Advertisement
০৫ মে ২০২৪

হারলেও বড় প্রাপ্তি শেষ বল পর্যন্ত লড়াই

বিশ্বকাপের আগে দলের শক্তি-দুর্বলতা যাচাই করে নেওয়ার জন্য এই সিরিজটাই ভারতের শেষ সুযোগ।

জয়ের রানের পরে কামিন্স এবং রিচার্ডসনের উল্লাস। রবিবার বিশাখাপত্তনমে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে। পিটিআই

জয়ের রানের পরে কামিন্স এবং রিচার্ডসনের উল্লাস। রবিবার বিশাখাপত্তনমে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে। পিটিআই

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৫
Share: Save:

বিশ্বকাপের আগে দলের শক্তি-দুর্বলতা যাচাই করে নেওয়ার জন্য এই সিরিজটাই ভারতের শেষ সুযোগ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের দ্বৈরথের শুরুতেই যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নাটকীয় ভাবে হারতে হল বিরাট কোহালিদের। একেবারে শেষ বলে।

কিন্তু তা বলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমি বরং বলব, মাত্র ১২৬ রান নিয়ে বিরাট কোহালির দল যে লড়াইটা করল, তা রীতিমতো প্রশংসনীয়। এই লড়াকু স্পিরিটটাই এখন ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতিচ্ছবি।

ম্যাচটা ভারত তিন উইকেটে হারলেও দুই ভারতীয় ক্রিকেটারের লড়াইয়ের কথা আলাদা করে বলতেই হবে। দু’জনেরই প্রত্যাবর্তন ঘটল এই ম্যাচে। শিখর ধওয়নের জায়গায় দলে ফিরল কে এল রাহুল। বিশ্রামে থাকার পরে আবার মাঠে নামল যশপ্রীত বুমরা। ব্যাটিংয়ের সময় রাহুলকে যতটা মসৃণ দেখিয়েছে, বোলিংয়ের সময় বুমরাকে ততটাই ভয়ঙ্কর।

ভারত-অস্ট্রেলিয়া টি-২০ সিরিজ নিয়ে খেলুন কুইজ

এই ম্যাচে বুমরার বোলিংয়ের ওপর একবার চোখ রাখুন। ৪-০-১৬-৩। এ ছাড়া আরও একটা কথা বলতে চাই। ২৪টা বলের মধ্যে ও ১৮টা ডট বল করেছে। যেটা ভাবাই যায় না। ১৯তম ওভারে এসে মাত্র দু’রান দিয়ে দু’উইকেট তুলে নিয়েছিল বুমরা। ম্যাচটা ভারতের হাতেও এসে গিয়েছিল ওই সময়। বিশ্বকাপের আগে এই রকম ভয়ঙ্কর বুমরাকে পাওয়া, ভারতের এই ভাবে লড়াই করা, এই ম্যাচে বড় প্রাপ্তি।

স্কোরকার্ড
ভারত ১২৬-৭ (২০)
অস্ট্রেলিয়া ১২৭-৭ (২০)

ভারত
রোহিত ক জাম্পা বো বেহরেনডর্ফ ৫•৮
রাহুল ক ফিঞ্চ বো কুল্টার-নাইল ৫০•৩৬
কোহালি ক নাইল বো জ়াম্পা ২৪•১৭
ঋষভ রান আউট ৩•৫
ধোনি ন. আ. ২৯ •৩৭
কার্তিক বো কুল্টার-নাইল ১•৩
ক্রুণাল ক ম্যাক্সওয়েল বো কুল্টার-নাইল ১ •৬
উমেশ এলবিডব্লিউ বো কামিন্স ২•৪
চহাল ন . আ. ০•৪
অতিরিক্ত ১১
মোট ১২৬-৭ (২০)
পতন: ১-১৪ (রোহিত, ২.৩), ২-৬৯ (কোহালি, ৮.৪), ৩-৮০ (ঋষভ, ৯.৬), ৪-৯২ (রাহুল, ১২.২), ৫-৯৪ (কার্তিক, ১২.৬), ৬-১০০ (ক্রুণাল, ১৪.৬), ৭-১০৯ (উমেশ, ১৬.৫)।
বোলিং: জেসন বেহরেনডর্ফ ৩-০-১৬-১, জাই রিচার্ডসন ৪-০-৩১-০, নেথান কুল্টার-নাইল ৪-০-২৬-৩, অ্যাডাম জ়াম্পা ৩-০-২২-১, প্যাট কামিন্স ৪-০-১৯-১, ডার্সি শর্ট ২-০-১০-০।

অস্ট্রেলিয়া
শর্ট রান আউট ৩৭•৩৭
স্টোয়নিস রান আউট ১•৫
ফিঞ্চ এলবিডব্লিউ বো বুমরা ০•১
ম্যাক্সওয়েল ক রাহুল বো চহাল ৫৬•৪৩
হ্যান্ডসকম্ব ক ধোনি বো বুমরা ১৩•১৫
টার্নার বো ক্রুণাল ০•৫
কুল্টার-নাইল বো বুমরা ৪•৮
কামিন্স ন. আ. ৭•৩
রিচার্ডসন ন. আ. ৭•৩
অতিরিক্ত ২
মোট ১২৭-৭ (২০)
পতন: ১-৫ (স্টোয়নিস, ১.৬), ২-৫ (ফিঞ্চ, ২.১), ৩-৮৯ (ম্যাক্সওয়েল, ১৩.৩), ৪-১০১ (শর্ট, ১৫.২), ৫-১০২ (টার্নার, ১৬.২), ৬-১১৩ (হ্যান্ডসকম্ব, ১৮.৫), ৭-১১৩ (কুল্টার-নাইল, ১৮.৬)।
বোলিং: যশপ্রীত বুমরা ৪-০-১৬-৩, যুজবেন্দ্র চহাল ৪-০-২৮-১, উমেশ যাদব ৪-০-৩৫-০, ক্রুণাল পাণ্ড্য ৪-০-১৭-১, মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে ৪-০-৩১-০।

এত অল্প রান করেও ম্যাচটা ভারত প্রায় জিতে গিয়েছিল ১৯ নম্বর ওভারে। শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১৪ রান, হাতে তিন উইকেট। ব্যাট করছে দুই পেসার— প্যাট কামিন্স এবং জাই রিচার্ডসন। ওই অবস্থায় চাপটা নিতে পারল না উমেশ যাদব। উমেশের প্রধান সমস্যা ওর মানসিকতা। চাপের মুখে ভেঙে পড়া। ওই ওভারে একটা করে চার মেরে দিল অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার। শেষ বলে দরকার ছিল দুই। যেটা কোনও মতে নিয়ে নিল কামিন্স-রিচার্ডসন।

অস্ট্রেলিয়া টস জেতার পরে ভারতের প্রথম একাদশ দেখে বুঝতে সমস্যা হয়নি, বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে কয়েক জনকে দেখে নিতে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। যে কারণে ওপেনিংয়ে রাহুল। বুমরার সঙ্গে উমেশ যাদব। এবং, নতুন স্পিনার হিসেবে মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে। এদের মধ্যে রাহুলই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারল। প্রথম ওভারে একটু টেনশনে দেখিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তার পর থেকে ছন্দে ছিল। ওর কভারের ওপর দিয়ে মারা শটগুলোয় তা বোঝা গিয়েছে।

রাহুলের ৩৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস দেখার পরে প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বকাপের দলে নিজের জায়গাটা কি পাকা করে ফেলল এই তরুণ ব্যাটসম্যান? তা যতই এই ম্যাচটা টি-টোয়েন্টি হোক। আমি বলব, অবশ্যই রাহুলকে বিশ্বকাপে নিয়ে যাওয়া উচিত। এ কথাটা আমি রবিবারের ইনিংস দেখে শুধু বলছি না। রাহুল কিন্তু ম্যাচ উইনার। তবে ওয়ান ডে ক্রিকেটে আরও ধারাবাহিক হতে হবে, আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।

তবে ভারতকে একটা প্রশ্ন উদ্বেগে রাখবে। প্রথম তিন ব্যাটসম্যান দ্রুত ফিরলে কে টানবে? এ দিন রোহিত শর্মা ব্যর্থ, বিরাট কোহালি বড় রান পেল না। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর মহেন্দ্র সিংহ ধোনির। কিন্তু অপরাজিত ২৯ রান করতে ধোনির লাগল ৩৭ বল। কোনও চার নেই, একটি মাত্র ছয়। তাও এসেছে ৩৩ নম্বর বলে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE