি ড্র হয়ে যাওয়ায় সিরিজ জয় হাতছাড়া হয় ভারতের। ইতিহাসের দোড়গোড়া থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল এক বঙ্গসন্তানকে। সৌরভের হাত ধরে সে দিন যা অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছিল, তারই যেন শাপমোচন হল সোমবার।
দলের এই জয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। ইংল্যান্ড সফরে হার থেকে শিক্ষা নিয়েই এই জয় বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান তিনি। কোহালি আবার তারিফ করলেন দলগত সাফল্যের।
আরও পড়ুন: সচিন থেকে বিরাট, বিদেশের মাঠে দেশের শেষ পাঁচ অধিনায়কের রেকর্ড কেমন
অধিনায়ক কোহালি ছাড়াও এ সিরিজ থেকে অবশ্যই ভারতের বড় প্রাপ্তি চেতেশ্বর পূজারা। ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ এবং ‘ম্যান অব দ্য সিরিজ’ হলেন তিনি। অতীতে আর কোনও ভারতীয়র এমন রেকর্ড আছে কি না, তা নথি খুঁজে বলতে হবে। কেন তাঁকে রাহুল দ্রাবিড়ের বিকল্প ভাবা হয়, সে কথা ক্যাঙারুদের দেশে প্রমাণ করে দিলেন এই ডান হাতি। এই সিরিজের আর এক প্রাপ্তির নাম অবশ্যই কুলদীপ যাদব। এই টেস্টে পাঁচ উইকেট নিয়ে কুলদীপ যেন নতুন সভ্যতার উত্থান ঘটালেন। বলতে হবে ময়াঙ্ক আগরওয়ালের কথাও। চোটের কারণে পৃথ্বী শয়ের ছিটকে যাওয়া, লোকেশ রাহুল-মুরলী বিজয়ের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় জন্য দেশ থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ময়াঙ্ককে। ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ময়াঙ্ক। সন্দেহ নেই আগামী দিনে পৃথ্বী-ময়াঙ্ক ভারতীয় ওপেনিং সমস্যার অনেক উত্তর খুঁজে দেবেন।
আরও পড়ুন: কোহালির হাতে ট্রফি, স্টুডিয়োয় গাওস্করের চোখে জল
সিরিজ জয়ের পর উল্লাস ভারতীয় দলের। ছবি: এএফপি।
আরও পড়ুন: এই নিয়ে চার বার অস্ট্রেলিয়াকে ফলো অন করাল ভারত
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে যদি কোহালিদের হাত ধরে নতুন ভারতীয় সভ্যতার উত্থান হয়, তা হলে অস্ট্রেলীয় সভ্যতার পতনের শঙ্কাও কিন্তু তীব্র হয়ে গেল। ১৯৮৮-তে বাইসেন্টিনিয়াল টেস্টের পরে দেশের মাটিতে এই প্রথম ফলো-অন করল অস্ট্রেলিয়া। সেটাও ছিল সিডনিতে। প্রতিপক্ষ ছিল মাইক গ্যাটিংয়ের ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে তারা তোলে ৪২৫। অ্যালান বর্ডারের অস্ট্রেলিয়া ২১৪ রানে শেষ হয়ে গিয়ে ফলো-অন করতে বাধ্য হয়। কিন্তু সেই টেস্টেও দ্রুতই ম্যাচে ফিরেছিল অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ডেভিড বুনের ১৮৪ নট আউটের সৌজন্যে তারা ৩২৮-২ তোলে। এ বার বৃষ্টি না বাঁচালে পেনদের অবস্থা আরও করুণ হত। কারণ, পেনের এই দলটিতে বুনের মতো ইনিংস খেলার লোক কোথায়? দেশের মাঠে ১৭২টি টেস্টের পর ফলো অন, অজি ক্রিকেটের ভবিষ্যত নিয়ে সত্যই প্রশ্ন উঠে গেল।
(আইসিসি বিশ্বকাপ হোক বা আইপিএল টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট খেলার সব আপডেট আমাদের খেলা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy